শিরোনাম
শেখ হাসিনা বাঙালির আশা-আকাঙ্খার প্রতীক: হানিফ
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৬:৩৪
শেখ হাসিনা বাঙালির আশা-আকাঙ্খার প্রতীক: হানিফ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাঙালির আশা-আকাঙ্খার প্রতীক। তিনি তার মেধা ও কর্ম দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের ‘মুকুট মণি’তে পরিণত হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।


তিনি বলেন, শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশে নয় বরং বিশ্ব পরিমন্ডলে আজ একজন অনন্য যোগ্যতা সম্পন্ন বিচক্ষণ রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছেন। তিনি বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।


সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে ‘নব উত্থানের নব সোপানে বাংলাদেশ’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তার মহানুভবতা সারাবিশ্বে প্রশংসিত। তিনি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে, করোনা মহামারিতে তাদের টিকার ব্যবস্থা করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। শেখ হাসিনা মমতাময়ী মায়ের মতো। তিনি দলকে নেতৃত্ব দেয়ার মতো যেমন সাহসী, ঠিক তেমনি তার মানবিক গুণাবলীও মায়ের মতো। এদেশের গরিব-দুঃখী মানুষ তার কাছে বেঁচে থাকার আশ্রয় পেয়েছে। তিনি সাধারণ মানুষের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছেন। মহানুভবতার জন্য বিশ্বপরিমন্ডলে বারবার পুরস্কৃত হয়েছেন।


কাজ না করেও বাংলাদেশে এখন ভাতা পাওয়া যায় উল্লেখ করে হানিফ বলেন, শেখ হাসিনা বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতার ব্যবস্থা করেছেন। ১৪০টি ক্যাটাগরিতে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন।


তিনি বলেন, ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে শেখ হাসিনা দলের হাল ধরেন। আজ ২০২১ সাল। দীর্ঘ এই ৪০ বছরের পথচলা কিন্তু সহজ ছিলো না। অত্যন্ত ঝড়, ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ সময় পাড়ি দিতে হয়েছে। বারবার তাকে আঘাত করা হয়েছে, কারাবরণ করতে হয়েছে। নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও তিনি কখনো ভীত হননি। পিতার মতো জননেত্রী শেখ হাসিনা অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক।



হানিফ বলেন, শেখ হাসিনা বাঙালিকে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রথম বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার শুরু করে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে দেশকে বের করে এনেছেন। রাজাকার, আল বদরসহ গণহত্যায় যারা নেতৃত্ব দিয়েছিলো তাদের বিচারের দাবি ছিলো এদেশের জনগণের। সেটা তিনি করেছেন। ইতিমধ্যে যুদ্ধাপরাধী অনেকের রায় কার্যকর করা হয়েছে।


আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনা শুধু একজন লড়াকু যোদ্ধাই নয়, সাহসী নেত্রী। একজন বিচক্ষণ, প্রজ্ঞাবান, দূরদর্শী সম্পন্ন নেত্রী। তিনি তার শাসনামলে বাংলাদেশেকে চরম দারিদ্রশীল রাষ্ট্র থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। বিশেষ করে ২০০৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই ১২ বছরে দেশকে এক অভূতপূর্ব উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।


তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছিলো চরম দারিদ্রশীল দেশ। মাত্র ৬০০ ডলার মাথাপিছু আয় নিয়ে যাত্রা শুরু করে এই ১২ বছরে সেই আয় এখন প্রায় ২৩০০ ডলারে পৌঁছেছে। দেশের রিজার্ভ এখন ৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছিলাম, আজ তাদের চেয়ে আমাদের দ্বিগুনের বেশি রিজার্ভ আছে। আমাদের রফতানি আয় বেড়েছে। ২০০৯ সালে আমাদের রফতানি আয় ছিলো ৮ বিলিয়নের নিচে, আজ সেই রফতানি আয় বেড়ে ৪২ বিলয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ৫ বিলিয়নের রেমিটেন্স নিয়ে যাত্রা শুরু করে এখন ৩৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এ সবকিছু সম্ভব হয়েছে বিচক্ষণ নেত্রীর নেতৃত্বের কারণে।


