স্বাধীনতার পর দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও বৈষম্যহীন সমাজ বিনিমার্ণের স্বার্থে ১৯৭২ সাল থেকেই কোটা ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। তারপর প্রয়োজনের তাগিদে বিভিন্ন সময়ে কোটাব্যবস্থার পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও পরিমার্জন করা হয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে কোটা ব্যবস্থার সংস্কার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, কোটা ১০% এর অধিক নয়। তারা সরাসরি মুক্তিযোদ্ধা কোটা না কমানোর কথা বললেও এর মধ্যেই নিহিত আছে মুক্তিযোদ্ধা কোটা কমানোর দাবিও।
কোটা সংস্কার করা বা না করার বিষয়টি সরকারের। তবে এ বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত অভিমত হলো, স্বাধীনতার ৪৭ বছরে দেশ আজ মধ্যম আয়ের উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। প্রায় সারাদেশে শিক্ষার প্রসার ও উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। নারীরাও প্রায় সর্বক্ষেত্রে সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। তাই জেলা ও নারী কোটার পরিমার্জন বিষয়ে চিন্তা করা যেতে পারে।
তবে মুক্তিযোদ্ধা কোটা স্পর্শকাতর একটি বিষয়, বিশেষত আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য। কারণ, এই দেশটি স্বাধীন হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। অতএব মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মান মর্যাদা ও স্বার্থ দেখার দায়িত্ব আওয়ামী লীগের। আজ যদি আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাসীন অবস্থায় এ কোটা পরিমার্জনের মতো স্পর্শকাতর সিদ্ধান্ত নিতে হয় তখন এটা কেমন নজির হবে তা আমার ধারণাতীত।
আশা করি, এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ ও সরকারের নীতিনির্ধারকগণ নিশ্চয়ই খুবই প্রাজ্ঞ সিদ্ধান্ত নেবেন।
বিসিএস হচ্ছে সমাজের উচ্চ স্তরে উঠে আসার এবং রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারক পর্যায়ে ভূমিকা রাখার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা পথ। মেধাবীদের ধারণা, কোটার কারণে তারা সে পথে পা রাখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ধারণাটা আংশিক সত্য। বাস্তবতা হলো, যদি কোটাব্যবস্থা পুরোপুরি বাতিলও হয়ে যায়, তবুও এ কথা নিশ্চিত করা বলা যাবে না যে তারা তাদের অাশানুরুপ অবস্থান পাচ্ছে। এমনও হতে পারে যে, এলিট শ্রেণীর বৈষম্যের শিকার হয়ে তারাই আবার কোটা প্রবর্তনের জন্য আন্দোলন করছে।
লেখক : সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
বিবার্তা/হুমায়ুন/মৌসুমী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]