শিরোনাম
ঘুরে আসুন নীল জলের অপূর্ব নদী ‘লালাখাল’ থেকে
প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০১৭, ১৭:৩৫
ঘুরে আসুন নীল জলের অপূর্ব নদী ‘লালাখাল’ থেকে
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

শীতকাল শুরু। সেইসাথে নতুন বছরের সূচনা। তাই শীত আর নতুন বছর ভালোভাবে উপভোগ করতে দূরে কোথা বেরিয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে অনেকের হাতে। কিন্তু কোথায় বেড়াবেন? ভেবে পাচ্ছেন না! বেড়ানোর লিস্টে রাখতে পারেন সিলেট। কিন্তু মাধবকুন্ড বা চা বাগান দেখতে নয়। দেখে আসুন সিলেটের অপরূপ সুন্দর নীল জলের নদী ‘লালাখাল’।


এই জায়গাটি বেড়ানোর এখনই উপযুক্ত সময়। শীতের এই সময়টায় আপনি পাবেন চমৎকার নীল জলরাশি। বর্ষার স্রোত নেই এখন। তাই পানি শান্ত, স্বচ্ছ। একেবারে যেন নদীর তল দেখা যায় উপর থেকে। যারা সিলেট যাননি তারা ভাবতেও পারবেন না যে পানি এত স্বচ্ছ হতে পারে! আর এই সময় বোনাস হিসেবে দেখতে পাবেন হরেক রকম শীতের পাখি।


লালাখাল সিলেট শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে জৈন্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত। ভারতের চেরাপুঞ্জির ঠিক নিচেই লালাখালের অবস্থান। চেরাপুঞ্জি পাহাড় থেকে উৎপন্ন এই নদী বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। প্রকৃতিকে একান্তে অনুভব করার জন্য স্থানটি বেশ উপযোগী। পাহাড়ে ঘন সবুজ বন, নদী, চা-বাগান ও নানা জাতের বৃক্ষের সমাহার লালাখালজুড়ে। পানি আর প্রকৃতির সাথে মিশে যাওয়া এখানকার মানুষের জীবনযাত্রাও আপনাকে দেবে নতুন করে বাঁচার প্রেরণা।



এছাড়া দেখতে পাবেন আদিবাসিদের জীবনযাত্রা। এলাকাটিতে এখনো সেভাবে পর্যটকদের সমাগম হয়নি। তাই প্রকৃতির রূপ এখনো অক্ষুণ্ণ আছে। রাতের লালাখাল আরেক অপার্থিব সৌন্দর্যের পসরা। পূর্ণিমার দিনক্ষণ দেখে যেতে পারেন। জ্যোৎস্না ধোয়া নদীর রূপ সারাজীবন মনে রাখার মত। আর যদি পূর্ণিমায় নাও যেতে পারেন তবুও লালাখাল হতাশ করবে না আপনাকে। অগুনতি তারারা স্বাগত জানাবে আপনাকে।


নদী থেকে দূরে পাহাড় দেখা যায়। দেখলে যতটা কাছে মনে হয়, আসলে তত কাছে না। পাহাড়গুলোকে দেখলে মনে হয়, কেউ যেন নিজ হাতে থরেথরে একের পর একটি করে সাজিয়ে রেখেছে। এখানে পাহাড়ের গায়ে মেঘ জমা হয়। একটু কাছ থেকে দেখা যায়, মেঘেরা দল বেঁধে পাহাড়ের গায়ে ঠেস লাগিয়ে থেমে থাকে। আবার কখনো দুই পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে সবার অলক্ষ্যে হারিয়ে যায়।


কখনো মেঘ বেশি জমা হলে এখানে বৃষ্টিপাত বেড়ে যায়। নদী আর পাহাড় মেলবন্ধনে নদীর টলটলে স্রোতস্বিনী জল আর পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা ঝর্ণাধারা, এ যেন প্রকৃতির এক মায়াময়ী রূপের বাহানা। নদীর জলে নৌকার ওপর বসে পাহাড় দেখার সৌর্ন্দযই আলাদা। দল বেঁধে এখানে এলে সুবিধা বেশি, কারণ নৌকা ভাড়াটা কমে যায়। ভ্রমণে আনন্দও উপভোগ করা যায় এবং সবাই মিলে হৈচৈ করে আনন্দ ভাগাভাগি করা যায়।



যেভাবে যাবেন
লালাখালে যেতে হলে সিলেটের শিশু পার্কের সামনে থেকে লেগুনা অথবা জাফলংয়ের বাসে চেপে সিলেট-তামাবিল সড়ক ধরে যেতে হবে সারিঘাট। সিলেট আর জাফলং মাঝামাঝি এ স্থানটির নাম সারিঘাট। সড়ক পথে যেতে চাইলে মাইক্রোবাস বা কার ভাড়া নিলে ভালো হয়। তা ছাড়া সিলেট শহর থেকে বাস, লেগুনায় সারিঘাট গিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া নিতে পারেন। নৌপথে যেতে চাইলে আগে সারিঘাট পর্যন্ত একই নিয়মে বাস, লেগুনায় গিয়ে নৌযান ভাড়া নিতে হবে। ফেরার পথে এখান থেকে বাসে কিংবা লেগুনায় আসতে পারবেন। রাত ৮টা নাগাদ যানবাহন পাওয়া যাবে।


যেখানে থাকবেন
লালাখালে একমাত্র আবাসন ব্যবস্থা নাজিমগড় রিসোর্ট। আগে থেকে যোগাযোগ করে যাওয়া ভাল। নাহলে রিসোর্টে রুম নাও মিলতে পারে। তবে বেশিরভাগ মানুষই সিলেট শহরে থাকেন, সেখান থেকে দিনে দিনে বেড়িয়ে আসেন। সেক্ষেত্রে সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরতি পথে রওনা দেয়া ভাল। কারণ সন্ধ্যার পর নৌকা পাওয়া যায় না।


বিবার্তা/জাকিয়া/যুথি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com