হানিফ বলেন, গত ১২ বছরের পথ চলা সহজ ছিলো না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ার পর ২০১২ সাল থেকে বিএনপি-জামায়াত যৌথভাবে আন্দোলন শুরু করে। ২০১৩ সালে সারা দেশে জ্বালাও-পোড়াও সহিংসতার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করে অচল করার চেষ্টা করেছে। ২০১৪ সালে নির্বাচনে সুষ্ঠ করার ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমে তারা ধ্বংসাত্নক কার্যকলাপ চালিয়েছে। ২০১৫ সালে তারা পেট্রোল বোমার সন্ত্রাস চালিয়েছে। ৯২ দিন শত শত মানুষকে পেট্রোল বোমা দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। শেখ হাসিনা এই সমস্ত পৈশাচিক কর্মকাণ্ড ও ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। আর দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কারণে বিশ্ব আজ আমাদেরকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।



হানিফ বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছে। স্বাধীনতােবিরোধী চক্রের মূল হোতা জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে একে একে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করে দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি শুরু করে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা বিরোধীতা করেছে সেই রাজাকার, আল বদর, আশ শামসদেরকে জিয়াউর রহমান দালাল আইন বাতিল করে দেশে আসার সুযোগ করে দিয়েছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত দল জামায়াতে ইসলামীর কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আযমকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাজনীতি করার সুয়োগ দিয়েছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে এবং আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে হাজার হাজার নয় লাখ লাখ আ.লীগ নেতা-কর্মীদেরকে মিথ্যা মামলা, জেল জুলম এবং গুম করেছে।


তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের লক্ষ্য ছিলো একটাই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে নিঃশ্বেষ করা। সরকার গঠন করেছিলেন স্বাধীনতা বিরোধী, রাজাকার, আল বদরদের নিয়ে। স্বাধীন রাষ্ট্রকে পাকিস্তানী ভাবধারায় নিয়ে যেতে, আস্তে আস্তে মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান, বাঙালির শ্লোগান ‘জয় বাংলা’ নির্বাসনে পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে যথন হত্যা করা হয় সৌভাগ্যক্রমে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বেঁচে যান। ওই সময় প্রাণে বেচে গিয়েছিলেন বলেই আজ বাংলাদেশের মানুষ নতুন করে স্বপ্ন দেখছে। স্বাধীন দেশে উন্নয়ন, অগ্রগতিতে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। স্বাধীনতা বিরোধী চক্র এখনো দেশে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এসব ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।


আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু বলেন, বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। করোনায় সারাবিশ্ব যখন থমকে গেছে আওয়ামী পরিবারে প্রতিটি কর্মী হৃদয় দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তার কারণ শেখ হাসিনা। তিনি মহান শিক্ষক। প্রত্যেক দূর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের উত্থানে পুরো পৃথিবী অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা যে, দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক তা প্রমাণ করেছেন। আজ দেশে গড় আয়ু, মাথাপিছু আয় বেড়েছে। শিশু মৃত্যু, মাতৃমৃত্যু, দারিদ্রতার হার কমেছে। সব সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু হচ্ছে, মেট্রো রেল, পাতাল রেল হচ্ছে, এ সব কিছু গণমানুষের নেত্রী শেখ হাসিনার কারণে হচ্ছে।


জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বিবি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বাহাদুর বেপারী, স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ-সভাপতি সালেহ মোহাম্মদ টুটুল, শেখ মজলিস ফুয়াদ, সাবেক ছাত্রনেতা এ্যাডভোকেট তারিক হাসান পলাশ ও বিবি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান তপন প্রমূখ।


বিবার্তা/সোহেল/আবদাল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com