
ইবাদত ও আল্লাহর রহমত লাভের শ্রেষ্ঠ সময় রমজান মাস। এ মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম। হাদিসে এসেছে রোজাদারের গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা। এখানে রোজাদারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ৫ হাদিস তুলে ধরা হলো:
রোজার প্রতিদান আল্লাহ দেবেন
প্রত্যেক নেক আমলের নির্ধারিত সওয়াব ও প্রতিদান রয়েছে, যার মাধ্যমে মহান আল্লাহ আমলকারীকে পুরস্কৃত করবেন। কিন্তু রোজার বিষয়টি আলাদা। কারণ রোজার বিষয়ে মহান আল্লাহর পক্ষ হতে এক অনন্য ঘোষণা। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, كل عمل ابن آدم يضاعف الحسنة بعشر أمثالها إلى سبعمائة ضعف، قال الله تعالى : الا الصوم فإنه لى وانا أجزى به يدع شهوته وطعامه من أجلى
অর্থ: মানুষের প্রত্যেক আমলের প্রতিদান বৃদ্ধি করা হয়। একটি নেকীর সওয়াব দশ গুণ থেকে সাতাশ গুণ পর্যন্ত। মহান আল্লাহ বলেন, কিন্তু রোজা আলাদা। কেননা তা একমাত্র আমার জন্য এবং আমি নিজেই এর বিনিময় প্রদান করব। বান্দা একমাত্র আমার জন্য নিজের প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং পানাহার পরিত্যাগ করেছে। (মুসলিম, হাদিস: ১১৫১ (১৬৪); ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬৩৮)
রোজাদারকে আল্লাহ কেয়ামতের দিন পানি পান করাবেন
হজরত আবু মুসা (রা.) হতে বর্ণিত হাদিসে আছে, ان الله تبارك وتعالى قضى على نفسه أنه من اعطش نفسه له في صائف سقاه يوم العطش
অর্থ: মহান আল্লাহ নিজের উপর অবধারিত করে নিয়েছেন, যে ব্যক্তি তার সন্তুষ্টির জন্য গ্রীষ্মকালে (রোজার কারণে) পিপাসার্ত থেকেছে, তিনি তাকে তৃষ্ণার দিন (কিয়ামতের দিন) পানি পান করাবেন। (মুসনাদে বাযযার, হাদিস: ১০৩৯; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদিস: ৫০৯৫)
রোজা হল জান্নাত লাভের পথ
عن حذيفة رضي الله عنه قال : اسندت النبي صلى الله عليه وسلم إلى صدري، فقال : من قال : لا إله إلا الله ختم له بها دخل الجنة، ومن صام يوما ابتغاء وجه الله ختم له به، دخل الجنة، ومن تصدق بصدقة ختم له بها، دخل الجنة، رواه احمد، وذكره الهيثمى فى المجمع
অর্থ: হজরত হুযায়ফা (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমার বুকের সঙ্গে মিলিয়ে নিলাম, তারপর তিনি বললেন, যে ব্যক্তি লাইলাহা ইল্লাল্লাহু’ বলে মৃত্যুবরণ করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় একদিন রোজা রাখবে, পরে তার মৃত্যু হয় সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোনো দান-সদকা করে তারপর তার মৃত্যু হয়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২৩৩২৪; মুসনাদে বাযযার, হা.২৮৫৪)
রোজাদারগণ জান্নাতে প্রবেশ করবে বিশেষ দরজা দিয়ে
হজরত সাহল ইবনে সা’দ (রা.) হতে বর্ণিত, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, إن فى الجنة بابا يقال له الريَّان يدخل منه الصائمون يوم القيامة، لا يدخل منه أحد غيرهم، يقال : اين الصائمون فيقومون، لا يدخل منه أحد غيرهم، فاذا دخلوا اغلق، فلم يدخل منه احد
অর্থ: জান্নাতে একটি দরজা আছে, যার নাম রাইয়ান। কিয়ামতের দিন এ দরজা দিয়ে কেবল রোজাদার ব্যক্তিরাই প্রবেশ করবে। অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা করা হবে- কোথায় সেই সৌভাগ্যবান রোজাদারগণ? তখন তারা উঠে দাঁড়াবে। তারা ছাড়া কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। অতঃপর রোজাদারগণ যখন প্রবেশ করবে, তখন তা বন্ধ করে দেয়া হবে। ফলে কেউ ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। (বুখারি, হাদিস: ১৮৯৬; মুসলিম, হাদিস: ১১৫২)
রোজাদারের সকল গুনাহ মাফ হয়ে যায়
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত হাদিসে আছে, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, من صام رمضان ايمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه
অর্থ: যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজান মাসের রোজা রাখবে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (বুখারি, হাদিস: ৩৮, ২০১৪; মুসলিম ৭৬০, ১৬৫)
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]