দুই সপ্তাহের বেশি সময় বাকি থাকলেও আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে উদ্যানের পূর্ব দিকে ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের মঞ্চ ও সাজসজ্জা কমিটির অস্থায়ী কার্যালয় তৈরি করা হয়েছে।
কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে ঝড়ের গতিতে শুরু হয়েছে নবীন-প্রবীণদের দৌড়ঝাপ। তাদের লক্ষ্য একটাই, দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাওয়া। অনেকে আবার পদবীর আশায় হারাম করছেন রাতের ঘুম।
এছাড়া গত কমিটির অনেকেই পদোন্নতির জন্যও উঠেপড়ে লেগেছেন এবং যাতায়াত শুরু করেছেন দলের প্রভাবশালী নেতাদের ব্যক্তিগত অফিস ও বাসায়।
তবে এবারের সম্মেলনে প্রবীণদের পাশাপাশি তরুণদের প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। দলকে আরও গতিশীল এবং ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরির পরিকল্পনা থেকেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
দলটির একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, এবারের সম্মেলনে তরুণ নেতাদের যারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে আছেন, তাদের কেউ কেউ গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে পারেন। পাশাপাশি সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃত্বে থেকে যারা দক্ষতা ও যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন, নতুন মুখ হিসেবে তাদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে টানা হবে। এদের মধ্যে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মোহাম্মদ আবু কাউছার, সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃত্ব এবং যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ঠাঁই পাবেন অনেকেই। বিশেষ করে বিগত কয়েক বছরে ছাত্রলীগ থেকে বেশকিছু নেতা বেরিয়েছেন যারা বর্তমানে কোনো দায়িত্বে না থাকায় দলের কাজে আসতে পারছেন না, তাদের কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরি করতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেয়া হবে।
ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের মধ্য থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে যাদের আসার সম্ভাবনা রয়েছে তারা হলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক শাকিল, সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব সাইফুজ্জামান শিখর, শাহে আলম, ইকবালুর রহীম, অজয় কর খোকন, নজরুল ইসলাম বাবু, ইসাহাক আলী খান পান্না ও বাহাদুর বেপারি।
এছাড়া সরকারের মন্ত্রিসভায় থেকে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন বা সফলতা দেখিয়েছেন এমন কেউ কেউ কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসতে পারেন। মন্ত্রিসভায় থাকা তরুণ নেতাদের মধ্যে নাম শোনা যাচ্ছে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।
বর্তমানে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর দুটি পদ ফাঁকা রয়েছে। তাছাড়া সভাপতিমন্ডলীতে বর্তমানে যারা আছেন, তাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ বাদও পড়তে পারেন। সভাপতিমন্ডলীতে বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খাইরুজ্জামান লিটন এবং খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক আসতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।
এছাড়া দলের সহযোগী সংগঠনের নেতৃত্ব রয়েছেন এমন কয়েকজন নেতাও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসতে পারেন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, হুইপ মাহবুবা আক্তার গিনি, সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইসরাফিল আলম এমপি,মহিলা শ্রমিক লীগের সভাপতি রওশান আরা জাহান, বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে নাহিম রাজ্জাক, প্রয়াত শ্রমিক নেতা আহসানুল্লাহ মাস্টারের ছেলে জাহিদ হাসান রাসেল, শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর মেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক নূজহাত চৌধুরী, উমা চৌধুরী, জামাতুল কিবরিয়া কেয়া, কোহলি কুদ্দুস, মারুফা আক্তার পপি ও শহিদুল্লাহ কায়সারর মেয়ে শমী কায়সারের নামও শোনা যাচ্ছে।
বিবার্তা/বিপ্লব/হুমায়ুন/মৌসুমী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]