শিরোনাম
রাজউক উত্তরা মধ্যবিত্ত (শোষণ) আবাসন প্রকল্প
প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০১৯, ১১:৩১
রাজউক উত্তরা মধ্যবিত্ত (শোষণ) আবাসন প্রকল্প
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

২০১২ সালে রাজউকের চটকদার বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে যেসব আবেদনকারী প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন বরাদ্দপ্রাপ্ত হিসাবে, ২০১৯ এসে তারা আধুনিক আবাসন প্রকল্পের বদলে মূলত অর্থনৈতিক শোষণের শিকারে পরিণত হয়েছেন ঢালাওভাবে।


বাস্তবটা এমন কঠিন যে, এর উপমা খুঁজতে হলে বলতে হয় ক্যাপ্টেন বিফহার্ট-এর কথা, ‘কুকুরের দয়া দেখে শেখা যায় কতটুকু মানবিক আমাদের হওয়া উচিত।’ আর আদি বাংলায় বললে বলতে হয় , ‘ভিক্ষা চাই না মা, কুত্তা ঠেকা।’


২০১৬ সালে নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ শেষ করে বসবাস উপযোগী করে যে প্রকল্প বরাদ্দ দেয়ার কথা, ২০১৯ এসে সে প্রকল্প আধুনিক সেবার বদলে হয়ে উঠেছে জনবিচ্ছিন্ন চোর-ডাকাতদের অভয়ারণ্য।


কিছু রং বাহারি দালানের আকাশছোঁয়া দৃশ্য দূর থেকে যদিও দৃষ্টি নান্দনিক। কিন্তু এর ভেতর বসবাসরত নাগরিকরা বঞ্চিত অধিকাংশ মৌলিক সুবিধা থেকে। অনেকটা ‘নাই টেলিফোন, নাইরে পিওন, নাইরে টেলিগ্রামের’ দশা। না আছে পাঠশালা, দোকান পাঠ, বা নিরাপত্তা চৌকি বা ন্যূনতম চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র। আর রাস্তাঘাটের দশা তো ‘হায় আল্লাহ’ অবস্থা!


এর সাথে যোগ হয়েছে সুদের খড়ক! শর্তমতে পঞ্চম কিস্তি নেয়ার কথা ছিল প্রকল্পের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণরূপে শেষ করে! কিন্তু রক্ষক যেখানে ভক্ষক সেখানে দুর্বলের আর্তনাদ মিলিয়ে যায় অনিয়ম আর অনাচারের মাঝে। আদালত যেখানে স্টে অর্ডার দিয়েছেন এই বলে যে, নভেম্বর ৩০, ২০১৯ তারিখ পর্যন্ত রাজউক কোনো প্রকার টাকা চাইতে পারবে না। সেখানে জুলাই ২০১৯, পর থেকে টাকা জমা করলে কিস্তি সুবিধা হিসাবে দিতে হবে অতিরিক্ত নয় পার্সেন্ট হারে কিস্তি ফি!


‘গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল’ একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান হয়ে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিযে সুদহীনভাবে বাকি কিস্তির অর্থ পরিশোধের সুযোগ কেড়ে নেয়া পাকি জুলুমবাজদের কথাই মনে করিয়ে দেয়। অথচ এই রাজউকই ফ্লাট বরাদ্দ করতে বিলম্ব হলে অন্য ডেভেলপারদের গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করে। কার জন্য এই দৈতনীতি, প্রজাতন্ত্রের মালিক যদি হয় জনগণ?


সেবার নাম করে অর্থনৈতিক শোষনের ফাঁদে ফেলে যে বরাদদ্দপ্রাপ্তদের এই প্রকল্পে নিঃশেষ করা হচ্ছে, ইনারা অনেকেই অবসরপ্রাপ্ত সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা, যাদের নিত্য খরচের একটি বড় অংশ যায় ওষুধ কেনা এবং চিকিৎসা বাবদ।


মধবিত্তরা এমনিতেই মেরুদণ্ডহীন, নিরীহ প্রকৃতির। তার ওপর মরার উপর খাঁড়ার ঘা। এসব এলটিরা যাতে ঐক্যবদ্ধ হতে না পারে সেজন্য সুকৌশলে এলটিদের মধ্যে উসকে দেয়া হয়েছে দল, উপদল ও দালালদের ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ এর খেলা।


কোথায় যাবে মধ্যবিত্ত, বাছা?


‘সারা জীবন তুমি পরেছিলে গলে গোলামির শিকল-শেষ জীবনে দিয়ে যাবে ঋণের বোঝা সন্তানদের ওপর!’



লেখক: মো. রাসেল তালুকদার
অনুষদ সদস্য, ইএলআই
জাজান ইউনিভার্সিটি।


বিবার্তা/রবি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com