শিরোনাম
জনগণ এমপিদের কাছে ‘ইজি একসেস’ চায়
প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০১৭, ১১:৫৮
জনগণ এমপিদের কাছে ‘ইজি একসেস’ চায়
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে আমিনুল হক পলাশ দেশের সংসদ সদস্যদের কাছে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন। তার লেখা এই আবেগঘন চিঠি বিবার্তা পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো:


মাননীয় সংসদ সদস্যগণ, বাংলাদেশের মানুষের সবচেয়ে বড় গুণ হলো এদেশের মানুষ মন উজাড় করে ভালবাসতে জানে। আর এই ভালোবাসা আদায় করে নেয়ার সবচেয়ে ভাল সুযোগ পান রাজনীতিবিদরা। একদম তৃণমূল থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যায় পর্যন্ত এই কথা প্রযোজ্য। আর একজন রাজনীতিবিদের জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো সংসদ সদস্য পদ লাভ করা। দেশ ও দশের সেবার করার সরাসরি সুযোগ পান একজন সংসদ সদস্য।


একজন সংসদ সদস্য হলেন তাঁর নির্বাচনী এলাকার মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। মানুষজন তাদের যেকোন বিপদ আপদে ছুটে যায় নিজ এলাকার এমপির কাছে। তাদের চাওয়াও খুব বেশি থাকে না। একটু আস্থা, একটু নির্ভরশীলতার খোঁজেই তাদের এই ছুটে আসা। আর এতোটুকু পূরণ করার মাধ্যমেই একজন এমপি মানুষদের মনে চিরস্থায়ী জায়গা করে নিতে পারেন। এমন সুযোগ হেলায় হারানো কোনমতেই উচিৎ নয়।


২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এই সরকারের তিনবছর পূর্ণ হলো আজ। এর আগের মহাজোট সরকারের শীর্ষ অংশীদারও ছিলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। অর্থাৎ দীর্ঘ আটবছর ধরে দেশে একটি স্থিতিশীল শাসনব্যবস্থা বিরাজমান। নিঃসন্দেহে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের স্বর্ণযুগ এই সময়টি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন নিয়ে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডটির জন্ম দিয়েছিলেন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে এই সময়েই সবচেয়ে এগিয়েছে আমাদের লাল সবুজের প্রিয় মাতৃভূমি। এই সময়ে উন্নয়নের যে বিশাল কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়িত হয়েছে এবং এখনও চলমান রয়েছে তা এক লিখায় শেষ করা সম্ভব নয়, সেটা এখানে লিখাও আমার উদ্দেশ্য নয়। এতো উন্নয়নের পরেও মাঝে মাঝেই তাল কেটে যায়, বেসুরো লাগে কিছু ব্যাপার। কেন এমন হচ্ছে?


দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন জরিপে প্রায়শই একটা তথ্য উঠে আসে যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু সেই অনুপাতে বাড়ছে না বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কিংবা সরকারের জনপ্রিয়তা। অর্থাৎ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন দল কিংবা সরকার সেই গতির সাথে তাল মিলিয়ে এগুতে পারছে না।


নিঃসন্দেহে আমরা সৌভাগ্যবান যে জননেত্রী শেখ হাসিনার মত সরকার প্রধান আমরা পেয়েছি। যার হাত ধরে দেশে একের পর এক উন্নয়নের মহাকাব্য রচিত হচ্ছে। কিন্তু এটা ভেবে সন্তুষ্টির ঢেঁকুর তোলার খুব বেশি সুযোগ নেই। কারণ উনার দেখানো পথে এবং উনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য বাকিদেরকেও এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় উন্নয়নের সুফল দেশের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হবে না।


সরকার এবং দেশের সাধারণ মানুষের সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করার দায়িত্ব হলো মাননীয় সংসদ সদস্যদের। উনাদের তত্ত্বাবধানেই সরকারের জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের সুফল মানুষের দোড়গোড়ায় পৌঁছে এবং মানুষজনও তাদের সুবিধা অসুবিধার কথা সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছে দিতে পারেন। এই সেতুবন্ধনে যদি তাল কেটে যায় তাহলে অনেক কিছু বেসুরো লাগে। দেশে সার্বিক সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ পান সংসদ সদস্যগণ। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার মাধ্যমে তারা যেমন মানুষের মনে চিরস্থায়ী শ্রদ্ধার জায়গা দখল করে নিতে পারেন। তেমনি এর অপব্যবহারের মাধ্যমে ঘৃণিতও হতে পারেন। সকল এমপির মনে রাখা উচিৎ পদ চিরস্থায়ী নয়, কিন্তু মানুষের ভালবাসা চিরস্থায়ী।


