শিরোনাম
ছাত্রদেরকেই রাজনীতি করতে হবে
প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০১৮, ১৫:৫১
ছাত্রদেরকেই রাজনীতি করতে হবে
সামসুল আরেফিন সেজান
সামসুল আরেফিন সেজান
প্রিন্ট অ-অ+

অধ্যাপক ফকস বলেছিলেন, ন্যায় নীতির দৃষ্টিকোণ থেকে যা কিছু সঠিক কিংবা ইতিবাচক রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে তা ভুল কিংবা নেতিবাচক হতে পারে না। অর্থ্যাৎ, রাজনীতি হলো সত্যের সাথে আপোষহীন একটি পন্থা। যে পন্থা সৎ, সততা আর ইতিবাচকতা নিয়ে কথা বলে।


কিন্তু পারিপার্শ্বিক কার্যকলাপ রাজনীতির সংজ্ঞাটাকেই যেন পাল্টে দিয়েছে। রাজনীতি বলতে আমরা এখন পলিটিক্সকে না বুঝে পলিট্রিক্সকে বুঝি! অর্থ্যাৎ, রাজনীতি মানেই এখন শুধু কৌশল আর চতুরতার খেলা। কিন্তু সত্যি কি তাই?


কয়েক শত বছরের ইতিহাসে প্রয়োজনের তাগিদে এই বাংলার মাটিতে বার বার আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে। দিন শেষে তা ছিল রাজনৈতিক সচেতনতারই ফল। শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করেই এই বাংলাকে পাকিস্তানী শোষণ আর বঞ্চনা থেকে মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে।


সেই ৭ মার্চে একজন রাজনীতিবিদের ঐতিহাসিক সেই ভাষণটিও ছিল নিজেদেরকে রাজনৈতিকভাবে সুসংগঠিত করার হাতিয়ার। তাহলে কালের বিবর্তনে কেন আমরা সেই রাজনীতিকেই এড়িয়ে চলতে স্বাচ্ছন্দবোধ করি? দোষটা কার? রাজনীতির না-কি রাজনীতিকের?


বিশেষ করে বর্তমান তরুণ সমাজ তথা ছাত্রসমাজের অধিকাংশই রাজনৈতিক বিষয়ে একেবারেই বিমুখ। অনেকের কাছে রাজনীতি বিমুখতা স্মার্টনেসও বটে। হলফ করে বলতে পারি যে, তাদের অনেকেই নিজ এলাকার নির্বাচিত কোনো জনপ্রতিনিধির নামটাও বলতে পারবেন না।


সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আন্দেলনগুলোর সময় দেখলাম, বহু রাজনীতিবিদ আর তাদের দ্বারা গৃহীত সিদ্ধান্তের প্রতি হটাৎ করেই অভিযোগের ফুলঝুড়ি। কিন্তু কোনো কিছু ঘটে যাওয়ার পর কেন অভিযেগ? কোনো সিদ্ধান্ত ঘটার পূর্বে কোথায় ছিল তাদের মতামত?


দেখা যায়, একটি ছাত্র সংগঠনকে প্রায়ই দোষারোপ করা হয়। কিন্তু শুধু দোষারোপের প্রবৃত্তিই কি ছাত্রদের ভূমিকা? দোষারোপ করার পূর্বে কবে কখন খোঁজ নিয়েছিলেন- কে হচ্ছেন সেই ছাত্র সংগঠনটির নেতা? কী ভূমিকা পালন করছে তারা? কিংবা কখনও তাদের প্রতি কখনও পরামর্শ সূচক কোনো মন্তব্য করেছিলেন? তাদের কোনো ভালো কাজে সাধুবাদ জানিয়েছিলেন? রাষ্ট্রের কোন সিদ্ধান্ত কেমন হলে ভালো হয় এগুলো নিয়ে আগে ভেবেছিলেন? নাকি তথাকথিত সুশীল সেজে শুধু পরবর্তীতে গালিই দিয়ে গেছেন?


নিজের রাজনৈতিক দায়িত্ববোধ আর আচরণকে বন্ধ রেখে সর্বদা কাঙ্খিত ফলাফল আশা করাটা বোকামি। রাজনীতি মানে শুধু দলবাজী করে মিছিল-মিটিং করা নয়, সমসাময়িক বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে; খেয়াল রাখতে হবে। সচেতনতার পরিচয় দিতে হবে। ছাত্র সমাজ যত বেশি সচেতন থাকবে ছাত্র সংগঠনগুলোর মাঝে তত বেশি প্রতিযোগিতা চলবে নিজেদের ইমেজ বাড়ানোর। আর ইমেজ নিয়ে কাজ করা ছাত্ররাজনীতিই হবে সকল রাজনীতির আদর্শ।


সমাজ-গাড়ির স্টিয়ারিং হলো রাজনীতি। স্টিয়ারিং যেদিকে ঘুরবে গাড়ি সেদিকেই যাবে। তাই সিদ্ধান্ত আপনার, নিজের দায়িত্ববোধকে বন্ধ রাখবেন না-কি স্টিয়ারিং ভুল কারও হাতে ছেড়ে দিবেন।


পরিশেষে এটাও প্রত্যাশা যে, ছাত্র সমাজের জন্যই হবে ছাত্ররাজনীতির মূল কার্যক্রম।


লেখক: শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।


বিবার্তা/কামরুল/হুমায়ুন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com