শিরোনাম
১০৮ কক্ষের দোতলা মাটির বাড়িতে যা দেখবেন
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২১, ০৯:১১
১০৮ কক্ষের দোতলা মাটির বাড়িতে যা দেখবেন
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

গ্রামের দৃশ্য চোখে ভেসে উঠতেই নিশ্চয়ই মাটির বাড়ির কথা মনে পড়ে যায়! দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো মাটির বাড়ি দেখা যায়। শীত, গ্রীষ্ম বর্ষা সবসময় বসবাসের জন্যই আরামদায়ক মাটির বাড়ি।


যদিও মাটির বাড়ি সাধারণভাবেই তৈরি করা হয়ে থাকে। তবুও তা যুগ যুগ ধরে টিকে থাকতে পারে। তেমনই দেশের এক ঐতিহাসিক মাটির আছে নওগাঁয়। তিনি যুগেরও বেশি সময় ধরে টিকে আছে ১০৮ কক্ষের দোতলা মাটির এই বাড়িটি। দেশের সবচেয়ে বড় মাটির বাড়ির তকমা অর্জন করেছে এটি।


নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের আলিপুর গ্রামে এই মাটির বাড়িটির অবস্থান। ৩৪ বছর আগে তৈরি করা হয় ১০৮ কক্ষের এই মাটির বাড়িটি। বর্তমানে এই বাড়িটি দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা ভিড় জমান সেখানে।


১৯৮৬ সালে তিন বিঘা জমির ওপর এই মাটির বাড়ি তৈরি হয়। এর দৈর্ঘ্য ৩০০ ফুট ও প্রস্থ ১০০ ফুট। এটি দেখতে অনেকটা রাজপ্রাসাদের মতো। ৩৩ বছর আগে মাটির দোতলা বাড়িটি নির্মাণ করেন দুই ভাই সমশের আলী মণ্ডল ও তাহের আলী মণ্ডল।


তারা খুবই শৌখিন মানুষ ছিলেন। তারাই প্রথম ১০৮ কক্ষের মাটির বাড়িটি তৈরি করেছিলেন। আজ তাদের কেউই বেঁচে নেই। তবে এই বাড়িটি এখনো তাদের স্মৃতি ধরে আছে। বাড়িটিতে ৯৬টি বড় ও ১২টি ছোট কক্ষ রয়েছে।


৩৪ বছর আগে মাটির দোতলা এই বাড়িটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছিলো প্রায় এক বছর। প্রায় ৮০ জন শ্রমিকের চেষ্টায় নির্মিত হয় বিলাসবহুল এই মাটির বাড়িটি। বাড়িসহ আশেপাশে তাদের মোট ২১ বিঘা জমি আছে।


জানা যায়, বাড়িটি তৈরির জন্য একটি বিশাল পুকুর খনন করা হয়েছিলো। পুকুরের মাটি ব্যবহার করেই দোতলা এই বাড়ি নির্মাণ করা হয়। মাটির বাড়ি বানাতে মাটি, খড় ও পানি ভিজিয়ে কাদায় পরিণত করতে হয়। তারপর ২০-৩০ ইঞ্চি চওড়া দেয়াল দিতে হয়।


বিশেষ করে মাটির বাড়ির দেওয়াল তৈরি করা বেশ সময়সাপেক্ষ হয়ে থাকে। কারণ একসঙ্গে বেশি উঁচু করে মাটির দেওয়াল তৈরি করা যায় না। প্রতিবার এক থেকে দেড় ফুট উঁচু করে দেয়াল বানাতে হয়। কয়েকদিন পর শুকিয়ে গেলে এর ওপর একই উচ্চতার দেওয়াল গড়ে তোলা যায়।


এই বাড়িটি এতোটাই বড় যে, এর চারপাশে পায়ে হেঁটে একবার ঘুরতে সময় লাগে অন্তত ১০ মিনিট। ১০৮ কক্ষের এই বিশাল বাড়িতে মূল ফটক আছে সাতটি। তবে প্রতিটি ঘরেই আছে একাধিক দরজা। দোতলায় ওঠার সিঁড়ি আছে ১৮টি।


তবে মজার বিষয় হলো, চাইলে যেকোনো একটি দরজা দিয়েও যেতে পারবেন ১০৮টি ঘরেই। উপর তলায় যাওয়ার জন্য আছে মাটির সিঁড়ি। এই বাড়িটি দেখে কারো আন্দাজ করার উপায় নেই যে এটি মাটির তৈরি।


স্থানীয়রা মনে করেন, সরকারিভাবে উদ্যোগ নেয়া হলে এই বাড়িটি পর্যটনকেন্দ্র হতে পারে। বাড়িটি দেখতে এসে পর্যটকরা রাতে থাকতে চাইলে উপজেলা প্রশাসন থেকে ডাকবাংলোয় থাকতে হয়।


বিবার্তা/বিদ্যুৎ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com