শিরোনাম
ইফতারের ভিন্নতা দেশে দেশে
প্রকাশ : ১১ মে ২০১৯, ১৭:১৪
ইফতারের ভিন্নতা দেশে দেশে
আদনান হোসাইন সৌখিন
প্রিন্ট অ-অ+

একজন রোজাদারের সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত ইফতারের সময়। ইফতারির মাধ্যমে একজন রোজাদার তার রোজা শেষ করেন। তবে সব খানে বা সব দেশে কিন্তু ইফতার এক না। ইফতারির রকম নিয়ে সারা বিশ্বে রয়েছে ভিন্নতা।


তবে কিছু কিছু খাবার সব দেশেই ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে অন্যতম খেজুর। ইফতারির পাতে এ পণ্য থাকবেই। রাসূল হযরত মুহাম্মদ (সা.) খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করতেন নতুবা কয়েক ঢোক পানি পান করতেন। এখনো ইফতার শুরু হয় পানি বা খেজুর দিয়ে। কিন্তু সময়ের ক্রমবিবর্তনে মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে ইফতার উৎসবে পরিণত হয়েছে। আর এর মাধ্যমেই ইফতারিতে যুক্ত হয়েছে বিচিত্র ধরনের খাবার।


বিশ্বের কয়েকটি দেশের ইফতারির বৈচিত্র্য তুলে ধরা হলো-


সৌদি আরব : সৌদি আরবের ইফতারিতে হালুয়ার নানা রকম থাকে। কোনাফা, ত্রোম্বা, বাছবুচা- এসব হালুয়ার নাম। সাম্বুচা ইফতারের আরেকটি খাবার। দেখতে ঠিক সমুচার মতো। এর ভেতর থাকে মাংসের কিমা। তবে মরিচ থাকে না। এছাড়া থাকে সালাতা (সালাদ), সরবা (স্যুপ), জাবাদি (দই), লাবান, খবুজ (ভারি ছোট রুটি) বা তমিজ (ডিস এন্টেনার মতো বড় রুটি)। সৌদিরা ঘরে বাইরে বড় এক প্লেটের ওপর পলিথিন বিছিয়ে খাবার রেখে সবাই মিলে ইফতার সম্পন্ন করে।


দুবাই : এখানকার ইফতারিতেও থাকে নানা রকম মুখরোচক খাবার। রুটি, মাংসের চপ (যা ভেড়ার মাংস দিয়ে তৈরি-স্থানীয় ভাষায় ওউজি), মসুর ডালের স্যুপ, সালাদ ইত্যাদি থাকে। তাদের এই আয়োজনকে সম্মিলিতভাবে 'মেজে' বলা হয়।



মিসর : দেশটির রাস্তায় রাস্তায় ছোট ছেলেদের লেটুসপাতা বিক্রি করতে দেখা যায়। সেখানকার ইফতারে এ পাতার খুব সমাদর। তাদের প্রধান মেন্যু কোনাফা ও কাতায়েফ। এগুলো মূলত কেক জাতীয় খাদ্য। আটা, চিনি, মধু এবং বাদাম দিয়ে তৈরি হয়।


সিরিয়া : সিরীয় খাবার হালুয়া। আরব দেশগুলোর মধ্যে ভালো হালুয়া তৈরি করেন সিরিয়ার লোকেরা। তারা এ খাবারকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। কত নকশার হালুয়া যে হতে পারে তা না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। তারা ইফতারের পর দিজাজ সয়াইয়া, খবুজ, সরবা খান।



ইরান : খুব অল্প আহারে ইফতার সারেন ইরানিরা। তারা সাধারণত চা (দার্জিলিং), রুটি, মিষ্টি, পনির, খেজুর, হালুয়া দিয়ে ইফতার সারেন। পরিবারের সবাই একসঙ্গে মিলে খান।


ফিলিস্তিন : এখানকার ইফতারির সঙ্গে বাঙালিদের বেশ মিল রয়েছে। তবে পুরনো জেরুজালেমের বাসিন্দারা চিরায়ত ঐতিহ্য অনুযায়ী তাদের জনপ্রিয় পানীয় তামারিন জুস পান করেন।


পাকিস্তান : খেজুর ও পানি দিয়ে তাদের ইফতার শুরু হয়। তবে তাদের আয়োজনে থাকে হরেক রকমের খাবার-চিকেন রোল, স্প্রিং রোল, শামি কাবাব এবং ফলের সালাদের পাশাপাশি মিষ্টি ও ঝাল জাতীয় খাদ্য, জিলাপি, সমুচা, নিমকি।



ভারত : ভারতের ইফতারিতে রয়েছে নানা বৈচিত্র্য। সেখানকার একেক রাজ্যে ইফতারির একেক রকম পদ হয়। হায়দ্রাবাদের লোকজন রোজা ভাঙেন হালিম দিয়ে। তামিলনাড়ু ও কেরালায় ইফতার হয় ননবো কাঞ্জি দিয়ে। এটি তৈরি হয় ভাত, খাসির মাংস, সবজি এবং মসলা দিয়ে। পাশাপাশি থাকে বন্ডা, পাকুড়া এসব খাবার।


ইন্দোনেশিয়া : এখানে ইফতারকে বলা হয় বুকা। অর্থ শুরু করা। ইফতারের প্রধান খাদ্য কোলাক, সেন্ডল। এগুলো নারিকেল দুধ ও মসলা সহযোগে তৈরি মিষ্টি খাবার।


মালয়েশিয়া : রোজা ভাঙা হয় শুকনো খাবার বা খেজুর দিয়ে। ইফতারে খাওয়া হয় নাসি আয়াম, নাসি লেমাক, লাকসা, আয়াম পারসেক। এই খাবারগুলো চাল, নারিকেল, মসলা ও আখের রস দিয়ে তৈরি হয়।



ব্রুনেই দারুসসালাম : ইফতারকে বলে সুংকাই। আয়োজন করা হয় মসজিদে মসজিদে। রীতি অনুযায়ী বেদুক (এক ধরনের ঢোল) বাজিয়ে সুংকাই শুরু হয়।


তুরস্ক : 'রমজান কিবাবি' খাদ্যটির ইফতার হিসেবে আলাদা কদর রয়েছে। এটা বিশেষ ধরনের কাবাব। রোজা ভাঙতে এখানে শরবতের ব্যবহার বেশ পুরনো।


এছাড়া মুসলিম অনন্য দেশগুলাতে ইফতারে রয়েছে হরেক রকম খাবার , যা শুধু পেটকে ঠাণ্ডা করেন না , তৃপ্তি এনে দেয় মনেও। ইন্টারনেট অবলম্বনে।


বিবার্তা/আদনান/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com