শিরোনাম
'শুরু হলো অগ্নিঝরা মার্চ'
প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২১, ১০:৩৮
'শুরু হলো অগ্নিঝরা মার্চ'
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

১৯৭১ সালে এই মার্চ মাসের ৭ তারিখে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। আবার ২৫ মার্চ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করলে বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিক ভাবে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন।


শ্রদ্ধা জানাই সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর সকল সহযোদ্ধাকে। শ্রদ্ধা জানাই মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদকে। সালাম জানাই জীবিত-মৃত সকল মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের সহায়তাকারী সব মানুষকে। যারা নির্যাতিত হয়েছেন, ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন- সকলের প্রতি রইলো শ্রদ্ধা।


এ দেশ, এদেশের মানুষ হাজার বছর ধরে বিদেশি হানাদারদের কবলে পড়েছে। অত্যাচারিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত হয়েছিলো। কিন্তু তারা মাথা নোয়ায়নি। শত্রুর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য। এ দেশের কাজল মাটি তার সন্তানের রক্তে বার বার ভিজে উঠেছে। কিন্ত বিজয় আসেনি। বারবার পরাস্ত হয়েছিলো। অবশেষে বিজয় এসেছে ১৯৭১ সালে। বাঙালি জাতির হাজার বছরের স্বাধীনতার তৃষ্ণা মিটেছে একাত্তরে।


জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৫২’র ভাষা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে যাত্রা শুরু হয়ে ৫৪’র যুক্ত ফ্রন্টের নির্বাচন , ৬২’র শিক্ষা আন্দোলনর পর ৬৬’তে ৬ দফার আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্ন জাগিয়ে তুলেছিলেন। এরপর ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলো। যার ফলশ্রুতিতে ৭০’এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছিলো।


১৯৭০ সালের নির্বাচনেই বাঙালি স্বাধীনতার পক্ষে তাদের আকাঙ্ক্ষাটি জানিয়ে দেয়। তারপর তারা পথে নেমে আসে। স্লোগান তোলে : ''বীর বাঙ্গালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো''। জনতার মনের 'কাঙ্ক্ষাটি বহু আগে থেকেই জানতেন জনতার নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।


তাই তিনি ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্সের জনসভায় বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা দিলেন : ''এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।''


নেতার ঘোষণা শুনে জনতা ঝাঁপিয়ে পড়লো। দীর্ঘ নয় মাসের যুদ্ধে রক্ত-আগুন-অশ্রুতে ভিজে ৩০ লক্ষ শহীদ এবং ২ লক্ষ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেলাম স্বাধীনতা ।


১৯৭১ এ হানাদার পাকিস্তানীরা লড়েছে শুধু আমাদের বিরুদ্ধে, আর আমাদের লড়তে হয়েছে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী এবং ঘরের শত্রু রাজাকার-আল-বদর-আল-শামস এবং আন্তর্জাতিক চক্রান্ত উভয় শত্রুর বিরুদ্ধে।


১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে আমরা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি, কিন্তু ঘরের শত্রু ঘরেই থেকে যায়। ওরা গায়ে নানা রঙ মাখে বটে, কিন্তু মনের কালো রঙ বদলায় না আর অপেক্ষায় থাকে সুযোগের - সুযোগ এলেই মারবে ছোবল।


১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ওদের প্রথম ছোবলে সপরিবার নিহত হন স্বাধীনতার মহানায়ক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। নভেম্বরে আরেক আঘাতে ঝরে যান চার নেতা। এরপর আঘাত আসতে থাকে আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি, শিক্ষা তথা সার্বিক জনজীবনে। অসংখ্য মানুষ অসহায়ের মতো চেয়ে-চেয়ে দেখলেও তাদের করার কিছুই ছিল না।


এমন সময় জাতির আকাশে উদিত সূর্যের মতো আবির্ভূত হলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। ১৯৭১এ বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠ যেমন দিশেহারা জাতিকে দিয়েছিলো পথের দিশা, নতুন নেত্রী শেখ হাসিনার আগমনেও জাতি যেন পেল বরাভয়।


অবশ্য তাঁর যাত্রাপথটিও কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। তবে সেই কণ্টকাকীর্ণ পথ মাড়িয়ে জাতি তাকে বসিয়েছে দেশের শীর্ষ আসনে। জাতির আস্থা ও বিশ্বাসের অমর্যাদা করেননি তিনিও। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে জাতিকে তিনি করেছেন কলঙ্কমুক্ত। তাঁর প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির সোনালি ভবিষ্যতের পানে এগিয়ে চলেছে অবিশ্বাস্য দ্রুততায়। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি লাভ করেছে।


আমাদের অনেক সমস্যা আছে, আছে কিছু ক্ষেত্রে দূর্বলতা এবং অভাব-অভিযোগ। কিন্তু সব দুর্বিপাক মোকাবেলায় নেতৃত্ব দিতে আমাদের একজন শেখ হাসিনাও আছেন। আমাদের আর কিসের ভয়? সব বাঁধা অতিক্রম করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং আরও এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।


লেখক: মাহবুবউল আলম হানিফ
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ


বিবার্তা/এনকে

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com