মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,

আসসালামু আলাইকুম। পত্রের প্রথমে আমাদের মুজিবীয় শুভেচ্ছা নিবেন। আশা করি, স্রষ্টার কৃপায় ভালো আছেন।

হতাশার করাল গ্রাসে আক্রান্ত লক্ষ লক্ষ চাকরিপ্রত্যাশী ভাই-বোনের পক্ষে আপনাকে এই খোলা চিঠি লিখতে বসলাম এই আশায় যে, বৈষম্যের বেড়াজাল ছিন্নকারী, শোষিতের বন্ধু, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে দীক্ষিত এই আমার মতো একজন নগণ্য মানুষের লেখা হয়তো কোনো-না-কোনো উপায়ে আপনার কাছে পৌঁছাবে।

প্রিয় জননেত্রী,

একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে আপনার ভূমিকা আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সমগ্র বিশ্বের কাছে পৌঁছে গেছে। আপনার মহান নেতৃত্বে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে যাচ্ছি। পদ্মা সেতুতে নিজস্ব অর্থায়ন থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি খাতে সমৃদ্ধি এনে দেয়ার একমাত্র নেত্রী যে শেখ হাসিনা তা বাংলাদেশের মানুষ অনেক আগেই জেনেছে। দেশের আপামর জনসাধারণের আশা-ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল যে আপনি তা আপনি নিজেও জানেন।

মমতাময়ী নেত্রী,

সমগ্র দেশ যখন উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে তখন চাকুরীপ্রত্যাশী আমরা লাখো তরুণ সরকারী চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতির কারণে গভীর হতাশায় নিমজ্জিত হচ্ছি। এ পদ্ধতির কারণে একদিকে যেমন বছরের পর বছর হাজার হাজার শূন্যপদ শূন্যই থেকে যাচ্ছে, অপরদিকে বঞ্চিত হচ্ছে আমাদের মতো লক্ষ লক্ষ কর্মক্ষম যুবক।

প্রিয় বিশ্বনেত্রী,

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে এবং আপনার উন্নয়নের হাতকে জোরদার করতে দক্ষ ও মেধাবী প্রশাসনের বিকল্প নেই। একমাত্র মেধাবীরাই পারে আপনার সুনিপুণ নির্দেশনা গ্রহণ করে দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমকে বেগবান করতে। এই মেধাবী তরুণরাই তাদের উদ্ভাবনীশক্তি কাজে লাগিয়ে রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারে। অপেক্ষাকৃত বেশি যোগ্যরাই পারে সমাজের সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে আপনার নীতি ও আদর্শকে দক্ষতার সাথে বাস্তবায়ন করতে। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয়, কোটা পদ্ধতির কারণে শত সম্ভাবনার এই মেধাবীরা সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

প্রিয় বিশ্বমানবতার বিবেক,

বিদ্যমান কোটা পদ্ধতির কারণে মেধাবী চাকরিপ্রত্যাশীদের এই বঞ্চনা একদিকে যেমন চাকরিপ্রার্থীদের মনে ক্ষোভের সঞ্চার করছে অন্যদিকে তেমনি রাষ্ট্র হারাচ্ছে সম্ভাবনাময় মানবসম্পদ, যা টেকসই উন্নয়ন ও রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে অন্তরায় হিসেবে পরিগণিত হতে যাচ্ছে।

প্রিয় মাদার অব হিউম্যানিটি,

আপনার সুবিবেচনাপূর্ণ একটি পরামর্শই পারে এই সমস্যার সমাধান ও লক্ষ বেকারের হতাশা দূর করতে। বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি সংস্কার করে সমপ্রতিযোগিতাপূর্ণ পদ্ধতিতে অপেক্ষাকৃত মেধাবী তরুণদের সরকারি চাকরি প্রাপ্তিতে সুযোগ করে দিবেন সে আশা আমরা একমাত্র আপনার কাছেই করতে পারি। কারণ, আমরা বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা কখনো ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।

লেখক : সাবেক পাঠাগার সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কবি জসীম উদদীন হল শাখা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বিবার্তা/মৌসুমী/হুমায়ুন