শিরোনাম
নাফ নদীর মাঝেই বিশেষ পর্যটন স্পট
প্রকাশ : ০৯ জানুয়ারি ২০১৭, ১০:৩৬
নাফ নদীর মাঝেই বিশেষ পর্যটন স্পট
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

নদীতে ঝুলন্ত ব্রিজ, আর ব্রিজ পার হলেই বিশেষ ইকো ট্যুরিজম, থাকছে ক্যাবল কার, রাত্রিযাপনের জন্য ইকো-কটেজ ও রিসোর্ট, নদীর মধ্যে ভাসমান রেস্টুরেন্ট, ফান লেক, ওয়াটার স্পোর্টস, নদীর পানির মধ্যে অ্যাকুয়া পার্কসহ নানাবিধ পর্যটন সুবিধা নিয়ে টেকনাফের নাফ নদীর জালিয়ার দ্বীপে গড়ে তোলা হচ্ছে ‘নাফ ট্যুরিজম পার্ক’। দীর্ঘদিন ধরে লবণ ও চিংড়ি চাষের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসা দ্বীপে আগামী দুই তিন বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটির (বেজা) আওতায় গড়ে তোলা হচ্ছে এই বিশেষ পর্যটন স্পট।


সেন্টমার্টিন যাওয়ার সময় যে ঘাট থেকে জাহাজে উঠা হয় সেই ঘাটের বিপরীত পাশে নদীর মধ্যে থাকা দ্বীপটিতে গড়ে তোলা হচ্ছে পর্যটনের নতুন সম্ভাবনার এই দুয়ার। টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া এলাকার এই স্পটে ডিজাইন বিল্ড ফিন্যান্স অপারেট অ্যান্ড ট্রান্সফার (ডিবিএফওটি) পদ্ধতিতে ৫০ বছর মেয়াদে অনন্য একটি পর্যটন স্পট গড়ে তোলা হবে জানিয়ে বেজা’র চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠান দিয়ে ২৭১ দশমিক ৯৩ একর আয়তনের দ্বীপটিতে সম্ভাব্যতা জরিপ চালিয়েছি। সেই অনুযায়ী পর্যটনের জন্য একটি গাইডলাইন ঠিক করেছি। আমরা ৫০ বছর মেয়াদে বিনিয়োগ করার জন্য আগ্রহীদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহবান করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী দুই তিন বছরের মধ্যে তা চালু করা যেতে পারে।’


তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন পর্যটন স্পটের মধ্যখানের এলাকা টেকনাফে নাফ নদীর মধ্যখানের এই দ্বীপটিতে যাওয়ার জন্য নদীর তীর থেকে দ্বীপ পর্যন্ত একটি ঝুলন্ত ব্রিজ করা হবে। আর দ্বীপের নির্ধারিত জায়গায় আমরা গাড়ির পার্কিং স্পেস নির্মাণ করে দেব। এছাড়া দ্বীপটিতে কিছু মাটি ভরাটের কাজও করে দেয়া হবে। পরবর্তীতে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান পুরো দ্বীপটিকে নিয়ে একটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করবে। সেই প্ল্যান আমাদের অনুমোদনক্রমে বাস্তবায়ন করবে। আর একটি আধুনিক পর্যটন শিল্পের জন্য যা যা প্রয়োজন সবকিছুই থাকবে এই স্পটে।’


বেজা সূত্রে জানা যায়, ঝুলন্ত ব্রিজ, রিসোর্ট, ক্যাবল কার, ওশনেরিয়াম, ভাসমান রেস্টুরেন্ট, ইকো কটেজ, কনভেনশন সেন্টার, সুইমিং পুল, ফান লেক, অ্যাকুয়া পার্ক, ফিশিং জেটি, এমিউজমেন্ট পার্ক, শিশু পার্ক, ওয়াটার স্পোর্টস ও ক্রুজ লাইন সুবিধা থাকছে এই পর্যটন স্পটে।


এই দ্বীপটিতে আগে লবণ ও চিংড়ি ঘেরের চাষ হতো জানিয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ‘সরকার পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে নাফ নদীর মধ্যখানের এই দ্বীপটিতে ট্যুরিজম ডেভেলপ করতে চায়। এ জন্য বেজাকে পুরো দ্বীপটি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তারা জেটিসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শুরু করেছে।’


অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নাফ নদী প্রাকৃতিকভাবে অনন্য সুন্দর একটি নদী। আর সেই নদীর দ্বীপে পর্যটন স্পট করায় দেশি বিদেশী অনেক পর্যটক আসবে এবং এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। জালিয়ার দ্বীপ প্রকাশ জাইল্যার দ্বীপে গত সাত বছর ধরে চিংড়ি চাষ ও লবণের চাষ করে আসছেন টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইউসুফ মনো। তিনি বলেন, দ্বীপের মধ্যে প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন লবণ ও চিংড়ি চাষ করে আসছে। এখন সরকার এখানে পর্যটন স্পট করবে। নেটং পাহাড় থেকে দ্বীপ পর্যন্ত হবে ক্যাবল কার, আর দ্বীপে যাওয়ার জন্য হবে ঝুলন্ত ব্রিজ। পর্যটনকে ঘিরে এই এলাকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি হবে।


পুরো কক্সবাজর ঘিরে উন্নয়ন পরিকল্পনা হচ্ছে জানিয়ে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ বলেন, ‘টেকনাফের নাফ নদীর জালিয়ার দ্বীপে বিশেষ একটি ট্যুরিজম স্পট হচ্ছে। এছাড়া সাবরাং এলাকায় বিদেশি পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে আরো একটি মেগা প্রকল্প নেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। কক্সবাজার ঘিরে আরও কিছু উন্নয়ন পরিকল্পনা সমন্বয়ের মাধ্যমে নেওয়া হলে পুরো জোনটি বিশেষ ট্যুরিজম হিসেবে গড়ে উঠতে পারবে।’


তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীকে ঘিরেও আমরা উন্নয়ন পরিকল্পনা নিচ্ছি।


উল্লেখ্য, সরকার বেজা’র মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলছে। চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও মিরসরাইয়ে দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। একইসাথে পর্যটনের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনা করে কক্সবাজার এলাকায় আরও কয়েকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে।


বিবার্তা/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com