শিরোনাম
ঘুরে আসতে পারেন চৌদ্দার চর, আড়াইহাজার থেকে
প্রকাশ : ২৭ মে ২০১৭, ১৪:৪২
ঘুরে আসতে পারেন চৌদ্দার চর, আড়াইহাজার থেকে
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

নারায়ণগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা আড়াইহাজার। ঢাকা থেকে মাত্র ১.৩০ -২.০০ ঘণ্টার পথ। যা যা চান সব এ আছে এখানে। বিশাল পুকুরের ধারে বিশাল বরই/কুল বাগান, খেজুর বাগান, গ্রামীণ মেঠো পথ, ১২৫ বছরের পুরানো স্কুল, ১০৫ বছরের পুরানো জমিদার বাড়ি, মেঘনা নদীর আসে পাশে ১০/১২ টা চর।


সবচেয়ে আকর্ষণীয় নদীর মাঝ খানে জেগে উঠা ২.১০ কিলোমিটার লম্বা চৌদ্দার চর যার একদিকে কুয়াকাটা সৈকত এর মত, পরের পার্টটা বালির, মাঝখানটা নরম ঘাস, ঘাসের মধ্যেই বেশ কিছু বড় গর্ত যেখানে ঘাস এ শুয়ে আড্ডা দেয়ার কথা জীবনেও ভুলবেন নাহ। একেক গর্তে ১০/১২ জন বসা যায়। পাশেই আছে বিশাল এলাকা জুড়ে কাশ ফুলের গাছ।


আর পানির কথা কি বলব, ঢাকার আসে পাশে শেষ কবে এত স্বচ্ছ নীলাভ পানি দেখেছেন নিজেই মনে করতে পারবেন নাহ। পানি দেখে ঝাপাঝাপি না করে থাকতেই পারবেন নাহ। যতই ঝাপাঝাপি করুন পানি ঘোলা হবেনা। এই চরেই পাবেন ঈগল, সাদা বক, পানকৌড়ি, কাদা খোঁচা সহ আরও নানা প্রজাতির পাখি। অল্প কিছু শামুক/ঝিনুক ও পাবেন।


কিন্তু আসল মজা হলো ট্রলারে ঘুরে বেরানো। ঘুরতে ঘুরতে দেখবেন নদীর পাশের মানুষের জীবন ধারা, জেলেদের মাছ ধরা, পাশে দিয়ে সারাদিন এ ছুটে চলা শত শত জাহাজ, হঠাত করেই পাশ থেকে নেমে আসবে রাজ হাঁস, দেশি হাঁসের ঝাক, উড়তে থাকে নানা প্রজাতির পাখি। এক অপরুপ দৃশ্য যা আপনার মন ভোলাতে বাধ্য করবেই।


আপনাকে যেতেই হবে ফিরে ফিরে বার বার। আরও আছে নদীর পাশে পাথর ফেলে রাখা পাথরঘাটা, তার পাশের ফেরিঘাট, দেখবেন ফেরি চলার দৃশ্য, চাইলে স্পীড বোট রিজার্ভ করে ঘুরে আসতে পারেন নদীর বুকে।


কি কি পাবেন?


বর্ষা কালে
মিঠা পানি, শক্ত বালির বিচ। যারা যাচ্ছেন ৩/৪ ঘণ্টার কমে উঠেন না পানি থেকে। পাশে মখমলের মত নরম ঘাস, সাথে ২.৫ কিলোমিটার কাশ বন। বর্ষা বেশি হলে চর ডুবে যাবে। আবার বর্ষা কমে গেলে দুর্দান্ত বিচ ভেসে উঠবে। নদীর চারপাশ জুড়েই মাছের ঘের, তাই ঝরো বাতাসে কচুরিপানা চরে এসে জমা হয়। আরও ৫/৬ টা চর আছে। একেকটা একেকরকম সুন্দর।


