শিরোনাম
সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে: হানিফ
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২১, ২০:২৩
সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে: হানিফ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে কঠোর হস্তে দমন করে দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ।


শনিবার (১৭ই এপ্রিল) মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ শে‌ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ক‌রে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ কথা বলেন।


হানিফ বলেন, বাংলাদেশ যেভাবে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে সেটাকে মেনে নিতে না পেরে একাত্তরের পরাজিত ঘাতক ও তাদের দোসররা এখনো এদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন নাম নিয়ে ধর্মের দোহাই দিয়ে তারা আন্দোলনে নামছে। তারা এদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণ করতে চায়।



তিনি বলেন, আমি পরিষ্কার ভাবে বলতে চাই, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। কাজেই যেকোন অপশক্তিকে কঠোরহাতে দমন করে উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। এটাই হোক আজকের ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের প্রত্যাশা এবং অঙ্গীকার।


তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও স্বাধীনতা বিরোধীদের আস্ফালন দেখতে হচ্ছে। যারা এদেশের সংবিধান মানে না, দেশের জাতীয় সংগীত,পতাকাকে শ্রদ্ধা করে না, তাদের এদেশের নাগরিক হিসেবে থাকার কোন অধিকার নেই। পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই, এদেশে থাকতে হলে দেশের সংবিধান মানতে হবে, জাতীয় সংগীত এবং জাতীয় পতাকাকে শ্রদ্ধা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে। সব অপশক্তির বিষদাঁত উপড়ে ফেলা হবে।



মুজিবনগর দিবস নিয়ে মাহাবুবউল আলম হানিফ বলেন, যারা স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে তাদের কাছে এ দিবস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাঙালি জাতির জন্য এটি ঐতিহাসিক দিবস। বাঙালি জাতির জীবনের একটি অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপরাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করে মুজিবনগর সরকার গঠন করা হয়।


তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এটা আলোচনার টেবিলে বসে একদিনে হয় নাই। এটা কারো দয়ায় আসে নাই। কোন হুইসলার বাঁশি আওয়াজে মানুষ ঝাপিয়ে পড়ে নাই। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘদিনে আন্দোলন -সংগ্রাম প্রেক্ষাপট আছে। এ দেশ, এদেশের মানুষ হাজার বছর ধরে বিদেশি হানাদারদের কবলে পড়েছে। অত্যাচারিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত হয়েছিলো। কিন্তু তারা মাথা নোয়ায়নি। শত্রুর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৫২’র ভাষা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে যাত্রা শুরু হয়ে ৫৪’র যুক্ত ফ্রন্টের নির্বাচন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলনর পর ৬৬’তে ৬ দফার আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্ন জাগিয়ে তুলেছিলেন। এরপর ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলো। যার ফলশ্রুতিতে ৭০’এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছিলো।



তিনি আরো বলেন, ১৯৭০ সালের নির্বাচনেই বাঙালি স্বাধীনতার পক্ষে তাদের আকাঙ্ক্ষাটি জানিয়ে দেয়। তারপর তারা পথে নেমে আসে। স্লোগান তোলে : ''বীর বাঙ্গালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো''। জনতার মনের আকাঙ্ক্ষাটি বহু আগে থেকেই জানতেন জনতার নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই তিনি ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্সের জনসমুদ্রে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা দিলেন : ''এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।''


আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, পাকিস্তানিরা বুঝতে পেরেছিলেন যে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে নিচ্ছেন। তখনই ‘৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাক হানাদার বাহিনী ঢাকাসহ সারাদেশে অপারেশন সার্চলাইট নামে ইতিহাসের বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। তাৎক্ষনিক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এর পরপরই পাকিস্তানি সামরিক জান্তা বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করেন।



তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ চার সহচর সর্বাত্মক জনযুদ্ধকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে ভারতে আশ্রয় নেন এবং সেখানেই ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র রূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করা হয়। একই সাথে প্রবাসী সরকারের এক অধ্যাদেশে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ এপ্রিল তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় এই সরকার শপথগ্রহণ করে। ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ দায় শোধ হয়েছিলো মুজিবনগর সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে। সব ধর্মের, সব বর্ণের মানুষের সম্প্রীতির বন্ধনে যে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন, এই দিনে তা সত্যিকার অর্থে বাস্তবে রূপ নিলো সরকার গঠনের মাধ্যমে।


বিবার্তা/রাসেল/আবদাল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com