
আল্পস পর্বতের কোলে ইতালির বিচ্ছিন্ন এক গ্রাম পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হলেও সেখানে বাস করা খুব কঠিন। শুধু সিঁড়ি ভেঙে অথবা হেলিকপ্টারে চড়ে সেখানে পৌঁছানো সম্ভব। এমন পরিবেশেই বাস করছে কয়েকটি পরিবার।
কোমের হ্রদ থেকে অনেক ওপরে কোডেরা নামের আল্পস পর্বতের শেষ বিচ্ছিন্ন গ্রামটি অবস্থিত। সেখানে মাত্র ৯ জন মানুষ পাকাপাকি বাস করেন। রেস্তোরাঁর মালিক এলেনা গুসমেরোলি ছোট সেই সমাজের স্তম্ভ হিসেবে পরিচিত।
তার রেস্তোরাঁয় পৌঁছানোর দুটি উপায় রয়েছে। কোমের হ্রদের তট থেকে প্রায় ২ হাজার ৬০০ সিঁড়ি ভেঙে দুই ঘণ্টা ধরে ওপরে উঠে সেখানে পৌঁছাতেই তিনি ভালোবাসেন।
এলেনা বলেন, 'উপত্যকায় আমার যে ওজন ও ক্রোধ জমা হয়, ওপরে উঠতে থাকলেই সেগুলো কমতে থাকে। সেই জায়গা এত সুন্দর! কোডেরায় পৌঁছালেই হালকা বোধ করি।'
হেলিকপ্টারে চেপেও সেখানে পৌঁছানো যায়। তবে প্রতিটি উড়ালের মাসুল প্রায় ৩০০ ইউরো। তাই শুধু নিজের ও গ্রামের অন্যান্যদের জন্য খাদ্য এবং অন্যান্য পণ্য আনার কাজেই তিনি সেই পরিষেবা ব্যবহার করেন।
মাত্র দুই মিনিটেই সব কিছু ৮২৪ মিটার উচ্চতায় কোডেরা গ্রামে পৌঁছে যায়।
গ্রামে পৌঁছানোর কোনো পাকা রাস্তা নেই। আলপ্স পর্বতের ওপর সারা বছর ধরে বিচ্ছিন্ন এমন জনপদ আর অবশিষ্ট নেই। পিসনোলিসের ছাগলগুলো পাহাড়ের কোলে চরে বেড়ায়। ৪৫ বছর বয়সী এই ব্যক্তি কোডেরার সবচেয়ে কনিষ্ঠ বাসিন্দা। তিনি পরিবর্তন চান।
তিনি বলেন, 'আমি রাস্তা চাই। গ্রামটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সেটা প্রয়োজন। আমাদেরকে জাদুময় নিসর্গ অথবা খ্রিস্টমাসের পোস্টকার্ড হিসেবে দেখলে চলবে না।'
কারণ বিচ্ছিন্ন এই জনপদের জীবনযাত্রার মধ্যে রোমান্টিকতার তেমন কোনো স্থান নেই। তার মতে, যাদের সেখানে পাকাপাকি থাকতে হয় না, শুধু তাদেরই এমনটা মনে হয়। তিনি মনে করেন, ‘‘পর্যটকদের জন্য এটা এক স্বর্গরাজ্য। কিন্তু আমার কাছে গ্রামটি মরে যাচ্ছে। কারণ সেখানে কীই বা করার আছে? কোনও কাজ করা যায়? একটা রাস্তা থাকলে পাথর ভাঙা যেত, কাঠ কাটা যেত। কিন্তু সেটা ছাড়া সেগুলো কীভাবে উপত্যকায় আনা সম্ভব? এখনকার মতো ঘাড়ে চাপিয়ে?’’
তা সত্ত্বেও পাহাড়ের প্রতি ভালোবাসার টানে ডেভিস নিজের ছাগলগুলোর কাছেই থাকতে চান। হেলিকপ্টার থেকে মালপত্র নামানো হয়েছে। এলেনাকে এবার সেগুলো রেস্তোরাঁয় নিয়ে যেতে হবে। রাস্তা না থাকায় ঘাড়ে করে ছাড়া অন্য কোনও উপায়ে পরিবহনের সুযোগ নেই।
তবে এখনও রাস্তা তৈরির কোনও পরিকল্পনা না থাকায় কোডেরা আরও বহুকাল পৃথিবীর দূর প্রান্তের এক প্রায় বিচ্ছিন্ন গ্রাম হিসেবে টিকে থাকবে।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]