চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিমের মারপিটের একটি ভিডিও বৃহস্পতিবার ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ২০ লাখ টাকা চাঁদা না দেয়ায় তিনি একটি কোচিং সেন্টারের মালিককে মারপিট করেছেন বলে এদিন সন্ধ্যায় বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে খবরও প্রকাশিত হয়।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেন নুরুল আজিম। তবে একইসাথে এক বিবৃতিতে তিনি দাবি করেছেন, বিষয়টি চাঁদাবাজির নয়। বরং ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে অংশীদারের সাথে তিনি বিবাদে জড়িয়েছিলেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ের একটি কোচিং সেন্টারের পরিচালক রাশেদ মিয়াকে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিমের চড় থাপ্পর মারছেন। ভিডিও চিত্রটি গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলের। ওই দিন বিকেল ৫টা ২৬ মিনিট থেকে ৩২ মিনিট পর্যন্ত ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, রাশেদ মিয়া কোচিং সেন্টারে তার কার্যালয়ে বসে আছেন। সেখানে ঢুকে নুরুল আজিম উত্তেজিত হয়ে যান। একপর্যায়ে রাশেদ মিয়ার চুল ধরে টানাহ্যাঁচড়া করতে থাকেন। এরপর চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন। এ সময় হাত জোড় করে ছিলেন রাশেদ মিয়া।
বৃহস্পতিবার নগরের পাঁচলাইশ থানায় নুরুল আজিমসহ ছাত্রলীগের আরেক কর্মীর নাম উল্লেখ করে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ করেন কোচিং সেন্টারের পরিচালক রাশেদ মিয়া। অভিযোগে অজ্ঞাতপরিচয় আরো সাত-আটজন জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, নুরুল আজিম ইউনিভার্সিটি অ্যাডমিশন কোচিং সেন্টারে প্রায়ই আসা-যাওয়া করতেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি জিইসি মোড়ে ওই কোচিং সেন্টারে গিয়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি। না দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এরপর ১৩ এপ্রিল নগরের মুরাদপুরের মোহাম্মদপুর এলাকায় রাশেদকে একা পেয়ে মারধর করেন নুরুল আজিম ও ছাত্রলীগ কর্মী নোমান চৌধুরী। এ সময় তাঁরা ২০ লাখ টাকা চাঁদা চান। টাকা নেই জানানো হলে নুরুল আজিমের নির্দেশে নোমান চৌধুরী সুগন্ধা আবাসিক এলাকার বাসায় গিয়ে রাশেদের স্ত্রীর পাসপোর্টসহ ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে যান। বাকি টাকা না দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
তবে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের প্যাডে দেয়া বিবৃতিতে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে নুরুল আজিম বলেছেন, অভিযোগকারী রাশেদ তার ব্যবসায়িক অংশীদার। তাকে ব্যবসা করার জন্য সাড়ে নয় লাখ টাকা দিয়েছেন। এই পাওনা টাকা চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে রাশেদ কাহিনী সাজিয়েছেন। পাওনা টাকার জন্যই সেদিন তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। দুই মাস আগের ভিডিও ফুটেজ নিয়ে বিষয়টিকে এখন ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা চলছে।
এদিকে পদত্যাগপত্রে নুরুল আজিম ব্যক্তিগত কারণে সংগঠন থেকে অব্যাহতি নিচ্ছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
পাঁচলাইশ থানার ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির জন্য থানায় একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। এখনো মামলা হিসেবে নেয়া হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
বিবার্তা/কাফী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]