শিরোনাম
‘উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছি দুর্বার’
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০১৬, ১১:৫১
‘উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছি দুর্বার’
তৌফিক ওরিন
প্রিন্ট অ-অ+

`উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছি দুর্বার, এখন সময় বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার’- এই স্লোগানকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংগঠন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন। সম্মেলনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই উৎসবমুখর হয়ে উঠছে পরিবেশ। একই সাথে দ্রুতই এগিয়ে চলেছে সম্মেলনের প্রস্তুতির কাজ। ফলে ব্যস্ত সময় পার করছেন সম্মেলনের প্রস্তুতির কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। প্রায় প্রতিদিনই অনুষ্ঠিত হচ্ছে সম্মেলনের প্রস্তুতি উপলক্ষে গঠিত বিভিন্ন উপ-কমিটির সভা।


সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সকাল-বিকাল নেতাকর্মীরা কার্যালয়ে আসছেন। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে কার্যালয়। এজন্য আগেভাগেই বর্ণিলভাবে সাজানো হয়েছে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয়। একইভাবে বিমানবন্দর থেকে সম্মেলনস্থলের গেইট পর্যন্ত মনোরমভাবে সাজানোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোর দুই পাশে শোভা পাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সজিব ওয়াজেদ জয়ের ছবি সংবলিত বড় বড় ফেস্টুন।



আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে দেশের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক জাতীয় সম্মেলন। তাই এ সম্মেলনকে সফল করার জন্য ৮টি সম্মেলন প্রস্তুতি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ উপ-কমিটিগুলো আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে নিয়মিত প্রস্তুতি সভা করছে। একই সাথে তাদের আওতাভুক্ত কাজসমূহ দ্রুত সম্পন্নের লক্ষ্যে কাজ করছে।


এদিকে সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত উপ-কমিটিগুলো তাদের উপর অর্পিত বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে। ইতিমধ্যে সারা দেশের কাউন্সিলর তালিকা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। সারা দেশ থেকে ৬,৫৭০ জন কাউন্সিলর এই সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে দলটির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।


জানা গেছে, এবারের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দলে গুণগত কিছু পরিবর্তন আনা হবে। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দলের ভবিষ্যৎ কার্য পদ্ধতি ও পরিকল্পনা নির্ধারণ হবে। সে অনুযায়ী আগামী ২০১৯ নির্বাচনকে সামনে রেখে অগ্রসর হবে দলটি। এছাড়া ২০৪১ সালকে লক্ষ্য নির্ধারণ করে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ গড়ার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তাই ঘোষণাপত্রের খসড়া তৈরি করছে উপ-কমিটি। সে অনুযায়ী সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচি গৃহীত হবে।


দলের গঠনতন্ত্রকে আরও যুযোপযোগী, আধুনিক ও উন্নত করতে গঠনতন্ত্র উপ-পরিষদ কাজ শুরু করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশের রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্র নিয়ে এই কমিটি কাজ করছে। ভারতের কংগ্রেস, বিজেপি, তৃণমূল কংগ্রেসসহ যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টি, কনজারভেটিভ পার্টি, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনতন্ত্রকে রেফারেন্স হিসেবে কাজে লাগানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।



প্রস্তুতি কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নেতারা জানান, কাউন্সিলর, ডেলিগেট ছাড়াও দেশি ও বিদেশি আমন্ত্রিত অতিথিরা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। দেশের বিভিন্ন প্রগতিশীল ও স্বাধীনতার পক্ষের রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হবে। মহানগর থেকে তৃণমূল, সকল পর্যায়ের ৫০ হাজারের বেশি নেতা, কর্মী ও সমর্থক এই কাউন্সিলে উপস্থিত থাকবেন।


এ সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। উপমহাদেশের প্রাচীন রাজনৈতিক দল ভারতের কংগ্রেস, ক্ষমতাসীন বিজেপি, যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টি ও কনজারভেটিভ পার্টি, যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক পার্টি ও রিপাবলিকান পার্টি, চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি, শ্রীলংকা, নেপালের ক্ষমতাসীন পার্টিসহ প্রায় ৪০টি দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু পাকিস্তানের কোনো রাজনৈতিক দলকে দাওয়াত না দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্মেলনে উপস্থিত বিদেশি অতিথিদের বক্তব্য দেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।


এদিকে সম্মেলন উপলক্ষ্যে রাজধানীসহ সারা দেশে জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করার লক্ষে কাজ করছে সাজসজ্জা উপপরিষদ। এ জন্য সম্মেলন উপ-পরিষদ ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করেছেন। সম্মেলন স্থল ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনের সাজ সজ্জার কাজ চলমান রয়েছে।


এছাড়া সম্মেলনের সাত দিন আগে থেকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সাজসজ্জা ও আলোকসজ্জা করা হবে। এছাড়া জেলা ও উপজেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং দলের কার্যালয়ে তিন দিনব্যাপী আলোকসজ্জার ব্যবস্থা হবে। সম্মেলন উপলক্ষে ডিজিটাল ব্যানার, ফেস্টুন, লিফলেট তৈরি হবে। আওয়ামী লীগের সুদীর্ঘ ইতিহাস ও ঐতিয্য তুলে ধরে ডিজিটাল ডিসপ্লের ব্যবস্থা করা হবে।


সম্মেলনের সার্বিক নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সম্মেলনের ভেন্যু সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও এর আশপাশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই নজরদারির মধ্যে আনা হয়েছে। ১ অক্টোবর থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থাপিত সম্মেলন প্রস্তুতি ক্যাম্প থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। সম্মেলনে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্যে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সহযোগী সংগঠনের সমন্বয়ে প্রায় দেড় হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবে। সম্মেলনস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে ৮০টি টিমে ভাগ হয়ে কাজ করবে।


সম্মেলনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনে দেশ-বিদেশ থেকে আসা প্রতিনিধিদের অভ্যর্থনা এবং সম্মেলনস্থলকে দৃষ্টিনন্দন করতে সব প্রস্তুতি এগিয়ে চলেছে। একই সাথে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলন সফল করতে অস্থায়ী ক্যাম্প বসানো হয়েছে। পাশাপাশি রাজধানীতে আওয়ামী লীগের অন্যন্য অফিসও দৃষ্টিনন্দন করে সাজানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।


বিবার্তা/ওরিন/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com