শিরোনাম
শুভ্র মেঘের দেশ সুইজারল্যান্ড
প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০১৭, ০৯:৪৮
শুভ্র মেঘের দেশ সুইজারল্যান্ড
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ইউরোপ দেশগুলোর মধ্যে সুইজারল্যান্ড সবচেয়ে সুন্দর দেশ। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ইউরোপের সব দেশকে হার মানায়। পাহাড়, পর্বত, লেক, ভ্যালি এবং এ্যালপাইন বনাঞ্চল ঘেরা এই দেশটিকে সৃষ্টিকর্তা যেন সব কিছু উজাড় করে দিয়েছেন। পাশাপাশি এ দেশে পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত ট্রেন, ট্রাম, বাস ও প্রাইভেট কার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে। এমনকি এই দেশের প্রধান প্রধান শহর থেকে ইউরোপের অন্য দেশগুলোর সঙ্গেও যোগাযোগ সাধন ঘটিয়েছে। তিন-চার ঘণ্টার মধ্যে জুরিখ, বার্ন ওলজান শহর থেকে ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, অস্ট্রিয়ার যে কোন শহরে পৌঁছানো যায়।


এক নজরে সুইজারল্যান্ড: সুইজারল্যান্ড ইউরোপের কেন্দ্রস্থল অবস্থিত বলা যায় ইউরোপের হৃৎপিণ্ড। সুইজারল্যান্ডের উত্তরে জার্মানি, দক্ষিণে ইতালি, পূর্বে অস্ট্রিয়া, পশ্চিমে ফ্রান্স, উত্তর-পশ্চিমে লন্ডন, দক্ষিণ-পশ্চিমে স্পেনের বার্সিলোনা শহর অবস্থিত। সুইজারল্যান্ডকে কেন্দ্র করে ইউরোপ ভ্রমণে সহজ হয়। কারণ প্লেনে দেড় ঘণ্টায় জেনেভা থেকে বার্সিলোনা বা লন্ডন পৌঁছানো সম্ভব। আবার জুরিখ থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে জার্মানির শহরগুলোতে বা অস্ট্রিয়ার ভিয়েতনামে পৌঁছানো যায়। লজান থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে ইতালির মিলান শহরে এবং চার ঘণ্টায় ফ্রান্সের প্যারিস শহরে পৌঁছানো যায়।


প্রধান শহর এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ: সুইজারল্যান্ডের প্রধান শহরগুলো হলো রাজধানী বার্ন, জুরিখ, জেনেভা, লজান, ইন্টারলাকেন, বাসেল, সেন্ট গ্যালেন, সেন্ট মারিজ ইত্যাদি। বার্ন, জুরিখ, লজান থেকে বিভিন্ন দেশে রেল যোগাযোগ আছে। ৩-৬ ঘণ্টার মধ্যে ফ্রান্সের প্যারিস, জার্মানির হামবুর্গ, মিউনিখ ফ্রাঙ্কফুর্ট, অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা, ইতালির শহর রো, মিলানেও ভেনিসে যাওয়া যায়।


আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর জুরিখ ও জেনেভা থেকেও দু-এক ঘণ্টার মধ্যে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাজধানী ও প্রধান শহরগুলোতে পৌঁছানো সম্ভব। সুইজের প্রধান শহরগুলো থেকে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্তের দর্শনীয় স্থানে পরিভ্রমণ করা যায়। তবে জেনেভা সংলগ্ন লজান থেকে ভ্রমণই সবচেয়ে সুবিধার। গ্লোন্ডেন পাস ট্রেনে ভ্রমণ করতে হলে লজান থেকে মনট্রক্স আসতে হয়, কারণ মনট্রক্স থেকে এই ট্রেন ছাড়ে এবং জি স্ট্যাড, জুইসিমেন বটারলোকেন ওষ্ঠ ও লজান প্রভৃতি শহরে যায়।


এই দেশের ট্রেন যোগাযোগ খুবই উন্নত, আধুনিক ও আরামদায়ক। দাঁড়িয়ে থাকার কোন সুযোগই নেই। কয়েক মিনিট অন্তর অন্তর ট্রেন। ট্রেন, বাস ও ট্রামে যাতায়াতের জন্য ৫০% কনসেশনে সুইজ পাস কেটে নিতে হয়। এতে পয়সার সাশ্রয় অনেক। এ ছাড়া জিনিসপত্র কিনতে হলে সস্তার বাজার দোকান মিগ্রোজ, ম্যানর, কুপ এবং সিএ্যান্ডএ। এখানে সব কিছু পাওয়া যায় রেলস্টেশন সংলগ্ন সব শহরেই আছে।


শহর-শহরতলির রাস্তাঘাট খুবই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। কয়েক হাত অন্তর অন্তর ময়লা, আবর্জনা, কাগজের টুকরো ফেলার ডাস্টবিন ঝুলানো আছে। তবে গৃহস্থালির ময়লা বড় পলিথিন প্যাকেট রেখে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দেয়া হয়।


ভ্রমণের দর্শনীয় স্থান: সুইজারল্যান্ডের চারদিকই মনোরম। প্রতিটি প্রান্ত চোখ জুড়ানো। ভ্রমণের ক্ষেত্রে দর্শনীয় স্থানগুলো বাছাই করাও মুশকিল। দর্শনীয় স্থানগুলো হলো মাউন্ড পিক ও গ্লোসিয়ার, মাউন্ট টিটলিস, জুনজফ্রো, সিলর্থন প্লিজ গ্লোবিয়া, ম্যাটার হর্ন গ্লোসিয়ার, গ্লোসিয়ার ৩০০০। এ ছাড়া রয়েছে লেক জেনেভা, লেক কুন, লেক জুরিখ, লেক নিউ চ্যাটেল। এদিকে রাইন ফলস, চিলন ক্যাসেল, স্নো ফলস উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান।


এ ছাড়াও প্রাকৃতিক মনোরম দৃশ্যে ভরপুর সারাদেশ। ভ্রমণ যেন শেষ হতে চায় না। সুইজারল্যান্ড ভ্রমণের জন্য অতুলনীয় আবহাওয়া চমৎকার। শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে ভরপুর সুইজারল্যান্ডে আলোকিত মানুষের উৎপত্তি। তাদের ব্যবহার অনুকরণীয়। শান্তি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সুইজারল্যান্ডে ভ্রমণপিপাসুরা নিরিবিলি থেকে শুধু আনন্দ উপভোগ করে তা নয়, দেশটি দেখে অনেক কিছু জানা ও শেখার অভিজ্ঞতা অর্জন করা সহজ। দেশটিতে নেই কোন সন্ত্রাসী-জঙ্গী বা হানাহানির ঝুট ঝামেলা। ছেলে মেয়ে বা গোটা পরিবার নিয়ে সুইজারল্যান্ড ভ্রমণের জন্য সব সময় হাতছানি দেয়। তবে ভিসা পেলে আর অপেক্ষা নয়, সময় ও সুযোগ থাকলে ঘুরে আসুন সুইজারল্যান্ড।


বিবার্তা/জিয়া


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com