বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন আগামী ১১ ও ১২মে অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটির নেতৃত্বে কারা আসছেন, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে সব মহলে। ইতোমধ্যে সম্মেলনকে ঘিরে পদপ্রত্যাশীদের মাঝে উত্তাপ বিরাজ করছে। সবাই যার যার অবস্থান থেকে আওয়ামী লীগ হাইকমান্ডের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন।
এদিকে এবারের সম্মেলনে নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নারীরা উঠে আসবেন বলেও আভাস পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, এই প্রথমবারের মতো ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বে আসতে পারে কোনো নারী। আর এজন্য সম্মেলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড বেশকিছু নারীর ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। মেধা, যোগ্যতা, উদ্যোমী, কর্মী-বান্ধব, আস্থাভাজন নেতৃত্ব গুণসম্পন্ন নারীরা এক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবেন বলে সূত্র জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত দীর্ঘ ৭০ বছরের ইতিহাসে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বে কোনো নারী আসেনি। তবে ২০০২ সালের সম্মেলনে সংগঠনটির সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন বর্তমানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মারুফা আকতার পপি। সেইবার লিয়াকত শিকদার ও নজরুল ইসলাস বাবু কারাগারে বসে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। দীর্ঘদিন তারা কারাগারে ছিলেন। সে সময় সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন মারুফা আকতার পপি। আর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী সাইফুজ্জামান শিখর। পপি ও শিখরের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী ছিল। বিরোধ ও কোন্দল খুব একটা ছিল না। রাজপথে সংগঠনটি সাহসী ভূমিকা পালন করেছিল। সংগঠনটির বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজিসহ নেতিবাচক কোনো অভিযোগ ছিল না। এমন মন্তব্য করেছেন ছাত্রলীগের সাবেক কয়েকজন নেতা।
বিএম লিপি আক্তার, বেনজির হোসেন নিশি ও শেখ মারুফা নাবিলা
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পদপ্রত্যাশী এক ছাত্রলীগ নেত্রী বিবার্তাকে বলেন, “ছাত্রলীগ যেহেতু বৃহৎ সংগঠন। এখানে নারীদের অংশগ্রহণও বেশি। এখানে ছেলে-মেয়ে কেউ আলাদা করে দেখে না। এখানে যে যোগ্য এবং আন্তরিক তাকেই নেতৃত্বে আনা উচিত।
এ নেত্রী আরো বলেন, নারীরা এখন পিছিয়ে নেই। যোগ্যতা দিয়েই নারীরা এগিয়ে চলেছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলের নেতা, স্পিকার পদে নারীরা রয়েছেন। তারা সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আলোচনায় উঠে আসা নারী ছাত্রলীগ নেত্রীর মধ্যে রয়েছেন বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি চৈতালী হালদার চৈতী। তার গ্রামের বাড়ি খুলনা অঞ্চলে। আলোচনায় আছেন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও শামসুন নাহার হলের সাবেক সভাপতি নিশীতা ইকবাল নদী। বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের মেয়ে অর্না জামানও আলোচনায় রয়েছেন। এছাড়াও আছেন রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির উপ আন্তর্জাতিক সম্পাদক ইশাত কাসফিয়া ইরা। তিনি কিশোরগঞ্জ অঞ্চল থেকে উঠে এসেছেন। উপ অর্থ সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদারও আলোচনায় রয়েছেন।
এছাড়া আলোচনায় আছেন রোকেয়া হল শাখার বর্তমান সভাপতি বিএম লিপি আক্তার, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা হল ছাত্রলীগের সভাপতি বেনজীর হোসেন নিশি, কেন্দ্রীয় কমিটির উপ পরিবেশ সম্পাদক শেখ মারুফা নাবিলা।
তবে শেষ পর্যন্ত নারীরা কি শীর্ষ নেতৃত্বে আসছেন, কি আসছেন না, তা জানার জন্য আগামী ১২মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
বিবার্তা/রাসেল/মৌসুমী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]