শিরোনাম
ঘুরে আসুন প্রকৃতির রুপসীকন্যা ‘লংগদু’
প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০১৭, ১৭:১৩
ঘুরে আসুন প্রকৃতির রুপসীকন্যা ‘লংগদু’
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

সবুজ প্রকৃতি আর চারপাশে হ্রদের নীল জলরাশি। লেকের অংশজুড়ে মাছ ধরার সারি সারি নৌকা। ছোট ছোট দ্বীপ আর দূর পাহাড়ের সারি। দ্বীপগুলোর ঠিক উপরে ছোট ছোট ঘর। প্রত্যেক ঘরের ঘাটে বেঁধে রেখেছে একটি করে নৌকাও। এ দৃর্শ্যটি রাঙামাটির সদর থেকে লঞ্চ করে লংগদু উপজেলায় যাওয়ার পথেই। যাওয়ার পথের এ দৃশ্যই মনে করিয়ে দেয় আরও কত সৌন্দয্য নিয়ে বসে আছে প্রকৃতির রুপসীকন্যা এ লংগদু।


চাইলে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন এই অপরূপ জায়গাটি থেকে। রাঙামাটির সদর থেকে লংগদু উপজেলার দুরত্ব ৭৬ কিলোমিটার। ৩৮৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ লংগদু উপজেলার মানুষের প্রধান অর্থনীতি কৃষি ফসলাদি ধান, তামাক, তরমুজ, হলুদ, আদা, শাকসবজি। প্রধান ফল-ফলাদি কাঁঠাল, আম, লিচু, কলা, লেবু, নারিকেল, আখ, আনারস। প্রধান রপ্তানি দ্রব্য তরমুজ, কলা, কাঁঠাল, হলুদ, আদা, মাছ।


এছাড়াও লংগদু উপজেলার কাট্টলী বিলে প্রচুর পরিমাণে মিঠাপানির মাছ পাওয়া যায়। এখানে সবকিছুর দাম একেবার সস্তা। কমলা যেখানে চট্টগ্রাম শহরে ডজন প্রতি গুনতে হয় ১৫০-১৬০ টাকা সেখানে এখানে পাওয়া যায় মাত্র ৫০ টাকায়।


কাট্টলী বিলে শীতকালে আগমন ঘটে অতিথি পাখির। ঝাঁকে ঝাঁকে এ পাখি এসে বসে। কাট্টলী বিল তাদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠে বিলজুড়ে। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে এ বিলটি। পানকৌড়ি আর নানা জাতের পাখির ঝাঁক বিলের চারপাশে। যারা আসেন তারা মূলত শীতের পাখি দেখতেই কাট্টলি বিলেই আসেন। মাছের প্রাচুর্যের কারণে কাট্টলি বিল পাখিদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এখন। ছোট সরালি, টিকি হাঁস, বড় সরালি, মাথা মোটা টিটি, গাঙচিল, গাঙ কবুতর, চ্যাগা, চখাচখিসহ নানান প্রজাতির পাখির ঝাঁকে মুখরিত থাকে এ বিল।



কাট্টলী বাজার ছেড়ে যেতে হয় খাগড়াছড়ি বাজার, যেখানে বাঙালিদের হাট বসে প্রতিনিয়ত। গরু ছাগল থেকে শুরু করে শাক সবজিসহ প্রায় সব রকমের জিনিসপত্র পাওয়া যায় খুব অল্প মূল্যে। সেখানকার বাসিন্দাদের নৌকাই একমাত্র বাহন। ডিঙ্গি নৌকা, জিরি নৌকা, সাম্পান এমনকি বড় ধরনের ইঞ্জিন বোটও রয়েছে। এ এলাকার জনজীবন পাহাড়ের চূড়াকেন্দ্রিক। বর্ষায় লেকের পানি বেড়ে গেলে প্রতিটি পাহাড়ের চূড়া দূর থেকে মনে হয় একেক একটি দ্বীপ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।


লংগদুর দর্শনীয় স্থানসমূহ
বনশ্রী রেস্ট হাউজ মাইনীমুখ
মাইনীমুখ বাজার মসজিদ
তিনটিলা বন বিহার
ডুলুছড়ি জেতবন বিহার
বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্স
কাট্টলী বিল
কাট্টলী বাজার
গরুসটাং পাহাড়
থলছাপ পাহাড়
কাকপাড়ীয়া প্রাকৃতিক বনভূমি
পাবলাখালী অভয়ারণ্য ও পাবলাখালী গেইম অভয়ারণ্য
যমচুগ বন বিহার
বনস্মৃতি রেস্ট-হাউস পাবলাখালী।


কীভাবে যাবেন
রাঙ্গামাটি শহরের সেনানিবাস এলাকা থেকে রিজার্ভ বাজার পর্যন্ত অটোরিকশা ভাড়া পড়বে ১০০ টাকা। এখান থেকে লংগদুগামী স্টিমার ছাড়ে সকাল সাড়ে ৭টা, সাড়ে ১০টা, ১২টা ও দুপুর ২টা। সময় লাগবে সাড়ে ৩ ঘণ্টা। ভাড়া জনপ্রতি ১৪৫টাকা দোতলায়। নিচে ১১৫ টাকা। তবে ফিরতি বোট লংগদু থেকে সবশেষ দুপুর ১টা ৩০। রাঙ্গামাটি হতে লঞ্চে লংগদু যেতে সময় লাগে প্রায় ৪ ঘন্টা।


ঢাকা হতে খাগড়াছড়ি গিয়ে সেখান হতে বাসযোগে যাওয়া যায়। খাগড়াছড়ি থেকে বাসে সময় লাগে প্রায় ৩ ঘন্টা। খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকেও যেতে পারবেন। সেক্ষেত্রে খুব সকালে দীঘিনালা থেকে মোটর বাইকে লংগদু রওনা দিতে হবে। দীঘিনালা থেকে লংগদু যেতে সময় লাগবে ১ ঘন্টার মত, দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার।


অন্যদিকে চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি বাসে লংগদু যাওয়া যায়; সময় লাগে প্রায় ৫ ঘন্টা।


কোথায় থাকবেন
তিনতলা বিশিষ্ট লংগদু উপজেলা রেস্ট হাউসে থাকতে পারেন যা লংগদু সদরে অবস্থিত। অথবা মাইনীমুখে অবস্থিত রাবেতা গেস্ট হাউজে থাকতে পারবেন কিংবা মাইনীমুখ বন বিভাগের রেস্ট হাউজে থাকতে পারেন।


বিবার্তা/যুথি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com