বাংলাদেশের মাঠে মাঠে ফসল আর গাছে গাছে নানান জাতের ফুল-ফল। এখানে রয়েছে কাক, কোকিল, দোয়েল, শ্যামা, ফিঙে, ভোমরা ছোটন, চড়ুই, টিয়া, টুনটুনি, বাবুই, ময়না, শালিক, ময়ূর, মাছরাঙা, চিল, শকুন, বাজ, বক, ঘুঘু, কাঠঠোকরাসহ নানান জাতের পাখি।
ভোমরা ছোটন খাটো লেজের অতি খুদে তৃণচারী পাখি। দেহের দৈর্ঘ্য ১০ সেমি, ওজন ৭ গ্রাম। প্রধানত একাকী ও জোড়ায় চলে। তবে প্রজননের সময় কয়েক জোড়া পাখি একই সঙ্গে দেখা গেছে। এ বৈশিষ্ট্য নওগাঁর পোরশা উপজেলার পুর্ণভাব নদীর তীরে পাখি দেখতে গিয়ে কয়েকবারই চোখে পড়েছে। ক্ষুদে এ পাখিটি খুব সামান্য দূরত্বে উড়ে বেড়ায় ঘাসবন থেকে নলবনে এবং কিছুক্ষণ পরপরই ‘যিট…যিট…যিট’ সুরে ডাকে। এরা বেড়ে ওঠে নদীতীরের নলবন, ঘাসবন ও ধানখেতে। খুব সকালেই এ পাখি তার দৈনন্দিন কাজ শুরু করে। শণ ও ঘাসের ডগায় ডগায় উড়ে বেড়ায় এবং শুকনো ধানখেতে নামে খাবারের সন্ধানে।
নদী মাতৃক বাংলাদেশে নদীর চর অঞ্চলে পাখিটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রয়েছে। এমনকি সাধারণত আর্দ্র আবাদি জমিতে পাখিটি দেখা যায়। এছাড়াও ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চল, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চল, মালদ্বীপ ছাড়া উপগ্রীষ্মমণ্ডলীয় এশিয়াতে পাখিটির বিস্তৃতি রয়েছে।
প্রাপ্তবয়স্ক ছোটন পাখির পিঠের পালক কালচে বাদামি দাগসমেত হালকা পীত বর্ণের। মাথার চাঁদি ধূসর-বাদামি। লেজ ফিকে। ছেলে ও মেয়ে উভয় পাখির চোখ পিঙ্গল বাদামি, জলপাই বাদামি বা খড় বর্ণের। পা ও পায়ের পাতা মেটে। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথায় মোটা লম্বা দাগ থাকে এবং দেহতল হলদে।
ফড়িং, পিঁপড়া, মাকড়সা, শুঁয়োপোকা, গুবরেপোকা ও ফলের বীজ আছে এদের প্রধান খাবার তালিকায়। শুকনো ঘাস ও পাতা-নল দিয়ে মার্চ-জুলাই মাসে নল বা শণের ডগায় ডিম্বাকৃতির বা মোচাকার বাসা বানায়। চার-পাঁচটি ডিম দেয়। ডিম ফিকে নীল। ডিম থেকে ১০ দিনেই ছানা ফোটে। মা-বাবা উভয়ে মিলেই সংসারের বাকি কাজ চালিয়ে যায়।
বিবার্তা/বিদ্যুৎ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]