শিরোনাম
ছবির মতন সুন্দর এক গ্রাম
প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০১৮, ১৬:৪৫
ছবির মতন সুন্দর এক গ্রাম
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ডেনমার্কের অন্তর্গত স্বশাসিত দ্বীপপুঞ্জ ফেয়ারো আইল্যান্ড। সেখানকার প্রত্যন্ত এলাকায় আছে ছবির মতো সুন্দর গ্রাম- গাউসাডাল্যুর।


গ্রামের লোকসংখ্যা মাত্র ১৮ জন। তাঁদের একজন গিসলি হারাউনফিয়র্ড। একসময় যেটি ছিল গ্রামের ডাকঘর, সেখানেই এখন বাস করেন তিনি। স্মৃতি হাতড়ে বলেন, ‘ডাকপিয়নকে ওই পাহাড় পেরোতে হতো। আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে পাহাড়ে উঠে, তারপর নেমে সারভাগোর গিয়ে চিঠি নিয়ে আসতে হতো। পথটা খুবই দীর্ঘ।’


২০০৪ সালে এসে এ অবস্থা বদলে যায়। সেসময় পাহাড়ের নিচ দিয়ে একটি টানেল (সুড়ঙ্গ) তৈরি করা হয়। ফলে ডাকপিয়নকে আর আঁকাবাঁকা পথ পাড়ি দিতে হয় না, তিনি এখন গাড়ি চালিয়ে গ্রামে যেতে পারেন।


গ্রামের সৌন্দর্য্যের কথা শুনে পর্যটকরাও গ্রামটি দেখতে যান। গ্রামের বাসিন্দা গিসলি হারাউনফিয়র্ড তাঁর বাড়িতে অতিথিদের আপ্যায়ন করতে পছন্দ করেন। তিনি তাঁদের ‘ডাকপিয়নের কফি’ পানের আমন্ত্রণ জানান, যা তাঁর পরিবারের ঐতিহ্য।


হারাউনফিয়র্ড বলেন, ‘পুরনো দিনে চিঠি আনতে যাওয়ার সময় ডাকপিয়ন কাউকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন। কারণ, তাহলে পথ হারানোর ভয় থাকত না। পরে এই রান্নাঘরে এসে তাঁরা মোজা শুকাতেন, গা গরম করতেন, আর সঙ্গে কফি নিয়ে গল্প করতেন। আমার স্ত্রী সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে পছন্দ করে।’


গ্রামের শেষ যিনি ডাকপিয়ন, হারাউনফিয়র্ডের স্ত্রী আন আউটনাসটায়ান হচ্ছেন তাঁর নাতনি। তিনি ডেনমার্কের মূল ভূখণ্ডে কয়েক বছর টেক্সটাইল ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেছেন। এখন ঘরে ফিরে তিনি ফেয়ারো আইল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী উল নিয়ে কাজ করছেন। আউটনাসটায়ান বলেন, ‘এই জিনিসটা এত সুন্দর! আমি এটা নিয়ে কাজ করতে চাই। অতীতে আমরা সবাই এটা ব্যবহার করেছি। আগে যখন এত পোশাক ছিল না, তখন আমরা এরকম পোশাকই তো পরতাম। ফেয়ারো আইল্যান্ডে এমন পোশাক থাকা খুবই ভালো। কারণ, জায়গাটা ঠাণ্ডা। তবে মানুষ এখন আর এটা ব্যবহার করছে না। আমি তাঁদের বোঝাতে চাই যে, তাঁরা এটা দিয়ে কী করতে পারে।’


২০১৬ সালের শেষ দিকে হারাউনফিয়র্ডের পরিবার গাউসাডাল্যুরে ফিরে যায়। তখন থেকে গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ছোট্ট মায়া গাউসাডাল্যুরে গত ৪৩ বছরে জন্ম নেয়া প্রথম শিশু।


গিসলি হারাউনফিয়র্ডের নিজস্ব একটি প্রকল্প আছে। মুরগি নিয়ে কাজ তাঁর। হারাউনফিয়র্ড বলেন, ‘আসল আইসল্যান্ডিক মুরগি খুবই পুরনো জাতের মুরগি। আকারে ছোট, তবে খুব ডিম পাড়ে। আমার লক্ষ্য হচ্ছে, এই মুরগি থেকে ফেয়ারোস মুরগির জন্ম দেয়া। কারণ, ফেয়ারো আইল্যান্ডের বাসিন্দারা তাঁদের আসল মুরগি হারিয়ে ফেলেছেন। সম্ভবত এগুলোর মতোই ছিল ওগুলো। কারণ, ভাইকিংরা এমন জাতের মুরগিই ইউরোপ থেকে আইসল্যান্ডে নিয়ে গিয়েছিলেন, এখানেও এনেছিলেন। কিন্তু ওই জাতের মুরগি আর নেই, কিংবা অন্য জাতের সঙ্গে মিশে গেছে। আমি সেটা ফিরিয়ে আনতে চাই।’


যদি তাঁর লক্ষ্য পূরণ হয়, তাহলে হাঁস ও পুরনো খাদ্যশস্যের জাতও ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করবেন হারাউনফিয়র্ড।


বিবার্তা/হুমায়ুন/সোহান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com