কি লিখব ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না! টানা নয় দিন থেকে দিনাজপুরের মানুষ পানি বন্দী। শুকনো খাবার দিয়ে কয় দিন চলে?
ইতিমধ্যে দিনাজপুরের ১৪ জন মানুষ কেউ সাপের কামড়ে, কেউ পানিতে ডুবে, কেউ দেয়াল চাপা পড়ে মৃত্যুবরণ করেছে।
সাধারণত দিনাজপুরে বন্যা হয় না। ১৯৯৮ সালে হয়েছিল তবুও সেটি এত প্রবল ছিল না। দীর্ঘ দিন বন্যা না হাওয়ার কারনে বন্যা মোকাবিলার জন্য কোনো প্রস্তুতি নেই।
নৌকা নেই, আশ্রয়কেন্দ্র নেই, যে বাঁধগুলো অরক্ষিত ছিল সেগুলো প্রায় সব ভেঙে গেছে। দিনাজপুর জেলা সদর এখন এক কোমর পানির নিচে। সদর উপজেলা, বিরল, কাহারোল, খানসামা, বীরগঞ্জ, সেতাবগঞ্জ, চিরিরবন্দর, ফুলবাড়ি উপজেলাগুলোর হাজার হাজার মানুষ কয়েকদিন থেকে পানিবন্দী অবস্থায় আছে। নৌকার অভাবে প্রশাসন ত্রাণও ভাল মতো দিতে পারছে না। সেনাবাহিনী, বিজিবি কাজ করছে কিন্তু কূলায় উঠতে পারছে না। কারণ, পূর্নভবা, ঢেপা, আত্রাই নদীর পানি দিন দিন বেড়েই চলেছে।
দিনাজপুরের মানুষ কীভাবে বন্যা মোকাবিলা করতে হয়, তাদের সেই শিক্ষা কিংবা অভিজ্ঞতা নেই।
সবচেয়ে করুণ খবর হলো, বর্তমানে বাংলাদেশের সাথে দিনাজপুরের রেল এবং সড়ক পথে পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। রেলপথ ও মহাসড়ক ডুবে গিয়ে সেগুলোর উপর দিয়ে পানির স্রোত বইছে।
গবাদি পশুপাখিগুলো মারা যাচ্ছে। বাড়িঘর সব ডুবে যাচ্ছে। পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। শিশুদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। দুঃখী মানুষের আহাজারিতে দিনাজপুরের আকাশ বাতাস আজ ভারি হয়ে উঠেছে।
এত দু:খের সংবাদের পরও আশার খবর হল দিনাজপুরের প্রায় সকল সংসদ সদস্য দিন রাত এক করে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্ত পানি যে ভাবে প্রতিদিন বাড়ছে তাঁরাও কাজ করে কূল-কিনারা খুঁজে পাচ্ছেন না।
বাংলাদেশের মিডিয়াগুলোর ফোকাস নেই। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। ডিসি অফিস থেকে সব উপজেলায় যে ত্রাণ পাঠিয়েছে তা এতই অপ্রতুল যে লেখার মত নয়। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে।
এহেন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় ত্রাণ ও দূর্যোগ মন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন দিনাজপুরের স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ এই বন্যা মোকাবেলা করার জন্য ব্যাপক আকারে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা অতীব জরুরী। অন্যথায় দিনাজপুরের এই সব অসহায় আর দুঃখী মানুষগুলোর দুঃখ ছাড়া আর কিছুই থাকবে না।
মাত্র পনের দিন পর ঈদ উল আযহা। ঈদকে ঘিরে অনেকের হয়ত অনেক স্বপ্ন ছিল কিন্তু সব স্বপ্ন আজ দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়ে, বর্তমানে দিনাজপুরের মানুষের বেঁচে থাকার স্বপ্ন আজ সবচেয়ে বড় হয়ে উঠেছে।
নিবেদনে : ঢাকায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত দিনাজপুরের সকল শিক্ষার্থীবৃন্দ
বিবার্তা/মৌসুমী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]