
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় দুই সমর্থককে বহিষ্কার করেছে জামায়াতে ইসলামী।
রবিবার (২২ ডিসেম্বর) বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এবং এ ঘটনায় দলটির কর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগের মধ্যে দুজন সমর্থককে বহিষ্কারের কথা জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
২৩ ডিসেম্বর, সোমবার রাতে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা শাখার আমির মু. শাহজাহান, সেক্রেটারি সরওয়ার উদ্দিন ছিদ্দিকী এবং চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আমির মু. মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি মু. বেলাল হোসাইনের যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বহিষ্কৃত সমর্থকরা হলেন- উপজেলার কুলিয়ারা গ্রামের মৃত আবদুল বারেকের ছেলে মু. আবুল হাশেম এবং মৃত শফিকুর রহমানের ছেলে মু. অহিদুর রহমান।
রোববার আবদুল হাই কানুর গলায় জুতার মালা পরিয়ে তাকে সারা গ্রাম ঘুরিয়ে লাঞ্ছিত করে একদল লোক। তারা ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। সন্ধ্যার পর ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়।
এক মিনিট ৪৭ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে দেখা যায়, দুই ব্যক্তি জুতার মালা পরা অবস্থায় কানুকে টানাহেঁচড়া করছেন। এ সময় কানু বারবার তাকে ছেড়ে দেওয়ার আকুতি জানাচ্ছিলেন।
কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবদুল হাই কানু সংগঠনের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা কমিটির সাবেক সহসভাপতি। তিনি ঘটনাস্থলের পাশের লুদিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা।
এ ঘটনার জন্য মুক্তিযোদ্ধা কানুর পরিবার স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর সদস্যদের দায়ী করলেও দলটি নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে।
এর মধ্যে সোমবার মুক্তিযোদ্ধার ছেলে গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া বিপ্লব সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “কুলিয়ারা গ্রামের আব্দুল বারিকের ছেলে জামায়াত সমর্থক আবুল হাশেম মজুমদারের নেতৃত্বে আমার বাবাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। ওখানে যারা ছিল সবাই জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী।”
জামায়াতে ইসলামী যে দুজনকে বহিষ্কার করেছে তার মধ্যে আবুল হাসেম রয়েছেন।
দলটির পক্ষ থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে লাঞ্ছনার ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ বর্ণনা করে নেতারা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বলেছেন, “মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। জামায়াতে ইসলামী শুধু বীর মুক্তিযোদ্ধা নয়, দেশের সাধারণ কোনো নাগরিককেও হেনস্তা করা সমর্থন করে না। এই দুঃখজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের হাতে সোপর্দ করার জন্য আমরা সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।”
নেতারা বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা জামায়াতে ইসলামীর কোনো পর্যায়ের নেতা বা কর্মী নয়। জামায়াতে ইসলামীর কোনো পর্যায়ের নেতা বা কর্মী আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কোনোভাবেই সমর্থন করে না এবং প্রশ্রয় দেয় না।
“আমরা স্থানীয়ভাবে খোঁজ-খবর নিয়ে জেনেছি, লাঞ্ছিত হওয়া আবদুল হাই কানু তার নিজ এলাকায় হত্যা মামলাসহ নয়টি মামলার আসামি। আমরা মনে করি, এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারো নেই।”
জামায়াতে ইসলামীর নেতারা বলেন, “এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের শাস্তি দাবি করছি এবং জামায়াতে ইসলামীর শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও ভাব-মর্যাদার ক্ষুণ্ন করায় সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও তাদের জামায়াতে ইসলামী থেকে বহিষ্কার ঘোষণা করছি।”
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]