শিরোনাম
নেওয়াবাড়ি টিলায় সবুজের শামিয়ানা
প্রকাশ : ২৯ মে ২০১৭, ১২:৪৭
নেওয়াবাড়ি টিলায় সবুজের শামিয়ানা
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

শেরপুরের নেওয়াবাড়ি টিলাকে ঘিরে চমৎকার একটি পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠতে পারে। কিন্তু এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কোনো নজর নেই। পর্যটনকেন্দ্রের সম্ভাবনাময় এ জায়গাটি ভারতের মেঘালয় রাজ্য ঘেষা। এ কারণে এর বাড়তি একটি আকর্ষণ রয়েছে ভ্রমণপিপাসুদের কাছে।


শেরপুরের শ্রীবরদীর সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় প্রাকৃতি সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি। নেওয়াবাড়ি টিলায় আছে প্রায় ৭০ হেক্টর জমি। এর চূড়ায় উঠলে দেখা যায় চোখ ধাঁধানো মনোমুগ্ধকর সবুজের সমারোহ। জনশ্রুতি আছে এখানে অনেক আগেই একটি বাড়ি ছিল। এ বাড়ির নাম ছিল নেওয়াবাড়ি। সেই থেকেই এ টিলার নামকরণ করা হয় নেওয়াবাড়ির টিলা। তবে এখন আর সেই বাড়ি নেই। আছে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন প্রজাতির লতা ও বৃক্ষ। স্থানীয় ভাষায় বলা হয় ‘নেওয়া’। এ কারণেই টিলাটি নেওয়াবাড়ি টিলা হিসেবে পরিচিতি।


ময়মনসিংহ বন বিভাগের বালিজুড়ি রেঞ্জের আওতায় এ টিলা। এখানকার গাছগুলো ভূমিদস্যুরা কেটে ন্যাড়া করে দিয়েছে। আশির দশকে গড়ে ওঠে উডলট বাগান। এ টিলার চারদিকে স্থানীয় বাঙালিদের পাশাপাশি গারো, কোচ, হাজং, বানাই গোত্রের লোকজন বসবাস করেন। সকলের মধ্যে রয়েছে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক। টিলার দণি পাশে আছে ছোট পাহাড়ি ঝরনা। কোথাও গহীন জঙ্গল। আবার কোথাও কোথাও দেখা যাবে পাহাড় চূড়া। আরও দেখা যাবে ওপারের সীমানায় সূর্যোদয় ও সূযার্স্ত। পায়ে হেটে চারদিকে ঘুরে বেড়ানোর জন্য আছে মনোরম পাহাড়ি পরিবেশ।


পাহাড়ের বিরাট এলাকা জুড়ে আছে আকাশ মনি, বেলজিয়াম, ইউক্যালিপটাস, রাবার গাছ, ওষুধী গাছ ও কড়ই এছাড়াও নানা জাতের লতাগুল্ম আর বাহারি গাছগাছালি যা পর্যটকদের মুগ্ধ করে। বিশেষ করে এ টিলার পাহাড়ে উঠে এলে দূরের আকাশকেও কাছে মনে হয়। সবুজ ও হালকা নীলের নৈসর্গিক এই দৃশ্য চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না।


প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি নেওয়াবড়ি টিলায় পর্যটনকেন্দ্র করা গেলে স্থানীয়রা উপকৃত হতেন। এলাকাবাসী মনে করে, এ বিষয়ে সরকারের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। এই পাহাড়ি জনপদে পর্যটন শিল্প গড়ে ওঠলে পিছিয়ে পড়া নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠি অধ্যুষিত অঞ্চলের উন্নয়নের পাশাপাশি অনেক লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।


কীভাবে যাবেন: শেরপুর জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে এ টিলার অবস্থান। এখানে আসতে হলে নিজস্ব যানবাহন বা সিএনজি যোগে জেলা শহরের শাপলা চত্বর থেকে শ্রীবরদী পৌর শহর হয়ে বালিজুড়ি রেঞ্জ অফিসে আসতে হবে। রেঞ্জ অফিসের পশ্চিম পার্শ্বেই এ টিলার অবস্থান।


কোথায় থাকবেন: শ্রীবরদী উপজেলা সদরের ডাক বাংলোতেও থাকতে পারেন। এর জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমতি লাগবে। এছাড়া শেরপুর জেলা সদর ও আশপাশে বেশ কয়েকটি খাওয়ার হোটেল ও থাকার জন্য মোটামুটি ভালো মানের গেস্ট হাউজ বা আবাসিক হোটেল রয়েছে। যেখানে নিশ্চিন্তে রাত্রিযাপন করা যাবে। তবে পাহাড়ি পরিবেশে থাকতে চাইলে নেওয়াবাড়ি টিলা থেকে ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে রয়েছে বনফুল নামে একটি আবাসিক হোটেল।


সতর্কতা: নেওয়াবাড়ির টিলার আশপাশের পাহাড়ি এলাকার লাগোয়া ভারতীয় সীমান্ত। তাই পাহাড়ের ভেতর দিয়ে বেশি দূর এগোনো ঠিক হবে না। তাছাড়া সন্ধ্যার পর পাহাড়ের ভেতরে অবস্থান করাও ঠিক হবে না। কারণ এ অঞ্চলে বন্যহাতির আনাগোনা রয়েছে।


বিবার্তা/জিয়া


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com