
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণার ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো গঠিত হয়নি নতুন কমিটি। গত বছর ৬ মার্চ কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা করে এর ৭ মাস পর কর্মীসভার আয়োজন করা হলেও এখনো ঘোষণা আসেনি নতুন কমিটির। কবে নাগাদ আসতে পারে, সে বিষয়েও কারো সঠিক ধারণা নেই।
গত বছর ৯ অক্টোবর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের নির্দেশনায় কর্মীসভা আয়োজন শেষে পদ-প্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত নেওয়া হয়। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর জাতীয় নির্বাচনের আগে কমিটি না দেওয়ার কারণ দর্শায় কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়করা। কিন্তু নির্বাচন সম্পন্ন হয়ে সরকার গঠন হলেও গঠিত হয়নি কুবি শাখা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি।
এদিকে দলীয় অন্তর্কোন্দল ও অনিশ্চয়তায় ক্যাম্পাস ছেড়েছেন অনেকে। জাতীয় কর্মসূচি ব্যতীত পদপ্রত্যাশীদের দেখা মিলছে না ক্যাম্পাসে। একটা গুমোট অবস্থা বিরাজ করছে নেতাকর্মীদের মাঝে।
এই বিষয়ে কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসান পলাশ বিবার্তাকে বলেন, 'কর্মীসভার পরপরই কমিটির ব্যাপারে আশা ছিল। কিন্তু জাতীয় নির্বাচন ইস্যুকে কেন্দ্র করে তা পিছিয়ে যায়। সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ায় কমিটির ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। বর্তমান তরুণ নেতাদের কথা বিবেচনা করে হলেও শীঘ্রই কমিটি দেওয়া দরকার। যদি কোনো কারণে কমিটি আরো পিছিয়ে যায়, তাহলে একটা প্রজন্ম ছাত্রলীগের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। ফলে অনেকেই ছাত্র রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে। আমরা চাই বর্তমান স্মার্ট তরুণ নেতৃত্বের সমন্বয়ের একটা স্মার্ট নেতৃত্ব গড়ে উঠুক।'
ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ বিবার্তাকে জানান, 'আশা করি খুব শীঘ্রই কমিটি আসবে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই কমিটি নিয়ে আগ্রহী। কারণ ছাত্রলীগ সবসময়ই ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ করে। কমিটির দিনের পর দিন এভাবে পেছানো আসলেই হতাশাজনক। কেন্দ্রীয় কমিটি অতিদ্রুত আশা করি এই বিষয়টি দেখবে। আমরা চাই শীঘ্রই কমিটি আসুক।'
কুবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-এলাহী বিবার্তাকে বলেন, 'ক্যাম্পাস রাজনীতির জন্য কমিটি প্রয়োজন। দীর্ঘদিন কমিটি না থাকায় অনেকেই পরিচয়হীন রাজনীতি করে আসছে। কমিটি হলে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজনীতি করতে পারবে। তখন একটা উৎসবমুখর পরিবেশ থাকবে ক্যাম্পাসে। আর কমিটির ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। নির্বাচন শেষ হয়েছে। আশা করি কমিটি শীঘ্রই আসবে।'
ফয়জুন্নেসা চৌধুরাণি হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইসরাত জাহান জেরীন বিবার্তাকে বলেন, 'প্রত্যেকেই প্রত্যাশা নিয়ে কাজ করে- যেন সেটার একটা স্বীকৃতি পায়। সেজন্য সবাই-ই কমিটি প্রত্যাশা করে। কমিটি বিলুপ্তির ১০ মাস হয়ে গেছে। এর আগের কমিটিরও ৬ বছরের মত ছিল। এখানে নেতৃত্বের একটা বিশাল গ্যাপ তৈরি হয়েছে। সেখানে এখন যদি কমিটি না আসে, তাহলে আমি জানি না- আসলে কি হবে। নির্বাচন শেষ হয়েছে, কমিটি দ্রুতই আসবে বলে আশাবাদী।'
সার্বিক বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বিবার্তাকে বলেন, 'আমরা অতিদ্রুত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি প্রদান করে সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধি করব।'
উল্লেখ্য, গত বছরের ৬ মার্চ সাংগঠনিক নিষ্ক্রিয়তা, শৃংঙ্খলাহীনতা, গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কার্যকলাপে সম্পৃক্ততায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি (ইলিয়াস-মাজেদ) বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনায় ৯ অক্টোবর কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিবার্তা/প্রসেনজিত/রোমেল/এমজে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]