একজন এমপির কাছে মানুষের চাওয়া কিন্তু খুব বেশি না। মূল চাওয়াটাই হলো যেকোন সমস্যা, সুবিধা, অসুবিধা নিজ এলাকার এমপির কাছে জানাতে পারার সুযোগ পাওয়া। এক কথায় বলা চলে ‘ইজি একসেস’। দুঃখজনক হলেও সত্যি এই জায়গায় ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। অধিকাংশ সংসদ সদস্যগণ নিজ নির্বাচনী এলাকায় না থেকে ঢাকায় থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে একথা জোর দিয়ে বলতে পারি একজন এমপি যদি সিংহভাগ সময় নিজ এলাকায় থাকেন তাহলে সেই এলাকায় যেকোন অঘটন ঘটার সম্ভাবনা অনেকাংশেই কমে যায়। সমাজে ভাল খারাপ সবধরনের মানুষই থাকে। তাই যেকোন সমাজে নানা ধরনের অন্যায় অনাচার হবে, এটাই স্বাভাবিক। গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো সেটার প্রতিবিধানের ব্যাপারে কত দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হলো সেটা। মানুষজনও সেটাই চায়। নিজ এলাকায় সময় দিলেই এমপিগণ এই ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হতে পারবেন। দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমার চাওয়া থাকবে দেশের সকল এমপিগণ যত বেশি সম্ভব নিজ এলাকায় থাকবেন, সর্বক্ষেত্রে নিজ এলাকার মানুষদের পাশে দাঁড়াবেন। বিনিময়ে মানুষের যে ভালোবাসা পাবেন তার কাছে ব্যক্তিগত যেকোন প্রাপ্তি নিতান্তই তুচ্ছ।


দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সরাসরি সুবিধাদানের জন্য অনেকগুলো জনকল্যাণমুখী প্রকল্প গ্রহণ করেছে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার। এদের মাঝে বিশেষভাবে উল্লেখ্যযোগ্য হলো- একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, গ্রাম পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু, ইউনিয়ন তথ্য সেবাকেন্দ্র এবং সাম্প্রতিক সময়ের দশ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির প্রকল্প।


মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণে এ ধরনের যুগোপযোগী প্রকল্প হতে পারত রোল মডেল। শুধুমাত্র এই প্রকল্পগুলোর যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই চিরস্থায়ী ভোট ব্যাংক তৈরি করে নেয়ার সুযোগ ছিল, সুযোগ ছিল সরকারের জনপ্রিয়তা তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়ার। কিন্তু আফসোসের কথা, তা হয়নি। এর দায় কি মাননীয় সংসদ সদস্যগণ এড়াতে পারবেন? আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি একজন এমপি যদি আন্তরিকভাবে চান তাহলে নিজ এলাকায় এ ধরনের প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়ন সহজেই সম্ভব। শুধু দরকার ঐকান্তিক ইচ্ছা ও নিয়মিত খোঁজ খবর রাখা। অথচ তা করতেও অনেকের সময় হয় না।


দুঃখজনক হলেও সত্যি এখনও দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরকারি চাকরি দেয়ার জন্য এমপিদের নামে টাকা নেয়া হয়। এটা অনেকটা ওপেন সিক্রেট। এই ফেসবুকেই দেখা যায় অনেক ছাত্রলীগের ছেলেদের হতাশাজনক স্ট্যাটাস যারা কিনা টাকার অভাবে চাকরি পায় না। কেন এমপিরা এই অভিযোগের বেড়াজাল ভেদ করতে পারছেন না। চাইলে এই অভিযোগকে অসত্য বলে পাশ কাটিয়ে যাওয়া সহজ। কিন্তু এতে করে ‘মাস পারসেপশন’ তো চেঞ্জ হবে না। মাননীয় এমপিগণ একটাবার ভেবে দেখুন তো আপনার মেয়াদে আপনার এখতিয়ারে থাকা সুযোগ কিংবা সুপারিশ ব্যবহার করে আপনি কতজনকে চাকরির সুযোগ করে দিয়েছেন। একটি ছেলের চাকরির ব্যবস্থা হওয়া মানে একটা ফ্যামিলির চিরস্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা হয়ে যাওয়া। সেই ফ্যামিলিটি আজীবন আপনার এই উপকারের কথা মনে রাখবে। কিন্তু সাময়িক প্রাপ্তির জন্য এই সুযোগটা মিস করলে আখেরে ক্ষতিটা তো আপনারই হলো, তাই না?


রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা থাকবে। কিন্তু সেটা হতে হবে সুস্থ ধারার প্রতিযোগিতা। একজন সাংসদ সদস্য হলেন তার এলাকার রোল মডেল। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, একজন এমপি যে ধারার রাজনীতি করতে চাইবে এলাকায় সেই ধারার রাজনীতিই প্রতিষ্ঠিত হবে। উদাহরণ দিয়ে বলি, একজন এমপির কাছে যদি উনার এলাকার সকল মুক্তিযোদ্ধা যথাযথ সম্মান পান, সকল শিক্ষক যদি যথাযথ সম্মান পান; তাহলে কে তাদের অসম্মান করার সাহস পাবে? যদি কেউ করেও থাকে তাহলে তারাই আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। শীতের সময় দেশের প্রান্তিক মানুষদের অনেককেই কষ্ট করতে হয়। একজন এমপি যদি নিজ উদ্যোগে ২০ হাজার কম্বল বিতরণ করে তাহলে নিজ দল বা অন্যদলের যারা ভবিষ্যতে সেই আসন থেকে এমপি হতে চায় তাদেরকেও তাই করতে হবে অথবা এর বেশি করতে হবে। কেন এমপিরা এই ধরনের সুস্থধারার রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা তৈরি করতে পারছেন না।


আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না একজন এমপির নিজস্ব বৈষয়িক কোনো চাহিদা থাকতে পারে। জীবনে চলার জন্য, নিজের পরিবার পরিজনের ভবিষ্যতের জন্য অর্থসম্পদের প্রয়োজন আছে, এটা সবারই থাকে। যিনি এমপি হন, এমপি পরিচয়ের বাইরেই তার সেই চাহিদা পূরণের সামর্থ্যও থাকে। তাই এমপি পরিচয়কে পুঁজি করে যারা অর্থবিত্তের পেছনে ছুটে তাঁরা নিতান্তই হতভাগা।


দেশে হাজারো কোটিপতি আছেন, সম্পদশালী মানুষ আছেন। অর্থবিত্তের জন্য তাদের নাম ইতিহাসের পাতায় লিখা থাকবে না। অথচ একবার এমপি হওয়া মানে দেশের ইতিহাসের অংশ হয়ে যাওয়া। এর থেকে বড় প্রাপ্তি আর কিইবা হতে পারে? এই প্রাপ্তিলাভের পরেও যারা এটাকে কাজে লাগাতে পারে না তাঁদের চেয়ে দুর্ভাগা আর কেউ হতে পারে না। অতএব, মাননীয় এমপিগণ একবার ভাবুন, আপনি কি চান। বৈষয়িক প্রাপ্তি নাকি ইতিহাসের অংশ হওয়া। আপনি যেমন চাইবেন তেমনটাই পাবেন, এমন সুযোগ কতজনই বা পায়।


একজন এমপি উনার এলাকার জনগণের প্রতিনিধি বৈ অন্যকিছু নয়। এই বোধটা মাননীয় এমপিগণ নানানক্ষেত্রেই ভুলে যান। যে ট্যাক্স ফ্রি গাড়িটা আপনি চালান তার তেলের টাকা আসে এদেশের মানুষের ট্যাক্সের টাকা থেকে। আপনি মানুষের কাছে দায়বদ্ধ, মানুষজন আপনার কাছে না। আপনি এমপি থাকাকালে বিশাল গাড়ি বহর নিয়ে এলাকায় শো ডাউন করতে পারেন, কিন্তু মনে রাখবেন এটা আপনার জনপ্রিয়তা প্রমাণ করবে না। আপনার সদস্যপদ না থাকলে এই গাড়িবহরও থাকবে না। অথচ আপনি নিজ এলাকায় পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়ান, মানুষের কাতারে দাঁড়িয়ে তাদের সুখ দুঃখের সমব্যাথী হোন, সকল সমস্যা সমাধান করতে না পারুন অন্তত তাদের সমস্যা শোনেন, দেখবেন আপনার পিছনে মিছিলের স্রোত হবে। ভালোবাসায় উজাড় করে এর প্রতিদান দিবে আপনার এলাকার মানুষ। বিভিন্ন উৎসব পার্বন আপনি উদযাপন করুন আপনার এলাকার মানুষের সাথে। এলাকার সকল সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করুন। আপনার দুয়ার খুলে দিন সাধারণ মানুষদের জন্য। নিশ্চিত থাকেন সবাই ভাত কাপড়ে জন্য আপনার কাছে আসবে না। আপনি তাদের নেতা, আপনি হাসিমুখে দুটো কথা বললেই হাজারো মানুষের সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবেন।


