ঢাকা মহানগর বিএনপির নতুন কমিটির নেতৃত্ব গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে করা এ কমিটি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সরকারের অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে রাজপথে সোচ্চার থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরার বাসায় মহানগর উত্তর-দক্ষিণের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকের পর তিনি এসব মন্তব্য করেন।

আমান ও সালামের নেতৃত্বে নতুন আহ্বায়ক কমিটির নেতারা বিএনপি মহাসচিবের বাসায় তার সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। মির্জা ফখরুল এসময় নবগঠিত কমিটির নেতাদের অভিনন্দন জানিয়ে সংগঠনের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

উপস্থিত নেতাদের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ দুটি কমিটি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে গঠন করা হয়েছে। কমিটি দুটির প্রতি দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি। এরা সবাই পরীক্ষিত।

তিনি বলেন, আমাদের বর্তমান রাজনৈতিক যে প্রেক্ষাপট সেই প্রেক্ষাপটে এটা (নতুন কমিটি গঠন) নিঃসন্দেহে একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। আমাদের প্রত্যাশা হচ্ছে যে, এ কমিটি দুটির মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতির একটা গুণগত পরিবর্তন আসবে। বর্তমানে যে অগণতান্ত্রিক সরকার আমাদের সমস্ত আশা-আকাঙ্ক্ষা বিনষ্ট করে দিচ্ছে, সেখান থেকে উত্তরণে নতুন কমিটি তাদের দায়িত্ব পালন করবেন। ভূমিকা রাখবেন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সবার যে প্রত্যাশা সেই প্রত্যাশা হচ্ছে, অত্যন্ত সক্রিয়, সচল এবং কার্যকর এই আহ্বায়ক কমিটি, তারা অতি দ্রুত দলকে সুসংগঠিত করবে এবং একটি কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কার্যকরী কমিটি গঠন করবে।

গঠনতন্ত্র অনুসারে তিন মাসের মধ্যেই কাউন্সিল হবে বলে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি একটা বিশাল রাজনৈতিক দল। সেই দলের যখন একটি কমিটি তৈরি করা হয় তখন ছোট-খাটো সমস্যা থাকতেই পারে। আমরা যেটা দেখছি যে, একবারে পরীক্ষিত নেতৃবৃন্দকে দিয়েই এই কমিটি করা হয়েছে। প্রবীণ ও নবীনের সমন্বয়ে করা হয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে একটা কার্যকরী কমিটি হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

এ সময় মহানগর উত্তরের নতুন আহ্বায়ক ও দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান বলেন, আজকে গণতন্ত্র অনুপস্থিত। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চলছে। নির্যাতন-নিপীড়ন ও অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে দেশ পরিচালিত হচ্ছে। সেজন্য সংগঠনকে ঢেলে সাজিয়ে জনগণের যে প্রত্যাশা জনগণ যাতে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট তিতে পারে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে পারে, একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে যাতে নির্বাচন হতে পারে, সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যাতে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হয়। সেসব লক্ষ্য সফল করার জন্যে আমরা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ একসঙ্গে একযোগে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে কাজ করবো। যদি প্রয়োজন হয় ১৯৯০ সালের মতো আরেকটি গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই নব্য স্বৈরাচারী, অগণতান্ত্রিক, অবৈধ, মিডনাইট সরকারকে রাষ্ট্র ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করবো।

মহানগর দক্ষিণের নতুন আহ্বায়ক চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম বলেন, আমরা চেষ্টা করবো যাতে এই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারি সবাইকে সাথে নিয়ে। সে ব্যাপারে মহাসচিব থেকে শুরু করে মহানগরসহ দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীর সহযোগিতা চাই। আমরা উত্তর-দক্ষিণ মহানগর এক সাথে মিলেই সমবেতভাবে মহানগরীতে কাজ করার চেষ্টা করবো। যাতে কোথাও কোনো গ্যাপ সৃষ্টি না হয়, কোনো ভুল-বুঝাবুঝি না হয়। সবাইকে নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই।

তিনি বলেন, আমাদের একটাই উদ্দেশ্য, আজকের এই সরকার যে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে, এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা এবং গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা। আমরা অতি অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের সাংগঠনিক অবস্থাটাকে সম্পূর্ণভাবে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করবো। যাতে একটা কাউন্সিল করতে পারি।

এসময় মহানগরের রফিকুল আলম মজনু, আমীনুল হক, আবদুল আলীম নকি, তাবিথ আউয়াল, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, নবী উল্লাহ নবী, ইউনুস মৃধা, মো. মোহন, আতিকুল ইসলাম মতিন, মোশাররফ হোসেন খোকন, মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, মহানগর উত্তর যুব দলের এসএম জাহাঙ্গীর, চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের শায়রুল কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিবার্তা/বিপ্লব/আরকে