শিরোনাম
রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোও একেকটা ক্ষুদে জেলখানা
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৮:০৪
রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোও একেকটা ক্ষুদে জেলখানা
হায়দার মোহাম্মদ জিতু
প্রিন্ট অ-অ+

পৃথিবীর রাষ্ট্রগুলো যেমন কাঁটাতারে আবদ্ধ একেকটা বৃহৎ জেলখানা, তেমনি মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনীর বর্বরতা থেকে পালিয়ে বাঁচা মানুষগুলোর আশ্রয়স্থল ক্যাম্পগুলোও একেকটা ক্ষুদে জেলখানা।


ইতিমধ্যে বিশ্বশান্তিতে (!) নোবেল পাওয়া সুচির বক্তব্যে এটা পরিষ্কার যে মিয়ানমার আর তার এই নাগরিকদের ফিরিয়ে নেবে না। তিনি বলেছেন, যে সমস্ত রোহিঙ্গার ''কাগজপত্র'' আছে কেবল তাদেরই ফিরিয়ে নেয়া হবে।


মিয়ানমারের নীতি-নির্ধারণী পটে বলা আছে একমাত্র তারাই নাগরিকত্ব পাবেন যারা সেখানে ১৮২৪ সালের পূর্ব থেকে আছেন। অথচ দেশটির সরকার ইতিপূর্বেকার প্রত্যেকটি আদমশুমারিতেই রোহিঙ্গাদের বঞ্চিতই রেখেছিল।


রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে ইতিমধ্যে কয়েক মিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়ে গেছে। যেমন, বিভিন্ন এনজিও, মানবতাবাদী কর্মী ইত্যাদি ইত্যাদি। যদিও সভ্য বিশ্ব সেটাকে সরাসরি স্বীকার করতে নারাজ। কারণ, কথিত আছে, সভ্য সমাজের বুদ্ধিমানরা একে অন্যকে সরাসরি কিছু বলতে নারাজ।
এবার মিয়ানমারের ১৩৫টি জাতিগোষ্ঠীর মাঝে রোহিঙ্গাদের কিছু ''পাপের'' কথা বলা যাক। যেমন, রোহিঙ্গাদের পূর্বপুরুষরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে সরাসরি জাপানিদের সমর্থন করেছিল, যেখানে দেশটির অধিকাংশ জাতিগোষ্ঠী সমর্থন করেছিল ব্রিটিশদের। আবার ভারত বিভাগের সময় তারা সমর্থন করেছিল পাকিস্তানকে। আর একারণেই কখনোই সেদেশের জনগণ তাদের স্বজাতিভুক্ত মনে করে না।


মিয়ানমার নিজেকে একটি রাষ্ট্র বা দেশ হিসেবে দাবি করলেও আদতে ওটা একখানা বৃহৎ সেনাব্যারাক। তাই তো কাগজেকলমে গণতন্ত্রের কথা বললেও ওদের সেনাবাহিনী সংসদের ২৫ ভাগ আসন নিজেদের জন্য ধরে রেখেছে। এক কথায় যাকে বলা যায় বিশ্ববাসীর চোখের সামনে গণতন্ত্রকে বলাৎকার।


কেউ যদি বৌদ্ধ ধর্মকে জাতীয়তাবাদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেও দেশটিকে একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তারাও ব্যর্থ প্রমাণিত হবেন। কারণ, গৌতমের বৌদ্ধ ধর্ম কখনোই সহিংসতার কথা বলেন না।


রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কোনো ধরনের মানবীয় শোক নদী উপস্থাপনের ইচ্ছা নেই। তবে ভবিষ্যতের ভাবনা থেকে নির্লজ্জ কণ্ঠে বলতে চাই, এই সমস্যা মিয়ানমারের, আমাদের নয়। এখানে আমরা জাতি হিসবে বলির পাঁঠা। তবে যারা অতি মানবীয় কায়দার বুজুর্গ তাদের বলি, মিয়ানমারের সাথে অর্থনৈতিকভাবে চীন, পাকিস্তান, ভারত, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র যুক্ত। কাজেই এখন ভাবুন, কে কার কথা ভাববে ?


তবে কেউ কেউ হয়ত জাতিসংঘের কথাও ভাবতে পারেন। তারা যদি কিছু করতেই পারতেন তাহলে আজ ইরাকে-সিরিয়ায়-লেবাননে-সুদানে- ইসরাইল-ফিলিস্তিনের এই অবস্থা কেন ? আর তাছাড়া জাতিসংঘের সর্বোচ্চ তহবিল প্রদানকারী রাষ্ট্রও কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র। তাহলে জাতিসংঘই বা কি করবে ?


বিবার্তা/হুমায়ুন/মৌসুমী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com