শিরোনাম
যেভাবে শুরু কড়বা চওথ
প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০১৬, ১৬:১৬
যেভাবে শুরু কড়বা চওথ
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের শুরুতেই পালন করা হয় কড়বা চওথ বা কড়ক চতুর্থী ব্রত। সমগ্র উত্তর ভারত, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ দক্ষিণ ভারতের বিবাহিত নারীরা স্বামীর মঙ্গল কামনায় এই ব্রত পালন করেন। সম্প্রতি বাঙালিরাও এই ব্রত পালন করছেন। কড়ক চতুর্থী তিথিতে স্ত্রী সারাদিন উপবাসে থেকে শিব-পার্বতী ও গণেশের পুজো করেন ও শেষমেশ উপবাস ভাঙেন সন্ধ্যাবেলা চালুনির ভেতর দিয়ে প্রথমে চাঁদের প্রতিবিম্ব ও পরে স্বামীর মুখদর্শন করে। এই ব্রতের মূলকথা হল স্বামীর দীর্ঘায়ু কামনা।   

 

অনেকেই মনে করেন কড়বা চওথ বা কড়ক শব্দের অর্থ তেতো। তবে এই নামকরণের কারণটি অন্য। কড়বা হলো এক ধরনের মাটির হাঁড়ি। এই ব্রতের পেছনে রয়েছে বেশ কয়েকটি গল্প, যেখান থেকে এই ব্রত উদযাপন শুরু। 

 

মহাভারতের গল্প অনুযায়ী, এই ব্রতটি শুরু করেছিলেন সাবিত্রী। সত্যবানকে বিয়ে করার সময়েই তিনি জানতে পেরেছিলেন যে তাঁর স্বামীর আয়ু মাত্র এক বছর। তবুও এই বিয়ে থেকে পিছিয়ে আসেননি তিনি। ঠিক এক বছর সম্পূর্ণ হওয়ার তিন দিন আগে থেকে তিনি শুরু করেন বিশেষ ব্রতপালন। নির্দিষ্ট মৃত্যুর দিনে যখন যমদেব সত্যবানের আত্মাকে নিয়ে যেতে আসেন, তখন সাবিত্রী প্রথমে ধর্ম ও যমদেবের স্তুতিগান করেন। স্তুতিতে খুশি হয়ে যমদেব তাঁকে বলেন সত্যবানের জীবন ছাড়া আর যেকোনো তিনটি বর তিনি দিতে রাজি। 

 

সাবিত্রী প্রথমে তাঁর শ্বশুরের দৃষ্টি ও রাজ্য পুনরুদ্ধারের বর চান। সেটি মঞ্জুর হওয়ার পরে তাঁর বাবার জন্য শত সন্তানের বরভিক্ষা করেন। দ্বিতীয় বরটিও মঞ্জুর হলে সাবিত্রী এবার তাঁর ও সত্যবানের শত সন্তানের বর চান। অর্থাৎ কৌশলে এই বরের মাধ্যমে সত্যবানের জীবনভিক্ষা করেন সাবিত্রী। প্রথমটায় দ্বিধায় পড়লেও সাবিত্রীর ধর্মে ভক্তি ও স্বামীনিষ্ঠ ভাব দেখে অত্যন্ত প্রসন্ন হন যমদেব এবং শেষ পর্যন্ত সত্যবানের জীবন ফিরিয়ে দেন। সেই থেকেই প্রচলিত হয় কড়বা চওথ ব্রত।

 

কিন্তু মহাভারতের একটি ভার্সন অনুযায়ী, অর্জুনের মঙ্গল কামনায় এই ব্রত পালন করেছিলেন দ্রৌপদীও। এছাড়া এই সংক্রান্ত একটি লোককাহিনীও প্রচলিত রয়েছে।

 

বলা হয়, কড়বা নামের এক নারী তার স্বামীর প্রতি অত্যন্ত একনিষ্ঠ ছিলেন। একদিন স্নান করতে গিয়ে তার স্বামী কুমিরের মুখে পড়ে। কড়বা ছুটে এসে কুমিরটিকে বেঁধে ফেলে কাপাস দড়ি দিয়ে। এরপর সে যমদেবকে প্রার্থনা করে কুমিরটিকে নরকে নিক্ষেপ করতে। প্রথমে যম এই প্রার্থনাকে গুরুত্ব না দিলে ক্রুদ্ধ কড়বা যমকে শাপ দিতে উদ্যত হয়। একজন স্বামীনিষ্ঠ নারীর অভিশাপ কতটা জোরদার হতে পারে সেটা ভালোই জানতেন যম। তাই তিনি ভয় পেয়ে কড়বার প্রার্থনা মঞ্জুর করেন এবং তার স্বামীকে দীর্ঘ জীবনের বরদান করেন। 

 

বিবার্তা/নিশি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com