শিরোনাম
১০ জানুয়ারির মধ্যে সরকার গঠন হতে পারে: কাদের
প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০১৯, ১৫:৪৩
১০ জানুয়ারির মধ্যে সরকার গঠন হতে পারে: কাদের
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী ১০ জানুয়া‌রি জা‌তির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মু‌জিবুর রহমা‌নের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আগেই ম‌ন্ত্রিসভার শপথ হ‌তে পা‌রে।


তিনি বলেন, আজকালের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট হতে পারে। গেজেট হওয়ার পর এমপিদের শপথ হবে। তারপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করবেন। রাষ্ট্রপতি তাকে বিজয়ী দলের প্রধান হিসেবে সরকার গঠনের আহবান জানাবেন।


তিনি আরো বলেন, আমার মনে হয় এমপিদের শপথ, মন্ত্রীদের শপথ এবং সরকার গঠনসহ সব আনুষ্ঠানিকতা ১০ জানুয়ারির মধ্যেই সম্পন্ন হবে।


রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি।


এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা যদি শপথ না নেন তাহলে সংবিধানের নিয়মানুযায়ী নির্ধারিত সময়ের পর সেসব স্থানে নতুন করে নির্বাচন হবে। তবে এটা নির্বাচন কমিশনের বিষয়। যা কিছু হবে, সেটা নিয়মানুযায়ী হবে।


তিনি বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর তা আর কখনো দেখা যায়নি। এ নির্বাচনের রায়ে ’৭০ ও ’৫৪ সালের মতো গণজোয়ারের প্রতিফলন ঘটেছে।


তিনি আরো বলেন, আমি অবাক হয়েছি যে বিএনপির মতো একটি বড় দলের সাংগঠনিক কনোন কাঠামো নেই। তারা সাংগঠনিকভাবে যে কতটা দুর্বল তা এ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। এজন্য বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীরাও এজেন্ট দিতে পারেননি। তাই নির্বাচনে তাদের ভোটের এমন ফলাফল হয়েছে।


কাদের বলেন, বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ নিজের কেন্দ্রে তার ভোট দিতে যাননি। তার বাড়ি থেকে মাত্র ৭০ গজের মধ্যে ভোট কেন্দ্র। যদিও তিনি তার কেন্দ্রে জয় লাভ করেছেন। বিএনপির প্রার্থীরা কোথাও তাদের পোষ্টার-ব্যানার লাগাননি। তারা নির্বাচনে পরাজয়ের আগেই হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। বাস্তবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার মতো তাদের কোনো প্রস্তুতি ছিল না। তাই এ নির্বাচনে তাদের পরাজয় ছিল অবধারিত।


তিনি বলেন, বিএনপির নেতাদের ভুলের জন্যই নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হয়েছে। মনোনয়ন বাণিজ্য, এজেন্ট দিতে না পারা ও নির্বাচনী প্রচারে অংশ না নেয়া এ ভরাডুবির প্রধান কারণ। তারা নির্বাচনের নামে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নানা নাটক করেছেন।


জাতীয় পার্টির সাথে ঐক্যমতের সরকার হবে না তারা বিরোধীদল হিসেবে থাকবে তা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সরকার গঠনের সময় বিষয়টি দেখবেন। জাতীয় পার্টির সাথে আলাপ-আলোচনা করে এ বিষয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।


বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আন্দোলন কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলনের মতো অবজেকটিভ কন্ডিশন দেশে নেই। আর আন্দোলনে অংশ নেয়ার মতো সাবজেকটিভ প্রিপারেশনও তাদের নেই। আন্দোলনের সকল সূত্র তাদের বিপক্ষে।


তিনি আরো বলেন, বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতাদের এত হতাশ ও বিমর্ষ দেখাচ্ছিল যে মনে হয় যেন তারা নির্বাচনের ভরাডুবিতে ভেঙ্গে পড়েছে। এ অবস্থায় তাদের কর্মীরা কিভাবে আন্দোলন করতে আশাবাদী হবে? আন্দোলন করতে হলে চেতনার দরকার হয়, আর তার সঙ্গে থাকতে হয় সাংগঠনিক প্রস্তুতি। তার কোনটিই বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেই। এ ধরনের সামর্থ্য থাকলে তারা নির্বাচনের ফলাফলের বিরুদ্ধে অন্তত একটি মিছিল হলেও করত। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পরও তারা কোনো ধরনের আন্দোলন করতে পারেনি।


আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কি জানতে চাইলে কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নির্বাচনী ইস্তেহারে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা বাস্তবায়ন করাই বড় চ্যালেঞ্জ।


নতুন বছরে আওয়ামী লীগের অঙ্গীকার কি হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নতুন বছরের অঙ্গীকার হচ্ছে এ নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের যে, ভুল-ভ্রান্তি ও সাংগঠনিক দুর্বলতা বুঝতে পেরেছি তা কাটিয়ে উঠা।


বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখানের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা আশা করি তারা জনগণের রায়কে অসম্মান করবেন না। কারণ যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।


তিনি বলেন, বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট সব সময় গণতন্ত্রবিরোধী ভূমিকা পালন করবে তা দেশের মানুষ যেমন মেনে নেবে না, তেমনি বিশ্বের অন্যান্য নেতারও তা মেনে নেবেন না। আর তারা (বিএনপি) গণতন্ত্র থেকে পিছিয়ে পড়লে দেশ পিছিয়ে যাবে।


নেতা-কর্মীদের প্রতি দলের কি আহবান থাকবে জানতে চাইলে কাদের বলেন, ধৈর্য্য ধরে বিজয়কে ধরে রাখতে হবে। কেউ যাতে কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি না করে ও প্রতিপক্ষের ওপর কোনো ধরনের প্রতিহিংসামূলক কোনো কিছু না করে সে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।


এ সময় তিনি ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ দিন সকাল ৭টায় রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। একই দিন বিকেল ৩টায় ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com