শিরোনাম
সাত শ্রেণির মানুষকে কবরে প্রশ্ন করা হবে না
প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০১৬, ১৪:৪৮
সাত শ্রেণির মানুষকে কবরে প্রশ্ন করা হবে না
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

মহান আল্লাহর অনুগ্রহে কিছু মানুষ এ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হবেন যে, তাকে কবরে সওয়াল জওয়াবের সম্মুখীন হতে হবে না। এ বৈশিষ্ট্যের অধিকারীদের মধ্যে প্রথমে আসবে শহিদদের নাম। রাসুলে আরাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, শহিদদেরকে কবরে প্রশ্ন করা হবে না। কেননা মাথায় তরবারির আঘাত কবরের বিপদ হতে কম নয়। যদি তার অন্তরে আল্লাহর ভয় না থেকে মুনাফেকি থাকতো তাহলে সে তরবারির ভয়ে পালিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু সে এমনটি করেনি। কাজেই প্রমাণিত হলো, সে তার ঈমানের ক্ষেত্রে সত্যিই মুখলিস বা নিষ্ঠাবান ছিল।


কবরের সওয়াল হতে মুক্তিপ্রাপ্ত দ্বিতীয় ব্যক্তি হলেন সীমান্তরক্ষী সৈনিক; যাকে প্রতিনিয়ত শত্রুদলের সঙ্গে সংগ্রাম ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা চালিয়ে যেতে হয়। এ ব্যক্তির আলোচনা কুরআনে কারিমেও এসেছে, হাদিসে রাসুলের মাঝেও এসেছে।


তৃতীয় ব্যক্তি হলেন যিনি মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, কেননা সহিহ হাদিসের ভাষ্যমতে তিনিও শহিদদের মিছিলের একজন।


চতুর্থ ব্যক্তি হলেন আপাদমস্তক আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ওপর সত্যনিষ্ঠ আস্থা ও বিশ্বাসের অধিকারী সত্যবাদী সিদ্দিক। যাঁর প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কোথাও মিথ্যার লেশমাত্র নেই। নবীদের পরই তাঁদের স্থান। ইমাম তিরমিযি ও ইমাম কুরতুবি [রহ.] এভাবে সুস্পষ্ট বর্ণনা করেছেন। উপরোক্ত মূলনীতির আলোকে অকাট্যভাবে প্রতিভাত হয়, আল্লাহর প্রেরিত সকল নবী রাসুলও কবরে সওয়াল জওয়াবের সম্মুখীন হবেন না। কেননা তাঁদের স্থান তো সিদ্দিক থেকে কত সহস্র ঊর্ধ্বে।


পঞ্চমজন হলেন অপ্রাপ্ত বয়সে কোনো শিশু মারা গেলে তাকে সওয়ালের সম্মুখীন হতে হবে না। প্রখ্যাত আকাইদবিদ আল্লামা নাসাফি [রহ.] দৃঢ়তার সঙ্গে বিষয়টি ব্যক্ত করেছেন। ইমাম নববি [রহ.]ও অনুরূপ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। ইবনে সালাহ [রহ.] বলেন, শিশু মারা গেলে তাকে কালিমায়ে শাহাদাতের তালকিন করার দরকার নেই।


আর পাগল ও বোকা লোকদের কবরে সওয়াল জওয়াব করা হবে কিনা এ বিষয়ে ইমাম ফাকেহানি [রহ.] মৌনতা অবলম্বন করেছেন। তদ্রুপ যে ব্যক্তি দুই নবীর পৃথিবীতে আগমনের মধ্যবর্তী যুগে মারা গেছেন, তাকেও কবরে সওয়াল করা হবে কিনা? এ বিষয়েও কোনো মত প্রকাশ করেননি। রওযা নামক কিতাবে এ বর্ণনা এসেছে, যে ব্যক্তি শরিয়তের দৃষ্টিতে মুকাল্লাফ [যার ওপর শরিয়তের হুকুম-আহকাম বর্তিত হয়] বা তার সমগোত্রীয়, একমাত্র তাকে সওয়াল করা হবে। এছাড়া অন্য কাউকে নয়।


ষষ্ঠ ব্যক্তি হলেন ওই ব্যক্তি যে জুমার দিনে বা রাতে মারা যাবে তাকেও কবরে সওয়াল করা হবে না। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমার ফজিলত সম্পর্কিত একটি হাদিসে তা উল্লেখ করেছেন। উক্ত হাদিসটিকে ইমাম তিরমিযি ও ইমাম বাইহাকি [রহ.] হাসান স্তরের হাদিস রূপে অভিহিত করেছেন এবং বিভিন্ন সনদে তার স্বপ্ন শহিদ রেওয়ায়েতও পেশ করেছেন।


কবরের সওয়াল হতে পরিত্রাণপ্রাপ্ত সপ্তম ব্যক্তি হলেন যে প্রতি রাতে আল্লাহর রহমত প্রাপ্তির প্রত্যাশায় সুরা তাবারাকাল্লাযি তিলাওয়াত করবে। এ সম্পর্কিত আরো কিছু হাদিস রয়েছে; যা সুনানে আবু দাউদ, তিরমিযি, নাসায়ি এবং ইবনে মাযাহ প্রভৃতি গ্রন্থে বর্ণিত রয়েছে। কোনো বর্ণনায় এ সুরার সঙ্গে সুরা সাজদাকেও সংযুক্ত করা হয়েছে।


মূল: আল্লামা ইদরিস কান্ধলভি [রহ.]


অনুবাদ: মাওলানা মিরাজ রহমান।


বিবার্তা/জিয়া


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com