শিরোনাম
‘পেয়েছি সবচেয়ে বড় পরিবার আওয়ামী লীগকে’
প্রকাশ : ৩০ জুন ২০১৮, ১৩:৫৩
‘পেয়েছি সবচেয়ে বড় পরিবার আওয়ামী লীগকে’
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতি ছিল এ দেশের শোষিত বঞ্চিত মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। মানুষ যেন মুক্তি পায় সে জন্য তিনি বছরের পর বছর জেল খেটেছেন।


নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য গ্রামে-গঞ্জে, ঘরে ঘরে গিয়ে সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরতে তৃণমূল নেতাদের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, মানুষ সুখে থাকলে দুঃখের কথা ভুলে যায়। তাই উন্নয়নের কথা তাদের কাছে গিয়ে বলতে হবে। দেশের উন্নয়নে ও জনগণের কল্যাণে আমরা যেসব কর্মসূচি নিয়েছি, সেগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরবেন।


মানুষের কল্যাণে এবং মানুষের জন্য রাজনীতি করতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা’ পড়তে বলেন তিনি।


নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা জাতির পিতার লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও কারাগারের রোজনামচা বইগুলো পড়বেন। এগুলো পড়লেই জানতে পারবেন এদেশের স্বাধীনতা ও মানুষের কল্যাণ এবং সমৃদ্ধ সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে জাতির পিতার চিন্তা-ভাবনার কথা।


শনিবার দুপুরে গণভবনে আয়োজিত দলের বর্ধিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বর্ধিত সভার আজ দ্বিতীয় পর্যায় চলছে। এ পর্যায়ে উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন।


শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার এদেশের মানুষের জন্য আজীবন কাজ করেছেন। অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছেন মানুষ ও দেশের কল্যাণে। তার আদর্শে গড়ে ওঠে দেশের কল্যাণে আপনাদেরও কাজ করতে হবে। তবেই তার লক্ষ্য সোনার বাংলা গড়ে ওঠা সম্ভব হবে।


আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মানুষ দল ত্যাগ করে মন্ত্রিত্বের জন্য কিন্তু জাতির পিতা মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দলকে গড়ে তুলেছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করেছিলেন মানুষকে ভালোবেসে। বাংলাদেশের মানুষ এ পর্যন্ত যা পেয়েছে, তা রক্ত দিয়ে অর্জন করতে হয়েছে। শুরু থেকেই পাকিস্তানিরা এখানকার মানুষকে অত্যাচার নির্যাতন করেছে, বঞ্চিত করেছে।


প্রধানমন্ত্রী যখন স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসের কথা তুলে ধরছিলেন তখন তিনি ৭৫-এর নৃশংস খুনের কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। ওই হত্যাকাণ্ডের পর তিনি ৩২ নম্বরের নিজ বাড়িতেও যেতে পারেননি বলে উল্লেখ করতে গিয়েই কেঁদে ফেলেন। এসময় কিছু সময়ের জন্য সভায় নীরবতার সৃষ্টি হয়। তখন আওয়ামী লীগ নেতাদের স্লোগানের পর আবারো বক্তব্য শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী।


তিনি বলেন, আমার পরিবার বিশাল পরিবার। আমার পরিবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের পরিবার। তার এমন বক্তব্যের পর সভাস্থলে উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতারা হাততালি দিয়ে তাকে সমর্থন জানান।


শেখ হাসিনা বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগকে আরো সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে হবে। জনসমর্থনও বাড়ানো দরকার। আমরা দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করি। কোনোরকম দলীয় কোন্দল যেন না থাকে সেদিকে খেয়াল রেখে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যেখানে যেখানে সমস্যা আছে, তা দ্রুত মিটিয়ে ফেলা প্রয়োজন।


ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সারাদেশে গৃহহীনদের জন্য সরকার ঘর করে দেয়ার যে উদ্যোগ হাতে নিয়েছে ও যে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে, তা যেন তাদের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছায়।


একইসঙ্গে বিধবা ও বয়স্কসহ যেসব ভাতা দেয়া হয় সেগুলোতে যেন অনিয়ম না হয় সেদিকে সজাগ থাকতেও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও চেয়ারম্যানদের অনুরোধ করেন তিনি।


গ্রামীণ উন্নয়নে বাজেটের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা গ্রামের রাস্তাঘাটের উন্নয়নে বাজেট দিচ্ছি, টাকা-পয়সা ছাড় দিচ্ছি। সেখানে যেন কোনও দুর্নীতি না হয় সে বিষয়ে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিটি টাকা যথাযথভাবে ব্যয়ের মাধ্যমে আপনারা নিজেদের এলাকার উন্নয়ন করবেন, আমি এটাই চাই।


প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসন ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ওই সময়ই ঋণ খেলাপি কালচার সৃষ্টি করেছে তারা। বিভিন্ন সময় ১৯টি ক্যু হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রায় শেষ করে দেয়া হয়েছিল। বিমান বাহিনীর অফিসার-সৈনিকদের হত্যা করা হয়েছে। একের পর এক ক্যু হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কারাগারে নিক্ষেপ করে নানা ধরনের নির্যাতন করা হয়েছে।


দেশে ফিরে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার কথা জানিয়ে দলটির সভাপতি বলেন, সবাইকে রেখে বিদেশে গেলেও ফিরতে হয়েছে রিক্ত হাতে। কিন্তু দেশের মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। পেয়েছি সবচেয়ে বড় পরিবার আওয়ামী লীগকে।


বিএনপি ও জামায়াত জোটের সমালোচনা করেন তিনি বলেন, আমরা সেনা ছাউনি থেকে বাংলাদেশের মানুষকে গণতন্ত্র এনে দিয়েছি। পুরো রাজনীতিকে কলুষিত করে দিয়েছে তারা।


অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। অনুষ্ঠানের শুরুতে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ।


সভায় আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধীন প্রতিটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত দলীয় চেয়ারম্যান, মহানগরের অধীন সংগঠনের প্রতিটি ওয়ার্ডের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও দলীয় নির্বাচিত কাউন্সিলার এবং জেলা পরিষদের নির্বাচিত দলীয় সদস্যরা উপস্থিত আছেন।


একইভাবে আগামী ৭ জুলাই ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর ও খুলনা বিভাগের নেতাদের সঙ্গে বিশেষ বর্ধিত সভা করা হবে।


বিবার্তা/জাকিয়া


>>আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা আজ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com