অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাদেক হোসেন খোকাকে দেশে ফেরাতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।রবিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে তিনি এ সহযোগিতা চান।
তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাদেক হোসেন খোকা আমাদের বলেছেন যে, ‘দেশের মাটিতেই যেন তার কবর হয়’।
মির্জা ফখরুল বলেন, রোববার সকালে সাদেক হোসেন খোকার ছেলে আমাকে ফোন করে বলেছেন, তার বাবার ইচ্ছাটা সে পূরণ করতে চায়। তিনি যেন দেশে ফিরতে পারেন তার উদ্যোগ নিতে আমরা সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাতে চাই, তিনি যেন সুস্থ অবস্থায় দেশে ফিরতে পারেন, সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আল্লাহর কাছে দোয়া করি, সাদেক হোসেন খোকাকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে দিয়ে আমাদের কাছে পাঠান। দোয়া করি আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার জন্য, যাকে কেন্দ্র করে আমাদের রাজনীতি গড়ে তুলেছি। তিনি আমাদেরকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, স্বৈরাচার থেকে দেশকে মুক্ত করেছেন। তিনি যেন সুস্থ ও মুক্ত হয়ে আমাদের নেতৃত্ব দিতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, সাদেক হোসেন খোকার শারীরিক অবস্থা পরিবর্তনের আশা ছেড়ে দিয়েছেন সেখানকার চিকিৎসকরা। তারা খোকার সব চিকিৎসা বন্ধ করে দিয়েছেন।
খোকার জীবনের শেষ ইচ্ছানুযায়ী অন্তিম সময়ে তাকে দেশে নেয়াও পরিবারের পক্ষে সম্ভব হয়নি। পাসপোর্ট না থাকায় দেশে ফিরতে পারেননি তিনি। পরবর্তী সময়ে কী হবে, এ নিয়ে স্বজনরা বিভ্রান্তিতে আছেন।
ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য ২০১৪ সালের ১৪ মে সপরিবারে নিউইয়র্ক চলে যান সাদেক হোসেন খোকা। তার পর থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে একটি বাসায় দীর্ঘদিন ধরে থাকছিলেন বিএনপির এ নেতা।
ভিজিট ভিসার নিয়ম অনুযায়ী, ৬ মাস পর পর যাওয়া-আসা করে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বৈধ রাখার নিয়ম। ২০১৭ সালে খোকা ও তার স্ত্রী ইসমত হোসেনের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তারা নিউইয়র্ক কনস্যুলেটে নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন পাসপোর্ট পাওয়ার ব্যাপারে কনস্যুলেট থেকে কোনো সদুত্তর দেয়া হয়নি।
এদিকে সাদেক হোসেন খোকার দেশে ফেরার বিষয়ে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। এছাড়া দেশে আসার পর তার বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রবিবার (৩ নভেম্বর) পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তার এক ফেসবুক পোস্টে এসব কথা উল্লেখ করেন। ফেসবুক পোস্টে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘নিউইয়র্কে সাদেক হোসেন খোকার পরিবার ‘ট্রাভেল পারমিট’ এর জন্য আবেদন করলে আমাদের মিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। তিনি এবং তার স্ত্রীর যেহেতু পাসপোর্ট নেই, সেহেতু আন্তর্জাতিকভাবে অন্য দেশ থেকে নিজের দেশে ফেরার এটাই একমাত্র ব্যবস্থা।’
নিউইয়র্কের কনস্যুলেটে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়ার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লিখেন, ‘আমি আমাদের নিউইয়র্কের কনসুলেটে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি।’
ফেসবুকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও লিখেন, সাদেক হোসেন খোকা এবং তার স্ত্রীর নামে মামলা আছে, গ্রেফতারি পরোয়ানাও থাকতে পারে (আমি নিশ্চিত নই)। কিন্তু মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে যা জেনেছি, তাদের আসার পর বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হবে।
বিবার্তা/আবদাল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]