মাননীয় সংসদ সদস্যগণ, বিশ্ব প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের উত্থান যেমন গৌরবের সেইসাথে কিছুটা আশংকারও বটে। কারণ আমাদের ঘরে বাইরে নিত্যনতুন শত্রু তৈরি হচ্ছে। আপনাদেরকেই সেই শত্রু মোকাবেলায় সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। আপনারা মানুষদের কাছে যাওয়ার সবচেয়ে বেশি সুযোগ পান, তাই সকল বিষয়ে মানুষদের সচেতন করা এবং তাদেরকে দেশ গঠনের কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত করার কাজটা আপনাদেরকেই করতে হবে।


সময়ের সাথে আপনাদেরকে আধুনিক হতে হবে, ডায়নামিক হতে হবে। সেই আধুনিক হবার মানে এই না থার্টি ফার্স্ট উদযাপনের জন্য ব্যাংকক বা পাতায়া যাওয়া। তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে আপনাদের কর্মকাণ্ডের সবকিছুই এখন খুব সহজেই মানুষের পৌঁছে যায়। তাই কোন কিছু করার আগে এটা ভেবে দেখবেন যে সেই কাজটি একজন এমপি হিসাবে কতটা শোভনীয় কিংবা যুক্তিযুক্ত। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো আপনার এলাকার মানুষজন তা কিভাবে নিবে।


১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশের কম উন্নয়ন করেনি। তারপরও ২০০১ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বাজেভাবে হারতে হয়েছিলো। আওয়ামী লীগের অনেক এমপিই তাঁদের সংসদ সদস্যপদ ধরে রাখতে পারেনি। যার খেসারত দিতে হয়েছিলো এই দেশকে। যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িয়ে উঠেছিলো লাখো শহীদের রক্তস্নাত পতাকা।


দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়েছিলো গোটা দেশ। দেশ পিছিয়ে পড়েছিলো কয়েক দশক। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত দুই মেয়াদে আওয়ামীলীগ সরকারই সেই অবস্থার উত্তরণ ঘটিয়েছে। বিশ্বের বুকে আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। এই কষ্টের প্রাপ্তি যেন বেহাত না হয়। কোন অপশক্তি যেন আর বাংলাদেশকে ভোগ দখল না করতে পারে। আর এর জন্যই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে মাননীয় সংসদ সদস্যবৃন্দকেই।


আর দুইবছর পর দেশে জাতীয় নির্বাচন। বর্তমানে স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে সর্বস্তরে আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিরা রয়েছেন। সকল স্তরের জনপ্রতিনিধিদের এক সুতোয় গেঁথে সরকারের সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেয়ার কাজটি করতে হবে এমপিদেরকেই। দুইবছর অনেক সময়। সকল ভুলত্রুটিকে স্বীকার করে নিয়ে এখন থেকেই জনগনের পাশে গিয়ে দাঁড়ালে জনগণ এর প্রতিদান দিবেই।


মাননীয় সংসদ সদস্যগণ, আপনারা সৌভাগ্যবান। দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আপনারা আরোও সৌভাগ্যবান। কারণ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আপনারা কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন যিনি কিনা একটা সুন্দর সুখীসমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য নিত্য কাজ করে যাচ্ছেন।


এরপরেও যদি আপনারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অর্জনকে ধরে রাখতে না পারেন তাহলে ইতিহাসের পাতায় আপনারা ঘৃণিত হিসেবে স্বীকৃত হবেন। মনে রাখবেন আওয়ামী লীগ জিতলে হয়তো আওয়ামী লীগ একা জিতে কিন্তু হারলে পুরো বাংলাদেশ হারে। আপনাদের দোহাই লাগে, আমাদের আর হারতে দিয়েন না। অনেক হারের ক্ষত নিয়ে আমরা ইতিমধ্যেই ক্লান্ত, বাংলাদেশও ক্লান্ত।


বিবার্তা/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com