রাজপথে ছিলাম, আছি, থাকব: এডভোকেট সানজিদা খানম
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৪, ২২:২৯
রাজপথে ছিলাম, আছি, থাকব: এডভোকেট সানজিদা খানম
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

আমি ঘরে বসে বসে সংসদ সদস্য হইনি, আপনাদের সাথে রাজপথে আন্দোলন করতে করতে সংসদে এসেছি। আমি রাজপথে ছিলাম, আছি, থাকব। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যে সম্মান ঢাকা-৪ আসনের মানুষদের দিয়েছেন আমাকে হুইপ করে, বাংলাদেশের পতাকা দিয়ে- সেই সম্মান আমাদের ধরে রাখতে হবে।


২৫ জুলাই, বৃহস্পতিবার নিজ নির্বাচনি এলাকা ঢাকা-৪ পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য এডভোকেট সানজিদা খানম এমপি ।



কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ সারাদেশে বিএনপি জামাতের সন্ত্রাসীরা তাণ্ডব চালিয়েছে। একইভাবে ঢাকা-৪ আসনেও তাণ্ডব চালানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে শ্যামপুর-কদমতলীর নেতৃবৃন্দের খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিতে পরিদর্শনে যান তিনি।


হুইপ বলেন, ঢাকা-৪ নির্বাচনি এলাকায় কোনো অপশক্তি মাথাচড়া দিয়ে উঠতে পারেনি। ঘটনার প্রথম দিন দুষ্কৃতিকারীরা দল-বল নিয়ে রেলগেইট অবরোধ করতে এসেছিল, প্রথম দিনই আমরা সেই অপশক্তিকে রুখে দিয়েছি। আমাদের আওয়ামী লীগের লোকজন- স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।



তিনি বলেন, আমার রাজনৈতিক জীবনে পুলিশ প্রশাসনকে এত অসহায় হতে দেখিনি, এমন অবস্থা করেছে দুষ্কৃতিকারীরা। তাদের টার্গেট হচ্ছে পুলিশ প্রশাসন, সরকারি স্থাপনা আর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। তারা সরকারের বড় বড় স্থাপনা, সরকারি গাড়ি পুড়িয়ে সরকারের এবং দেশের মানুষের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে।


তাদের ক্ষোভ পদ্মা সেতু কেন হলো? দেশের সাধারণ মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারছে, মানুষ সুখে আছে- এইজন্য সেতু ভবন পুড়িয়ে দিয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ে কেন হলো? শেখ হাসিনা এক্সপ্রেসওয়ে কেন করল? এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে মানুষ কত সহজে যাতায়াত করছে তা সন্ত্রাসীদের সহ্য হচ্ছে না, তাই এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিলো। মেট্রোরেলের মিরপুর ১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীরা। এতে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে মিরপুর-১০ স্টেশনের ই-সিস্টেমের পুরোটাই ধ্বংস হয়ে গেছে। এ সিস্টেম পুনরায় সচল করতে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা লাগতে পারে। কাজীপাড়া স্টেশনের ই-সিস্টেম অর্ধেকের বেশি নষ্ট হয়ে গেছে। এই স্টেশনের ই-সিস্টেম ঠিক হতেও ১০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। ই-সিস্টেম ছাড়াও দুই স্টেশনে থাকা পাঞ্চ মেশিন, ভেন্ডিং মেশিন, বিভিন্ন ডিভাইস, কম্পিউটারসহ আরও যে সব জিনিসপত্রের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাও ঠিক করতে প্রায় ২০০ কোটি টাকা লেগে যেতে পারে।


তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের মানুষ প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে বাঁচে। ভৌগোলিক কারণে আমাদের দেশে ঝড়, বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড় এগুলো আসবেই। এগুলো মোকাবেলা করার জন্য আমাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় রয়েছে। এই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের যে গাড়ি দিয়ে সারা বাংলাদেশে ত্রাণ ও সাহায্য পৌঁছানো হয় সেইসব গাড়ি, অফিস বিল্ডিং সব জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।



সানজিদা খানম বলেন, এই অপশক্তি ৭১’এও বিটিভিতে ঢুকতে পারে নাই। সেই বিটিভি এবার দুর্বৃত্তদের হামলায় আক্রান্ত হয়েছে। তারা বিটিভি পুড়িয়ে দিল, ভাঙচুর করল।


তাদের লক্ষ্য পুলিশ। কারণ এই ১৫ বছর ধরে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষা করেছে পুলিশ। তারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাধারণ মানুষকে আগলে রাখছে। সেই পুলিশের প্রতি তাদের এত ক্ষোভ। অন ডিউটিতে তারা পুলিশকে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ ফুটওভার ব্রিজে ঝুলিয়ে রেখেছে বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীরা। এটি ৭১’ এ যে নরপিশাচরা হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, খুন-ধর্ষণ করেছিল- তাদেরই প্রতিচ্ছবি।


কোটা আন্দোলনের ছাত্রদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে বিএনপি জামাত অপশক্তি এইসব ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা আওয়ামী লীগের অফিসে আগুন দিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য কি? তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, আওয়ামী লীগ এই দেশটাকে সুন্দর চালাচ্ছে- তাই আওয়ামী লীগ যারা করে তাদের অফিস পুড়িয়ে দেওয়া, তাদেরকে হত্যা করা।



তিনি বলেন, আমরা কিন্তু সাধারণ ছাত্রদের বিপক্ষে না। সাধারণ ছাত্রদের যে দাবি আওয়ামী লীগেরও একই দাবি এটি তাদের বোঝা উচিত ছিল। ছাত্রদেরকে ব্যবহার করে আজকে দেশে যে হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে- এটি রিকভারি করতে প্রচুর সময়ের প্রয়োজন হবে। আমাদেরকে তারা ৫ বছর পিছিয়ে দিলো। উন্নয়নের যে মহাসড়কে আমরা উঠেছিলাম সেই উন্নয়নের ধারাকে স্তব্ধ করার জন্য, বন্ধ করার জন্য তাদের এই পরিকল্পনা।


বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ বলেন, এই দেশ জাতির পিতা আমাদেরকে দিয়ে গেছেন, শেখ হাসিনাকে রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আজকে শেখ হাসিনার সততা, দক্ষতা এবং দূরদর্শিতার কারণে আমরা এই যাত্রায় বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বেঁচে গিয়েছি। এই ক্রেডিট সম্পূর্ণ জাতির পিতার কন্যার।



বিএনপি’র সাহস কম, তারা চোরাগোপ্তা হামলা করে পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এলাকায় যারা জঙ্গি আছে, তাদের লিস্ট করে প্রশাসনের কাছে দিন এবং এলাকা জঙ্গিমুক্ত করুন। নইলে আমাদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তারা হামলা করবে। সবকিছুর লিস্ট হচ্ছে, এই অপকর্মের সাথে যারা জড়িত, এই এলাকা থেকে অন্য এলাকায় গিয়ে যারা সন্ত্রাসী করেছে, সরকারি স্থাপনা, জান-মালের ক্ষতি করেছে তাদের ছাড়া হবে না। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।


সবাই একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করলে আমাদেরকে কেউ হারাতে পারবেনা উল্লেখ করে এডভোকেট সানজিদা খানম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রতিনিধি হিসেবে, ঢাকা-৪ নির্বাচনি এলাকার দায়িত্বে থাকাকালীন আমি বেঁচে থাকা অবস্থায় ঢাকা-৪ নির্বাচনি এলাকায় কোনো অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না।


বিবার্তা/মোবারক/এইচআর/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com