শিরোনাম
দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষমতায়ন
প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৯:৪৩
দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষমতায়ন
হায়দার মোহাম্মাদ জিতু
প্রিন্ট অ-অ+

তাত্ত্বিক মিশেল ফুকো ক্ষমতাকে ব্যাখ্যা করেন এই বলে যে ''ক্ষমতা সমাজে সম্পর্ক জালের মত বিস্তৃত''। অর্থাৎ যে কেউ যে কোনো সময় ক্ষমতাবান বনে যেতে পারেন। আর এই বিষয়টির পূর্ণ প্রয়োগ মেলে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায়। যেখানে সুশাসনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র চেষ্টা করে সার্বিক সমঅধিকারের।


বাংলাদেশ এখন চলছে তেমনই একটা যুগের হাত ধরে। তারা “দুর্নীতির” ‘আইয়ামে জাহলিয়া’ তথা ‘অন্ধকারাচ্ছন্ন’ যুগকে পেছনে ফেলে নতুন এক আলোর পথের যাত্রী। শুধু তাই নয়, কালের পরিক্রমণে ‘দুর্নীতি’ শব্দটিকে এখন শুধু ডিকশনারিতে বন্দী করতেও তারা বেশ তৎপর। যদিও তন্দ্রা-নিদ্রায় এর গতিপ্রকৃতি আজও কিছু চোরাগলি ও রক্তস্রোতে বহমান।


সম্প্রতি বাংলাদেশ দেশি-বিদেশি সমস্ত কূটকৌশল বানচাল করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসি্নার নেতৃত্বে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথে পা রেখেছ। তারা দেশের কথিত প্রভাববলয়ের জঙ্গি-যুদ্ধাপরাধীদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায়ের সাক্ষী হয়েছেন।


এই তো সেদিনও (২০০১-০৬) বেগম খালেদা জিয়ার কবলে পড়ে দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের কলঙ্ক যুক্ত হয়েছিল। আজ সেই কলঙ্কের নেপথ্যে রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। বেগম জিয়ার নেতৃত্ব এবং তারেকের তত্ত্বাবধানই যে এই কলঙ্ক, তা আজ বিশ্ববাসী জানতে পেরেছে।


দুর্নীতি মামলায় দোষী প্রমাণিত হয়ে বেগম জিয়া আজ পাঁচ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত। অপরদিকে তার ছেলে তারেকের হয়েছে দশ বছরের কারাদণ্ড। তবে সর্বোচ্চ স্বস্তির বিষয় হল দেশের মানুষ এই রায়কে সাধুবাদ জানিয়েছে।


অর্থাৎ, ‘মার্কসীয়’ সমাজতত্ত্বের দুই শ্রেণী ধারা ‘বুর্জোয়া’ ব্যবস্থায় আসীন ‘জিয়া পরিবার’ এবং প্রলেতারিয়েত’ ব্যবস্থায় আসীন ‘জনগণের’ প্লাটফর্ম ভেঙ্গে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন ‘ফুকোডিয়ান’ সমাজব্যবস্থার পথে। ক্ষমতায়ন ঘটেছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার জনগণের।


বিষয়টি যে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ বিধান সংবিধানের আলোকেও বৈধ, তারও প্রমাণ মেলে। যেমন, সংবিধা্নের ২৭ নং অনুচ্ছেদমতে, “বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং প্রত্যেকেই সমানভাবে সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী”।


সেই প্রেক্ষিতে খালেদা জিয়াও এর বাইরে নন। তবে সেক্ষেত্রে এটাও মাথায় রাখা জরুরী তিনি এ ‘দেশ’ এবং দেশের সংবিধানে বিশ্বাস করেন কিনা ? তবে রাষ্ট্র তাকে একজন নাগরিক হিসেবেই সাক্ষ্য-প্রমাণের সমস্ত সুযোগ দিয়েছিল। যদিও প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সময় নিয়েও তিনি ব্যর্থ হন এবং কৃতকর্মের ফলস্বরূপ জেলেই প্রেরিত হন।


‘আইন সবার জন্যে সমান’। এই যুগের সূচনাকারী হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনা আগামী প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন। যেমনটা আজও ব্রিটেনের কাছে এমিলি ডেভিডসন, যিনি ১৯১৮সালে ব্রিটিশ নারীদের ভোটাধিকার আদায়ে রাজপরিবারের ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার সামনে আন্দোলন করতে গিয়ে গুরুতর আহত হন এবং পরে দেহত্যাগ করেন।


এমিলি ডেভিডসনের সেই সাহস ও ত্যাগই ১৯১৮ সালে প্রথমে বাড়ির মালিকানাধারী নারীদের এবং পরে ১৯২৮ সালে সর্বস্তরের নারীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করে। আজ ৯০ বছর পরও ব্রিটিশরা এমিলিকে স্মরণ করছে শ্রদ্ধা-ভালবাসায়।


এ প্রজন্মেরও সৌভাগ্য যে তারা বঙ্গবন্ধুকে না পেলেও শেখ হাসিনার কর্মস্পৃহা ও আপসহীনতার সাথী হতে পেরেছেন, যেখানে দৃশ্যমান হয়েছে রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতিটি ক্ষেত্রে সবাই সমান এবং কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন।


লেখক : সাংগঠনিক সম্পাদক বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


বিবার্তা/হুমায়ুন/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com