শিরোনাম
সব দলকে সমান অধিকার দিতে হবে: ফখরুল
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০১৮, ২২:৪৬
সব দলকে সমান অধিকার দিতে হবে: ফখরুল
রাজশাহী ব্যুরো
প্রিন্ট অ-অ+

নির্বাচনের মাঠ সব দলের জন্য সমান করার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার রাজশাহীর জনসভায় তিনি বলেছেন, ‘আমাদের কথা খুব স্পষ্ট, নির্বাচনের সমান মাঠ তৈরি করতে হবে, সব দলকে সমান অধিকার দিতে হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তাকে কাজ করতে দিতে হবে। অন্যথায় কোনো নির্বাচন, নির্বাচনের তফসিল গ্রহণযোগ্য হবে না।’


বিকালে মহানগরীর মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন জনগণের রায়ের মধ্যে দিয়েই হবে। সাত দফার দাবি আদায়ে ও গণতন্ত্রের এই আন্দোলনকে সফল করবই করবো, এই শপথ নিতে হবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই তাদের পতন হবে।’


নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে চাইলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দাবি আদায় করতে হবে। জনগণের রায় ও সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’



শারীরিক অসুস্থতার কারণে রাজশাহীর সমাবেশে যোগ দিতে পারেননি প্রধান অতিথি ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। তবে মোবাইল ফোনে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিয়েছেন তিনি।


ড. কামাল বলেন, ‘মানুষের ভোটের অধিকার রক্ষার জন্য বলেছিলাম যে, তফসিল যেন ঘোষণা করা না হয়, পিছিয়ে দেয়া হয়। সবাই যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু সে দাবি না মেনে তরিঘড়ি করে দুই সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন করে ফেলার অপচেষ্টা হচ্ছে। এটা মানুষকে তাদের ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা। এটা সংবিধান পরিপন্থী।’



জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘সংলাপে গিয়েছিলাম, দেশ জাতিকে বাঁচাতে চেয়েছিলাম। বলছি, সংঘর্ষে যাবেন না। আমরা নির্বাচনে আসতে চাই। সংলাপে দাবি করেছিলাম, সংসদ বাতিল করেন, শুনলেন না। তরিঘড়ি করে তফসিল ঘোষণা করে দিলেন। কিন্তু দেশের ৯০ ভাগ ভোটারকে বাদ দিয়ে, সাত দফা না মেনে দেশে নির্বাচন হতে পারে না।’


রব বলেন, ‘দাবি মানতে হবে। জান দেব, দাবি ছাড়ব না। মরতে হলে মরবো, দাবি আদায় করে ছাড়ব (ইনশাল্লাহ)। জনগণ আমাদের পক্ষে, আল্লাহ আমাদের পক্ষে।’



বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে জনজোয়ারে আওয়ামী লীগের নৌকা ভেসে যাবে। আমরা সন্ত্রাস ও সংঘাত এড়ানোর জন্য সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছিলাম। গত দশ বছর ধরে দেশে গণতন্ত্রের সংকট, বিচার বিভাগের সংকট ও আইনের শাসনের সংকট চলছে। মৌলিক অধিকার হারিয়েছে দেশের জনগণ। আমরা এগুলো ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। এ নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দুই দফা সংলাপে বসেছিলাম। আমরা সাত দফা দাবি উত্থাপন করেছিলাম। কিন্তু সেই সংলাপ সফল হয়নি।’


জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আজকের জনসভায় বিএনপির যে পরিমাণ নারী কর্মীর উপস্থিতি রয়েছে, তা যদি আমার দলে থাকতো তাহলে তিন দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়ে ফেলতাম।’



কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে যারা নোংরা রাজনীতি লালন করছে অদূর ভবিষ্যতে তাদের বিচার করা হবে। বিএনপি রাজাকারের গাড়িতে জাতীয় পতাকা দেয়নি, প্রথম পতাকা দিয়েছেন শেখ হাসিনা।’


জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আজকে বাস বন্ধ, যোগাযোগ বন্ধ, তারপরও আপনারা হেঁটে এসেছেন। আপনারা আন্দোলনে আছেন, আপনারা মাঠে থাকেন। আপনাদের বিজয় সুনিশ্চিত।’



বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজনকে আসতে বাধা দেয়া হয়েছে অভিযাোগ করে নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘পুলিশ গাড়ি আটকে দিয়েছে । নাটোর, বগুড়া, রংপুরের গাড়ি আসতে দেওয়া হয়নি। প্রতিহিংসা বন্ধ করে সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। ঐক্যফ্রন্ট যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সরকার সে ফাঁদ পেতেছেন, তা হবে না।’


জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই সমাবেশে প্রথমবারের মত যোগ দেন এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল অলি আহমেদ।



জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়ক ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুর সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মঈন খান, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, লেবার পার্টির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার, নাগরিক ঐক্যের প্রধান উপদেষ্টা এসএম আকরাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, এলডিপি মহাসচিব ড. রেজোয়ান আহমেদ, বিকল্পধারার মহাসচিব শাহ আহমদ বাদল, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক প্রমুখ।


বিবার্তা/হাসান/কামরুল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com