শিরোনাম
ভ্রমণ নিয়ে পাওলো কোয়েলহোর টিপস
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০১৭, ১৪:৫৭
ভ্রমণ নিয়ে পাওলো কোয়েলহোর  টিপস
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ব্রাজিলের প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক পাওলো কোয়েলহো। লিখেছেন অসাধারণ সব উপন্যাস। তাঁর লেখা ‘আলকেমিস্ট’ একদিকে যেমন স্বপ্নময় এক বালকের স্বপ্নের পেছনে ছুটে চলার রুদ্ধশ্বাস কাহিনী আরেক দিকে ইউরোপ থেকে আফ্রিকা ভ্রমণের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার টানটান বর্ণনা। প্রায় ১০ কোটির উপরে বিক্রিত সেই উপন্যাসটির লেখক পাওলো কোয়েলহো ভ্রমণ বিষয়ে ৯টি টিপস দিয়েছেন।


তাঁর মতে শেখার সবচেয়ে ভালো উপায় হল ভ্রমণ।তার ভাষায়, ‘এখনও আমার সেই পথিক সত্তাটা আছে, তাই আমি যা শিখেছি তার কিছু কিছু এখানে বলতে চাই, আমার মত অন্য পথিকদের কাজে লাগবে।’


জাদুঘর পরিহার করুন: পরামর্শটা শুনতে অদ্ভুত লাগলেও আসুন একটু চিন্তা করে দেখিঃ আপনি যদি কোন অচেনা শহরে আসেন, তাহলে তার অতীত খোঁজার চেয়ে বর্তমানটাকে দেখাই কি বেশি আগ্রহের ব্যাপার না? অবশ্যই জাদুঘরের গুরুত্ব আছে, কিন্তু তার জন্য অনেক সময় ও বস্তুনিষ্ঠতার দরকার হয়- যদি আগে থেকে না জানেন যে জাদুঘরে কী দেখতে চান, তাহলে কিছু মৌলিক জিনিস দেখার অনুভূতি নিয়েই চলে আসতে হবে, যা পরে কিছু মনেও থাকবে না।


বারগুলোতে ঘুরুন: বার হচ্ছে সেই জায়গা যেখানে একটা শহরের প্রাণের দেখা মেলে, জাদুঘরে না। বার বলতে নাইটক্লাব বুঝাচ্ছি না, বরং ঐ সব জায়গা যেখানে সাধারণ মানুষ যায়, চা-পানি খায়, আবহাওয়া নিয়ে চিন্তা করে, আর গল্পগুজব করে। একটা পত্রিকা কিনে বসেন আর মানুষের স্রোতটাকে উপভোগ করেন। কেউ এসে কোন আলাপ শুরু করে দিলে তা যত ফালতুই হোক, তাতে যোগ দেন। একটা পথের সৌন্দর্য কখনোই তার প্রবেশপথ দেখে বিচার করা যায় না।


খোলামেলা হোন: সবচেয়ে ভালো ভ্রমণ গাইড হল এমন কেউ, যে ঐ জায়গাটাতে বাস করে, এর সম্পর্কে সব জানে, তার নিজের শহর নিয়ে গর্ব করে, কিন্তু কোন ট্রাভেল এজেন্সিতে কাজ করে না। রাস্তায় বের হন, একজন লোক দেখে তাকে কিছু জিজ্ঞাস করেন (গীর্জাটা কোন দিকে? পোস্ট অফিস কোন জায়গায়?)। এতে কাজ না হলে আরেকজনকে ধরেন– গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি দিনের শেষে আপনি খুব ভাল সঙ্গীই পাবেন।


ভ্রমণ কৌশল: একা একা ভ্রমণের চেষ্টা করেন অথবা যদি বিবাহিত হন তাহলে স্ত্রী/স্বামীর সাথে। ব্যাপারটা কঠিন, আপনার কিছু খেয়াল রাখার জন্য কেউ থাকবে না, কিন্তু শুধু এইভাবেই আপনার নিজের দেশটাকে পিছনে ফেলে আসা সম্ভব হয়। দল বেঁধে ঘুরতে যাওয়া মানে ভিনদেশে গিয়ে নিজের ভাষাতেই কথা বলতে বলতে দলের পোলাপাইন যা যা বলে তা করা, আর যে জায়গায় ঘুরতে এসেছেন তার চেয়ে নিজেদের আলাপেই বেশি মেতে থাকা।


তুলনা করবেন না: কোন কিছুই তুলনা করবেন না– দাম, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, জীবনযাত্রার মান, যাতায়াত ব্যবস্থা, কোন কিছুই না। অন্যদের চেয়ে আপনার নিজেদের জীবন ভাল, এই কথা প্রমাণ করার জন্য তো আর ভ্রমণ করছেন না- আপনার উদ্দেশ্য হল অন্যরা কীভাবে থাকে, আপনি কী শিখতে পারেন, তারা কীভাবে বাস্তবতার সাথে মানিয়ে চলে এই সব জিনিস দেখা।


মনে রাখবেন, আপনার কথা সবাই বুঝে: এখানকার ভাষাটা যদি নাও পারেন, ভয়ের কিছু নাই। আমি এমন অনেক জায়গায় গিয়েছি যেখানে আমার কোন কথাই তারা বোঝে না, কিন্তু ঠিকই দিক নির্দেশনা, পরামর্শ এমনকি প্রেমিকাও পেয়েছি। কেউ কেউ মনে করে একলা ঘুরলে রাস্তা হারিয়ে নিখোঁজ হয়ে যাবেন। খালি হোটেল কার্ডটা যত্ন করে পকেটে রাখবেন – একেবারেই কোন উপায় না থাকলে একটা ট্যাক্সি থামিয়ে ড্রাইভারকে কার্ডটা দেখিয়ে দিবেন।


বেশি কিছু কিনবেন না: যেসব জিনিস বয়ে বেড়াতে হয় না সেই খাতেই টাকা খরচ করেন। রেস্টুরেন্ট, বাস ভাড়া, ভাল একটা নাটকের টিকিট। এখনকার ইন্টারনেটের যুগে বোঝা বয়ে বেড়ানো ছাড়াই বসে বসে যেকোন জিনিস কেনা যায়।


এক মাসে পুরা দুনিয়া দেখে ফেলার চেষ্টা করবেন না: এক সপ্তাহে পাঁচটা শহর ঘুরার চেয়ে একটা শহরে তিন চার দিন থাকা অনেক ভালো। একেকটা শহর হচ্ছে খেয়ালি নারীর মতো। আপনার আহবানে সাড়া দিতে ও নিজেকে উন্মোচন করতে খানিকটা সময় নেয়।


প্রত্যেক ভ্রমণই একেকটা অ্যাডভেঞ্চার: হেনরি মিলার বলতেন রোমে গিয়ে দুই লাখ মানুষের হৈ হল্লার মধ্যে আবশ্যিকভাবে সিস্টাইন চ্যাপেল দেখার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো এমন একটা গীর্জা খুঁজে বের করা, যার নামও কেউ কোন দিন শুনেনি। সিস্টাইন চ্যাপেলে অবশ্যই যাবেন, কিন্তু রাস্তায়ও ঘুরাঘুরি করে দেখেন, গলিগুলোর ভিতরে ঢুকে দেখেন, অজানা কোন কিছু, যা হয়তো আপনার জীবনই পাল্টে দিতে পারে, খুঁজতে থাকার মধ্যে যে স্বাধীনতা আছে তার স্বাদ নিন।


বিবার্তা/জিয়া


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com