শিরোনাম
‘কারাগারে মোমবাতি ও হাতপাখা দিয়ে কাজ চালাতে হয়’
প্রকাশ : ৩০ মে ২০১৮, ১৫:৪৯
‘কারাগারে মোমবাতি ও হাতপাখা দিয়ে কাজ চালাতে হয়’
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, কারাবন্দী খালেদা জিয়াকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরোনো যে কারাগারে রাখা হয়েছে, সেখানে প্রায়ই বিদ্যুৎ থাকে না এবং সেখানে জেনারেটর নেই, বাতি জ্বলে না ও বৈদ্যুতিক পাখা কাজ করে না।


তিনি বলেন, পরিত্যক্ত এই কারাগারে এখন কোনো জেনারেটর নেই; প্রায়ই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। বাতি জ্বলে না, মোমবাতি ও হাতপাখা দিয়ে কাজ চালাতে হয়। এই যে অমানবিকতা, এই যে হৃদয়হীনতা- এটার তুলনা নেই!


রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কার্যালয়ে বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব অভিযোগ করেন।


চেয়ারপারসনের শারিরীক অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কারাগারের স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ, বিশুদ্ধ পানির অভাব, গুমোট আবহাওয়া ও নিয়মিত বিদ্যুৎহীনতার কারণে দেশনেত্রীর শ্বাসকষ্ট ও জ্বর লেগেই আছে। প্রতি রাতে তার জ্বর আসছে। এটা যে কোনো সুস্থ মানুষের জন্য অত্যন্ত এলার্মিং।


তিনি বলেন, কারাগারে এখন কোনো জেনারেটর নেই। আমরা যখন ছিলাম, তখন শক্তিশালী জেনারেটর ছিল। তখন দেখতাম, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কখনো বিদ্যুৎ যায় না। এখন জেনারেটর নেই। প্রায়ই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে।


তিনি আরো বলেন, তার (খালেদা জিয়া) রান্না যে হয়, সেই রান্নার কোয়ালিটি অত্যন্ত খারাপ হয়ে গেছে। বাইরে থেকে, তার পরিবারের থেকে, তার বাসা থেকে খাবার নিতে দেয়া হচ্ছে না।


মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বারবার বলেছি, সাধারণ যে নিয়ম আছে, যারা ডিভিশনপ্রাপ্ত, তারা নিজের খরচে অনেক কিছুই নিয়ে আসতে পারে। এটা আমরাও ভোগ করেছি। কিন্তু খালেদা জিয়াকে কোনো সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। এই সুযোগগুলো না দেয়ার কারণে তিনি সারা জীবনে যেটায় অভ্যস্ত, মিনিমামটুকু সেখানে পাচ্ছেন না।


খালেদা জিয়ার স্বজনেরা মঙ্গলবার তার সঙ্গে দেখা করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, স্বজনেরা দেখেছেন, খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। এই অসুস্থতা এমন পর্যায়ে গেছে যে তিনি ঠিকমতো হাঁটতে পারছেন না। আমরা আগে জানিয়েছিলাম, ওনার বাঁ হাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিউরো প্রবলেম আগের চেয়ে অনেক গুণ বেড়ে গেছে। আগে থেকেই তিনি নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। ২০ বছর আগে তার দুই হাঁটু প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। দুই চোখে অপারেশন করা হয়েছে। এসব সমস্যার মধ্যে কারাগারে গিয়ে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের সেবা থেকে তিনি বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ছাড়া চিকিৎসকেরা তাকে যে পিজিওথেরাপির পরামর্শ দিয়েছেন, তা তিনি পাচ্ছেন না।


তিনি আরো বলেন, এখনই জরুরিভাবে তার রক্ত পরীক্ষা করা দরকার। বিশেষায়িত এমআরআই করা দরকার। তার সঠিক চিকিৎসা প্রয়োজন। আমরা মনে করি, কোনো কাল বিলম্ব না করে অবিলম্বে তাকে বিশেষায়িত হাসপাতালে, আমরা বলেছিলাম গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।


খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, মূল মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন হয়ে গেছে। সেই জামিন ঠেকানোর জন্য সরকার সর্বোচ্চ আদালতে গেছে। তারপর জামিন পাওয়ার পর একটার পর একটা মিথ্যা মামলা সামনে নিয়ে আসছে। তিনি যেন বেরোতে না পারেন, সেই ব্যবস্থা তারা নিশ্চিত করতে চাইছে। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে সরকার কারাগারে আটক রাখতে চাচ্ছে।


সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল খান, সহদফর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ।


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com