আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ছিল একই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকেলে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়া খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মেরিনা জাহান কবিতা, পারভীন জামান কল্পনা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সস্পাদক শাহে আলম মুরাদ, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদক মাহমুদা বেগম ক্রিক, মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী আসমা জেরিন ঝুমু ও শিরিন রোকসানা বক্তব্য দেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্ট এ দুইটি হত্যাকাণ্ড একের সঙ্গে অন্যের একই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা। ১৫ আগস্ট ষড়যন্ত্রের প্রাইম টার্গেট ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ২১ আগস্টের প্রাইম টার্গেট ছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ৭১ এর পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে ৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল স্বাধীনতা বিরোধীরা। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২১ আগস্ট যখন গ্রেনেড হামলা হয়েছে তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপি- জামায়াত জোট সরকার। ২১ আগস্ট হত্যাকারীদের নেতা হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান জবানবন্দীতে বলেছে হাওয়া ভবনের পরিকল্পানায় তারেক রহমানের নির্দেশে তারা হামলা করে। এই ঘটনার মাস্টারমাইন্ড তারেক রহমান একথা অস্বীকার করার উপায় নেই। এটা প্রচলিত আদালতে প্রমাণিত হয়েছে, জনতার আদালতে প্রামাণিত, ইতিহাসের আদালতেও তা প্রমাণ হবে।

ওবায়দুল কাদের বিএনপির প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, এই ঘটনায় আপনারা যদি জড়িত না থাকেন তাহলে এফবিআইকে তদন্ত করতে বাধা দিলেন কেন। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে তদন্ত করতে আসতে বাধা দিলেন কেন। আপনারা যদি মাস্টারমাইন্ড না হন তাহলে জজ মিয়া চিত্রনাট্য সাজিয়েছিলেন কেন। ২২ আগস্ট সকালের আগে ঘটনার সমন্ত আলামত নষ্ট করে দিলেন কেন। এর জবাব কি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগীর সাহেব দেবেন?

২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিএনপির অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানার ঘটনার দিন সূর্য ওঠার আগেই খালেদা জিয়া বাসা থেকে বের হয়ে ২৪ ঘন্টা নিখোঁজ ছিলেন, তিনি কোথায় গিয়ে ছিলেন? যিনি দুপুরের আগে ঘুম থেকে ওঠেন না, তিনি সূর্য ওঠার আগে বাসা থেকে বেরিয়ে ২৪ ঘন্টা নিখোঁজ থাকলেন। এতে প্রমাণ হয় এই ঘটনার জন্য তারা দায়ী। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সময় আপনার (মির্জা ফখরুল) নেত্রী কোথায় ছিলেন এর জবাব দেবেন কি ফখরুল সাহেব?

ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, অনেকে বলেন আমরা সংলাপ করি না। বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করে ইনডেমিনিটি দিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের কর্মসম্পর্কের অলঙ্ঘিত দেয়াল তৈরি করা হয়। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পর সেই দেওয়াল আরো উচু হয়েছে। সেই দেয়াল আমরা ভুলি কি ভাবে। ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে আপনারা হত্যার পরিকল্পনা করে আওয়ামী লীগের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করেছেন। এর বিচার প্রচলিত আদালতে হয়েছে, জনতার আদালতে হয়েছে, ইতিহাসের আদালতেও হবে। এতো কিছুর পরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। খালেদা জিয়া কি অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেছিল সবাই জানে। এরপর পুত্র হারা মাকে (খালেদা জিয়া) শান্তনা দিতে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। কিন্তু মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এটা করে আপনারা কর্মসম্পর্কের রাজনীতির দরজা চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছেন।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডে জড়িত বিদেশে লুকিয়ে থাকা দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাসির রায় কার্যকর করার দাবি জানান।

বিবার্তা/জাই