শিরোনাম
আ.লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষের কষ্ট বাড়বে: ফখরুল
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২১, ১৮:১১
আ.লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষের কষ্ট বাড়বে: ফখরুল
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, ততদিন দেশের মানুষ আরো বেশি কষ্ট পাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।


তিনি বলেন, আজকে ডান, বাম সবাইকে এক হয়ে এই দানব সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।


মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘সৈনিক জীবন থেকে রাষ্ট্রনায়ক জিয়া’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় ফখরুল আরো বলেন, শহীদ জিয়ার ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়। আজকে তাকে স্মরণে রাখতেই প্রতিষ্ঠিত হয় জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন। গত ২২ বছরে জেডআরএফ অসংখ্য জনকল্যাণমূলক কাজ করেছে। প্রথমে কমল নামে ধানের বীজ উৎপাদন ও বিতরণ করা হয়। বন্যার্তদের মাঝে নানাভাবে সহায়তা করা হয়। ১/১১ এর পট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে জেডআরএফের কর্মকাণ্ড পরিচালনার ধরণ পরিবর্তন হয়। আমি মনে করি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে আরো বেশি করে স্মরণে রাখতে ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মেধাবী চিকিতসক, প্রকৌশলী ও কৃষিবিদদের পুরস্কার তথা মেধাবৃত্তি চালু করা উচিত। জিয়াউর রহমানকে জানতে হলে তাকে নিয়ে লেখা বইগুলো পড়তে হবে। কেননা জিয়া ছিলেন ক্ষণজন্মা পুরুষ।


বিএনপি মহাসচিব বলেন, ৭১ সালে শহীদ জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা দেশবাসীকে বিদ্যুতের মতো শক করেছিলো। তার স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্যদিয়ে দেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। এটা নিয়ে বিতর্কের কোনো সুযোগ নেই। যা নির্ধারিত। দেশের যতজন মানুষ জিয়াউর রহমানকে নিয়ে বই লিখেছেন সবকটি বইয়ের মধ্যে তাকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা হয়েছে।


তিনি বলেন, শহীদ জিয়া আমাদেরকে একটি নতুন পরিচিত দিয়ে গেছেন। তার বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ঘোষণার মাধ্যমে। তাকে যখন হত্যার পর সবাই ভেবেছিল সবকিছু যেন শেষ। কিন্তু না। তার জানাজায় এতো পরিমাণ লোক শামিল হয়েছিলো যা আর বিশ্বের কোথাও হয়েছে বলে জানা নেই। যারা শহীদ জিয়াকে কটাক্ষ করে, তাকে খাটো এবং হেয় করার চেষ্টা করে তারা মূলত দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না।


মির্জা ফখরুল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম তার লেখা বইয়ে বলেছেন, যদি জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ড ৮১ তে না হয়ে ৭৫ এ হতো তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা হতো আফগানিস্তানের চেয়ে ভয়াবহ! সেসময় রক্ষীবাহিনীর নির্যাতন মাত্রা ছাড়িয়ে গেছিলো। ৪০ হাজার তরুণ কিশোরকে হত্যা করা হয়েছে সে সময়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তারা সামাল দিতে না পেরে দেশে একদলীয় বাকশাল শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছিলো।


বিএনপি মহাসচিব বলেন, পরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসন বাতিল করে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু দুঃখজনক যে তাকে আমরা অতি অল্প সময়ের মধ্যেই হারিয়েছি। তিনি তো কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন। দেশকে উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্য দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছিলেন। দেশের স্বাক্ষরতা হার বৃদ্ধি, মহিলাদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করেন। আজকে দেশের উন্নয়নের কথা বলা হয়। কিন্তু দেশের সকল উন্নয়নের ভিত রচনা করেছেন শহীদ জিয়া।


অনুষ্ঠানে গয়শ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাজনীতিবিদরা যেখানে ব্যর্থ সেখানে জিয়ার সফল উত্থান। তিনি জেনেশুনে আই রিভোল্ট বলে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। বিশ্বের সব বিপ্লবের সাথে একজন ব্যক্তির নেতৃত্ব থাকে। যা শহীদ জিয়ার ছিলো। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্রের মধ্যে সবাইকে সম্পৃক্ত করেন। তিনি দেশের সমৃদ্ধি করার লক্ষ্যে কাজ করেছেন। আজকে মানুষ না খেয়ে মরছে না বলা হয়। তবে গুম হয়ে মরে ঠিকই।


তিনি বলেন, জিয়া ছিলেন জনগণের। তার মতো সততা, দেশপ্রেম, সাহসের সাথে কারো তুলনা হয় না। তিনি দেশে একটা জাগরণ তৈরি করেছিলেন। তার নেতৃত্বে দেশবাসী জেগে উঠেছিলো। দেশের সকল উন্নয়ন প্রকল্পে জনগণকে সম্পৃক্ততা করেছিলেন তিনি।


জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও জেডআরএফের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপকমিটির সদস্য সচিব কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রেভিসি অধ্যাপক ড. আফম ইউসুফ হায়দার, এ্যাব‘র সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী মিয়া মো. কাইয়ুম, বিএমএ‘র সাবেক মহাসচিব ডা. গাজি আবদুল হক, বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আবদুল করিম, জেডআরএফের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপকমিটির আহ্বায়ক ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ঢাবি ছাত্রদলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব।


অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জেডআরএফের ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, ডা. মাসুদ আখতার জীতু, অধ্যাপক ডা. সহিদুর রহমান, ডাঃ সাজিদ ইমতিয়াজ, কৃষিবিদ শফিউল আলম দিদার, সানোয়ার হোসেন, প্রকৌশলী আসিফ হোসেন রচি, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ফখরুল ইসলাম রবিন, ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির আরিফা সুলতানা রুমা, সানজিদা ইয়াসমিন তুলি প্রমুখ।


বিবার্তা/বিপ্লব/আরকে


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com