শিরোনাম
আত্মীয়কে দান করলে মিলবে যে নেকি
প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৪০
আত্মীয়কে দান করলে মিলবে যে নেকি
ধর্ম ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম দান। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মিসকিনকে দান করলে নেকি হবে, আত্মীয়কে দান করলে তা হবে দুটি নেকি করার সওয়াব। তা হলো দান ও আত্মীয়তা রক্ষা। (আত-তারগিব)


বুখারি ও মুসলিম শরিফে বর্ণিত আছে যে, সুরা আল ইমরানের ‘তোমরা কখনো কল্যাণ লাভ করতে পারবে না, যতক্ষণ তোমরা যা ভালোবাস তা দান না কর।’ এই আয়াত নাজিল হলে সাহাবিগণের মধ্যে এ নিয়ে চিন্তাভাবনা ও প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায় যে, তার সম্পত্তির মধ্যে কোন জিনিসটি বেশি প্রিয় এবং তা কত দ্রুত রসুল সা. এর কাছে গিয়ে দান করা যায়।


মদিনার আনসারদের মধ্যে সবচেয়ে ধনী ছিলেন আবু তালহা রা.। মসজিদে নববীর বিপরীত দিকে তার একটি বাগানে ‘বীরহা’ নামে একটি কুয়া ছিল। ক্রমে ঐ কুয়ার নামানুসারে তার বাগানটিও ‘বীরহা’ নামে পরিচিত হয়।


রসুল সা. মাঝে মাঝে এই বাগানে আসতেন। এই কুয়ার পানি খেতেন। এই কুয়ার পানি তার কাছ খুবই প্রিয় ছিল। আবু তালহারও এই কূপসহ বাগানটি অত্যন্ত মূল্যবান, উর্বর ও সর্বাপেক্ষা প্রিয় সম্পদ ছিল।


উক্ত আয়াত নাযিল হওয়ার পর তিনি রসুল সা. এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললেন যে, আমার সমস্ত বিষয় সম্পত্তির মধ্যে বীরহা আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়। তাই এটি আমি আল্লাহর পথে ব্যয় করতে চাই। আপনি যে কাজে ভালো মনে করেন এটি ব্যয় করুন।
রসুল সা. বললেন, এত বড় বাগান, আমার মতে তুমি নিজের আত্মীয় স্বজনের মধ্যে বন্টন করে দিলেই ভালো হবে। হযরত আবু তালহা এই উপদেশ অনুসারে বাগানটি স্বীয় আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে ভাগ করে দিলেন।
ওদিকে হযরত যায়েদ বিন হারিসা তার আরোহনের প্রিয় ঘোড়াটিকে নিয়ে রসুল সা. এর কাছে হাজির হলেন। তা আল্লাহর পথে দান করার ইচ্ছা ব্যক্ত করলেন। রসুল সা. ঘোড়াটি তার কাছ হতে নিয়ে তারই ছেলে উসমানকে দান করলেন।
হযরত যায়েদকে এতে কিছুটা দ্বিধান্বিত দেখে তাকে এই বলে আশ্বস্ত করলেন যে, তোমার দান গৃহীত হয়েছে। এই দুটি ঘটনা থেকে জানা গেল যে আল্লাহর পথে দান করার অর্থ শুধু ফকীর মিসকীনকে এবং ইসলামের পথে জিহাদরত ব্যক্তি বা সংস্থাকে দান করা নয়, বরং পরিবার পরিজন ও দরিদ্র আত্মীয় স্বজনকে দান করাও আল্লাহর পথে দানের শামিল এবং বিরাট সওয়াবের কাজ।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, (বরং কল্যাণ আছে) আল্লাহকে ভালোবেসে আত্মীয়-স্বজন, এতিম-মিসকিন, মুসাফির ও সাহায্যপ্রার্থীদের এবং দাস মুক্তির জন্য ধন-সম্পদ ব্যয় করার মধ্যে। (সুরা বাকারা ১৭৭)



হাদিসে এসেছে, মহানবী সা. বলেন, কোনো গরিব মানুষকে সদকা দিলে শুধু সদকার সওয়াবই পাওয়া যাবে। আর গরিব আত্মীয়কে সদকা দিলে পাওয়া যাবে দুই বিষয়ের সওয়াব। সদকার সওয়াব এবং আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করার সওয়াব। (আহমদ)


আত্মীয়ের হক আদায়ে সচেতন হওয়ার ব্যাপারে সচেতন করে আল্লাহ বলেন, তোমরা ভয় করো রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয়ের ব্যাপারে, তাদের হক আদায় করে দাও। (সূরা নিসা ১)
আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করার প্রয়োজনীয়তা, বিপদাপদে তাদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের ভালো-মন্দের খোঁজখবর রাখা, তাদের সার্বিক কল্যাণ কামনা করার ফজিলত সম্পর্কে কুরআনুল কারিমে এবং হাদিসে অনেক বাণী উল্লিখিত হয়েছে।


মহান আল্লাহ যে সম্পর্ক অটুট রাখার নির্দেশ দিয়েছেন, যারা তা অটুট রাখে তাদের প্রশংসায় তিনি বলেন, আল্লাহ যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রাখার নির্দেশ দিয়েছেন, যারা তা অক্ষণ্ন রাখে, ভয় করে তাদের প্রতিপালককে এবং ভয় করে কঠোর হিসাবকে...এদের জন্য শুভ পরিণাম। (সূরা রাদ ২১)


বিবার্তা/মাসুম

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com