শরৎ কালে
নদীর মাঝখানে জেগে উঠা চরে ফুটবে ২.৫ কিলোমিটার বিশাল কাশবন।পানি থাকবে ক্রিস্টাল ক্লিয়ার, যতই ঝাপাঝাপি করেন পানি ঘোলা হবেনা। বালি ১ মিনিটে নিচে জমে যায়। নীচের বালি অনেক শক্ত, চোরাবালির কোন ভয় নেই।। বালির বিচ হবে ২০-৩০ ফিট।


শীতে
নদীর তীরে দিগন্ত জোড়া সর্ষে ক্ষেত, ক্ষীরাই, আলু, বাঙ্গি, মিষ্টি কুমড়া ক্ষেত, তিল/ তিশি ক্ষেত একেক চরে একেক টা। পাখি পাবেন হাজার হাজার। নদীর চারপাশের দারুন জীবন ধারা, মাছ ধরা, মাছ কেনা। আরও অনেক কিছু। বালির বিচ হবে ৩০-৪০ ফিট।


এ ছাড়াও যাবার পথে রাস্তার পাশেই লতব্দি মোড়ে কাতান শাড়ির শিল্প, গামছা শিল্প। কম দামে ভাল কাতান শাড়ি কিনতে চলে যান সরাসরি। কয়েকশ বছরের পুরানো বটগাছ, শদাসদি ভুইয়া বাড়ি (জমিদার বাড়ি), আড়াইহাজার চৌধুরী পাড়া রাজ বাড়ি (ছোট, ভাঙ্গা কিন্তু দারুন)। নদীর চারপাশে আরও ৫/৬ টা চর, একেকটার একেক রুপ। দারুন সব গ্রামীণ রাস্তা, সাইক্লিস্ট, বাইকার দের জন্য বেস্ট। রিকশা নিয়ে শুধু ঘুরতেই মন চাইবে।


কিভাবে যাবেন
সায়েদাবাদ থেকে অভিলাস পরিবহন বাস ছাড়ে। ভাড়া ৬৫ টাকা। এটা মদন পুর দিয়ে যাবে । অথবা গুলিস্তান থেকে দোয়েল /সদেশ পরিবহন এ মদনপুর ৪৫ টাকা নেমে আড়াইহাজার এর সি এন জি ৫০ টাকা।


আবার কলাবাগান থেকে মেঘলা পরিবহন বাস ছাড়ে। ভুলতা/গাউসিয়া। ভাড়া ৬৫ টাকা। গাউসিয়া নেমে একটু সামনে যেয়ে লোকাল সি এন জি তে আড়াইহাজার বাজার। ভাড়া ৩০ টাকা।


এছাড়া কুরিল ফ্লাইওভার এর ৩০০ ফিট ক্রসিং থেকে লোকাল ট্যাক্সি তে গাউসিয়া। ভাড়া ৮০ টাকা। গাউসিয়া নেমে একটু সামনে যেয়ে লোকাল সি এন জি তে আড়াইহাজার বাজার। ভাড়া ৩০ টাকা।


যেভাবেই যান, আড়াইহাজার থানার মোড় থেকে সি এন জি তে খাগকান্দা ঘাট ৪০ টাকা। ঘাটের সাথেই চউদ্দার চর দেখা যায়। লোকাল ট্রলার এ ২০ টাকা নিবে। তাছাড়া ট্রলার রিসার্ভ নিয়ে মন মত ঘুরতে পারেন। আকার, ধরন ভেদে ২০০-৪০০ টাকা ঘণ্টা নিবে।


কি কি খাবেন
আড়াইহাজারে পাবেন বেশ কিছু মজার খাবার। দস্তরদি মোরে চাচার মালাই চা, আড়াইহাজার বাজার এ জিয়ার ডাল পুরি, পাশেই আরেকটা দোকানে আলু পুরি (এক জন ১৪৫ টা খাবার রেকর্ড আছে), নোয়াপাড়া ব্র্যাক এর পাশে ডাল পুরি, গোপালদি বাজার এ নাজিমুদ্দিন হোটেল এর গরুর মাংশ না খেলে অনেক কিছুই অপূর্ণ থাকবে।


বিবার্তা/জাকিয়া/যুথি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com