পাহাড়ি আদিবাসীদের জীবনযাপন যেমন সরল, তেমনি বন্ধুর। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ ফুট উপরে অবস্থিত সাজেক ভ্যালি যেন মেঘ আর পাহাড়ের এক অপূর্ব মিলনমেলা।
সাজেক রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত। সাজেক বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন। এর আয়তন ৭০২ বর্গমাইল। সাজেক রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও যাতায়াতের সুবিধার জন্য সড়ক পথে সাজেক যেতে হয় খাগড়াছড়ি হয়ে। আর রাঙামাটি হয়ে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় পৌঁছানো যায় সাজেক ভ্যালি।
সাজেকে দুইটি পাড়া রুইলুই ও কংলাক। এর প্রবীণ জনগোষ্ঠী লুসাই। এছাড়া পাংকুয়া ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী ও এখানে বাস করে। ১৮৮৫ সালে এই পাড়া প্রতিষ্ঠিত হয়। এর হেড ম্যান লাল থাংগা লুসাই। আর কংলাক পাড়া হল সাজেকের শেষ পাড়া। এর হেড ম্যান চৌমিং থাই লুসাই।
মেঘের হাত ধরেই সকালটা শুরু হয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর । চারপাশে শুধু মেঘের ভেলা, যেন স্বর্গরাজ্য। পাহাড়ি রাস্তা, ধারের বস্তি, শিশুদের ছোটাছুটি সব মিলিয়ে এক অপূর্ব সকালের শুরু হয় এই মেঘের রাজ্যে। পাহাড়ি আদিবাসীরা জন্মগতভাবেই অনেক পরিশ্রমী হয়ে থাকে। নারী পুরুষরা সকালেই কাজে বেরিয়ে পড়ে।
কাজে বের হওয়ার সময় নারীদের পিঠে কখনও সন্তান বহন করতে হয়, না হলে বাঁশের তৈরি ঝুড়ি। দূর দুরান্তের বাজার থেকে নিত্যদিনের বাজার সদাই পিঠে করে নিয়ে আসতে হয়। এছাড়া পানি সংগ্রহ করতে যেতে হয় অনেক দূরে। উঁচুনিচু রাস্তায় মাইলের পর মাইল হেটে এই পানি ও খাবার সংগ্রহ করতেই কেটে যায় দিনের অনেকটা সময়।
সকাল হলেই কেউ কেউ নিজের বাসার সামনের রাস্তায় খুলে বসে দোকান। এখানে পাওয়া যায় টুকিটাকি সবজি। কেউ কেউ এই রাস্তার পাশের দোকানেই আড্ডায় মাতে, কেউ আবার কেনাকাটা করে। দলবেঁধে স্কুলে যায় পাহাড়ি কিশোর কিশোরী।
এ যেন এক অন্য রাজ্য। মেঘের রাজ্যের জীবনযাপনের প্রত্যেকটা মূহর্তই যেন ছুঁয়ে যায়। পাহাড়িয়া বাতাস যেন টানে কোথাও। পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে ভেসে বেড়ানো মেঘ এক নিমেষেই দিতে পারে মন ভাল করে। যত দূর চোখ যাবে শুধু পাহাড় আর মেঘের মিলন মেলা।
বিবার্তা/উজ্জ্বল/কাফী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]