শিরোনাম
‘অপার স্নেহমাখা একটি মানবিক উপাখ্যান’
প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৯:০২
‘অপার স্নেহমাখা একটি মানবিক উপাখ্যান’
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ছেলেটির নাম মো. রবিউল ইসলাম। বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায়। সে ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী। থাকে মাস্টার দা সূর্যসেন হলে। ছেলটির দুইটি চোখের দৃষ্টিশক্তি একেবারেই শূণ্য। আমরা যাকে বলি অন্ধত্ত্ব। কিন্তু অন্ধত্ত্বের এই প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে যেতে সে স্বপ্ন দেখে। গল্প গাঁথে সে স্বপ্নীল ভবিষ্যতের। এখানেই সবথেকে বড় বাঁধা। ঢাকায় থাকা, ভর্তির পরে পরীক্ষা, সবমিলিয়ে নিজেকে টিকিয়ে রাখা; এ এক অনন্য সংগ্রামের। পরিবারের পক্ষে রবিউলের উচ্চ শিক্ষার স্বপ্নপূরণে সারথী হবার কোনো সুযোগ নেই। তাতে কি? বাস্তবতায় রবিউলরা হেরে যেতে পারে না। প্রচণ্ড মানসিক উদ্যামই যে তার বড় শক্তি। অন্ধত্বের অমনিশা যেখানে দমাতে পারেনি সেখানে দারিদ্র্যতা কখনো জীবন সংগ্রামের শেষ হতে পারে না।


সমস্যা সমাধানে রবিউল একবুক আশা নিয়ে এসেছিল ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের কাছে।


বিশ্বাস করুন একটুও বাড়িয়ে বলছি না। উনাকে যতই দেখছি ততই অবাক হচ্ছি। যেন মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক রাষ্টের স্বপ্ন পূরণে তার নিরন্তর পথ চলা। আমাদের তরুণ প্রজন্ম তো এটাই চায়।


তিনি তখনো উপমন্ত্রী হননি। সবেমাত্র সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ঢাকায় এসেছেন। শপথও নেননি। পরেরদিন সকাল ৮ কিংবা ৮টা ২০ মিনিটের কোনো এক সময় আমার মোবাইলে একটি কল। রিসিভ করতেই ওপার থেকে বললেন তোমাকে একটা ছেলের মেবাইল নাম্বার দিচ্ছি। যোগাযোগ করে দ্রুত আমাকে বিস্তারিত জানাও। বিষয়টা অত্যন্ত মানবিক। ফোনটা শেষ হতেই ছেলেটির নাম্বার আসলো। কল দিয়ে পরিচয় দিতেই ওপার থেকে বললো আমি রবিউল। ওর বিস্তারিত তো আগেই বলেছি। কথা শেষ করেই আমি বাইক নিয়ে ছুটলাম ঢাবির সূর্যসেন হলের দিকে। হলের ছোটভাই সোহেল আরমান আর আমি (অমিত কুমার বসু) ওর রুমে গেলাম। রুমমেট আর পাশের ছাত্রদের সাথে কথা বলে বাস্তবতা যে আরো ভয়ানক তা বুঝলাম। বিস্তারিত তাকে জানলাম। উনি তৎক্ষণাৎ ধানমন্ডি ৩/এ তে আসতে বললেন। আসার সাথেই রবিউলের সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলেন। রবিউলকে কল দিয়ে বললাম তোমার সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে। ও খুব আবেগি হয়ে গিয়েছিল। কেননা পরেরদিনই ছিল তার স্বপ্নপূরণে এগিয়ে যাবার একটি ধাপের শেষ দিন। আমি ওকে জিজ্ঞাসা করলাম, প্রিয় নেতার সাথে তোমার যোগাযোগ হলো ক্যামনে? ও বললো, আমি উনাকে মোবাইলে কল দিয়ে কথা বলেছিলাম। ভাবলাম দেখা নেই, জানা নেই, উড়ো কথার ওপরে বিশ্বাস রেখে মানুষের জন্য মানবিক চিন্তা তো সবাই করে না! কিন্তু এমনটা করা নেতৃত্বের জন্যই তো এই প্রজন্মের পথ চাওয়া।



আমি আরো অবাক হলাম উপমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার ঠিক পরেরদিন গাড়িতে আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, রবিউলের খবর কি? একটু খবর নিও তো ওর কোনো সমস্যা আছে কি না? ওকে অফিসে আসতে বইলো। আমি পরেরদিন রবিউলকে কল দিয়ে বললাম তুমি সময় করে একদিন অফিসে এসো। উপমন্ত্রী মহোদয় তোমাকে দেখতে চেয়েছেন। আর যেকোনো সমস্যা হলে জানাতে বলেছেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর লেখা একটি প্রবন্ধ ব্রেইল হিসেবে প্রকাশ হয়েছে। গতকাল অফিসে এসেছিল রবিউল। ওকে দেখেই বললেন, তোমার জন্য একটা বই রেখেছি আমি। আমি তো অবাক। নিজে সেই বইটি রবিউলের হাতে তুলে দিলেন মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী। অনেকক্ষণ কথা বললেন। যাবার সময় যেকোনো সমস্যায় যোগাযোগ রাখতে বললেন। রবিউলের জন্য আমাকেও একটি নির্দেশনা দিলেন মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী।


শুধু রবিউল নই, নিজ মন্ত্রণালয়ের সব কাজে সবার আগে মানবিক সমস্যাকেই গুরুত্ব দেন তিনি। আপনার জন্য নিরন্তর শুভ কামনা।


বিবার্তা/মাইকেল/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com