শিরোনাম
ঘুরে আসুন মুছাপুর ক্লোজার
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০১৭, ০৮:৪৩
ঘুরে আসুন মুছাপুর ক্লোজার
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ সীমানায় বঙ্গোপসাগরের একেবারে কোল ঘেঁষে মুছাপুর ক্লোজার ও ছোট ফেনী নদীর অবস্থান। সাগরে যখন জোয়ারের পানি উতলে উঠে তখন অনন্য এক সৌন্দর্য বিকশিত হয় মুছাপুর ক্লোজারের ছোট ফেনী নদীতে।


তটরেখায় আছড়ে পড়ে ছোট-বড় ঢেউ। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং তিন কিলোমিটার প্রস্থের সমুদ্র সৈকতের যেকোনো জায়গায় দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার সুযোগ রয়েছে।


একটু দাঁড়ালেই হারিয়ে যাবেন ঢেউয়ের তালে তালে দুলতে থাকা জেলে নৌকার বহর, সাগরে জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্যের মাঝে।


এখানে সবুজ প্রকৃতি, বণ্যপ্রাণী, পাখির ঝাঁক, ফরেস্ট বাগান, ফেনী নদীর মাঝে ক্লোজার, ২৩ ভেন্ট রেগুলেটর, জেলেদের উচ্ছ্বাস আর সাগরের বিস্তীর্ণ জলরাশি মিলে নয়াভিরাম এক সৌন্দর্যের জগৎ সৃষ্টি হয়েছে। প্রকৃতির অপরূপ সৃষ্টি এই মুছাপুর ক্লোজার পর্যটনের সম্ভাবনাময় দ্বার খুলে দিতে পারে।


বর্তমানে এখানে নোয়াখালী ও পার্শ্ববর্তী ফেনী জেলার হাজার হাজার প্রকৃতিপ্রেমীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়।


সকাল হলেই বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শণার্থীরা মোটরসাইকেল, সিএনজি, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, পিকআপ নিয়ে চলে আসে মুছাপুর ক্লোজারের ছোট ফেনী নদীর তীরে। বিভিন্ন কলেজ ও বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা বনভোজনের জন্য মাইক, বাদ্যযন্ত্র নিয়ে আসে। নব দম্পতিরা নদীর পাড়ে ও ফরেস্ট বাগানে প্রকৃতিক সৌন্দর্যের জগতে হারিয়ে যায়।



যেভাবে যাবেন: নোয়াখালী জেলা শহর থেকে যেকোনো গাড়িতে প্রথমে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট বাজারে চলে আসতে হবে। বসুরহাট বাজার থেকে মুছাপুর ক্লোজার পর্যন্ত দুই-তিনটি পাকা সড়ক রয়েছে। ওই সড়কগুলোর যেকোনো একটি দিয়ে চলে যেতে পারেন মুছাপুর।


বিচ্ছিন্ন এ মুছাপুর ক্লোজারের প্রাণকেন্দ্র থেকে ট্রলারে দক্ষিণে যাওয়ার সময় দেখা যায় বনবিভাগের ফরেস্ট বাগানটি দাঁড়িয়ে আছে। বাড়তি এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের শোভাবর্ধন করে পর্যটন কেন্দ্র সৃষ্টির আশায়। চারপাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বিভিন্ন রকমের বনজ গাছ নিয়ে।


এইখানে আসলে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কোলাহল, বিশাল সমুদ্র সৈকত, সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তসহ নানান মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যায়। পর্যটক ও প্রকৃতিপ্রেমীরা ইচ্ছা করলে এ চরে এসে ঘুরে যেতে পারেন।


মুছাপুর ফরেস্ট বনাঞ্চল: মুছাপুর ক্লোজার এলাকায় চরের মধ্যে দক্ষিণ মুছাপুর মৌজায় ৮২১ দশমিক ৫৭ একর, চরবালুয়া (দিয়ারা) মৌজায় এক হাজার ৮৬১ দশমিক ১০ একর ও চরবালুয়া মৌজায় ৬শ দশমিক ১৫ একর সর্ব মোট তিন হাজার ২শ ৮২ দশমিক ৮২ একর বনবিভাগের জমি জুড়ে মনোরম বনাঞ্চল রয়েছে।


এর মধ্যে মুছাপুর ফরেস্ট বাগানটি অন্যতম। এই ফরেস্ট বাগানে রয়েছে ঝাউ, কেওড়া, পিটালী, খেজুর, লতাবল, গেওয়া, শনবলই, বাবুলনাটাই, আকাশমনিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মূল্যবান গাছ।


এখানে রয়েছে ঘুঘুসহ বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির পাখির অভয়স্থল। শীতের মৌসুমে সুদুর থেকে আসা অতিথি পাখিরাও এখানে আসতে ভুল করে না। এখানে পরিকল্পিতভাবে ফরেস্ট বাগানটি শুরু হয় ১৯৬৯ সালে।


কোনো হিংস্র পশুর ভয় না থাকলেও বনে রয়েছে শিয়াল, বনবিড়াল ও সাপসহ বিভিন্ন প্রজাতির পশু ও পাখি। তবে সাপগুলো নিশাচর। এছাড়া বন্য মহিষ, গরু, ভেড়াও দেখা যায়। এই বাগানের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া সরু রাস্তা ধরে হাঁটতে হাঁটতে একটু ভেতরে প্রবেশ করলে মনে হবে এ যেন আরেকটি ভূবন। বনের ভেতরেই প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট একখণ্ড শীতল ছায়াবিশিষ্ট মাঠ।


ইচ্ছে করলে এখানে একটু জিরিয়ে নেয়া যায়। পাশে রয়েছে বিশাল সমুদ্র সৈকত। পর্যটক ও প্রকৃতিপ্রেমীরা ইচ্ছা করলে এ মুছাপুর ক্লোজারে এসে ভ্রমণ উপভোগ করতে পারেন। দেশি-বিদেশি ভ্রমণপিপাসুদের তৃষ্ণা মেটাতে মুছাপুর ক্লোজার একটি মনোরম অবকাশ কেন্দ্র।


বিবার্তা/জিয়া


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com