‘ফিড কর্ন’ বা গবাদি পশুর খোরাক হিসেবে ভুট্টা উৎপাদন আপাতদৃষ্টিতে বেশ আকর্ষণীয়। বিপুল চাহিদার কারণে এর মূল্যও মোটামুটি স্থিতিশীল থাকে। তাই অনেক চাষি পুরোপুরি এর ওপর নির্ভর করেন। কিন্তু ইদানিং দেখা যাচ্ছে, ভুট্টা চাষ যেমন লাভজনক তেমনি বিপজ্জনকও। তাই তো ১০ বছর ধরে ভুট্টা চাষ করে আসা থাইল্যান্ডের চাষী সোমবুন ভুট্টার উৎপাদন বন্ধ করতে চান।
কিন্তু কেন? সোমবুন বলেন, সম্প্রতি ফসলের মান খুব খারাপ হয়ে উঠেছে। রাসায়নিক সার দেয়া ছাড়া সেখানে আর কিছুই গজাচ্ছে না। কিন্তু সেই সার বেশ দামি। ফলে আমি ব্যাংকের কাছে ঋণ নিতে বাধ্য হয়েছি।''
এবার বলা যাক রাতাপাত শ্রীচানক্লাদের কথা। ভুট্টা চাষিদের জন্য বিকল্প পথ খুলে দেবার ব্রত নিয়েছেন তিনি। সেই কাজে এক পাহাড়ি গ্রামে চাষিদের জন্য ওয়ার্কশপে যাওয়ার পথে তিনি দেখতে পান সারি সারি ন্যাড়া পাহাড়। এ আর কিছু নয়, ভুট্টা চাষের কুৎসিত রূপ।
বেড়ে চলা চাহিদা মেটাতে চাষের নতুন জমি খুঁজতে হয় ভুট্টাচাষিদের। তাই তারা প্রতিবছর জঙ্গল সাফ করে বনের আরও ভেতরে পৌঁছে যাচ্ছেন। রাতাপাত বলেন, ‘‘বর্ষা এলে এসব ক্ষেতে ভুট্টার বীজ রোপণ করা হবে। তার আগে তারা সব ঘাস পুড়িয়ে ফেলে। তখন এখানে সবকিছু জ্বলেপুড়ে যায়।’’
সেই ছাই অবশ্য সার হিসেবে ব্যবহার করা হয় বটে, কিন্তু নিয়মিত এই পোড়ানোর প্রক্রিয়া পরিবেশের জন্য এক বিপর্যয়। রাতাপাত বলেন, ‘‘বছরে একবার এখানে সব কিছু পুড়িয়ে ফেলা হয়। ছোট গাছপালা ও প্রাণী - কিছুই রেহাই পায় না। ফলে জীববৈচিত্র্যের গুরুতর ক্ষতি হয়। তবে সবচেয়ে খারাপ হলো স্মগ বা কুয়াশা, যা দিনের পর দিন থেকে যায়।’’
তিরাসাক সুওনো আগে ভুট্টা চাষ করতেন। শেষে তাঁর কাঁধে বিশাল ঋণের বোঝা এসে পড়েছিল। এখন তাঁর ক্ষেতে অরগ্যানিক কলা চাষ হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘পরিবর্তন মোটেই সহজ ছিল না। কারণ শস্য বদলানোর মাঝের সময় আমাদের কোনো আয় ছিল না। তবে সাহায্য পেয়ে টিকে গিয়েছিলাম। ঋণ শোধ দেবার মেয়াদ বাড়িয়ে ব্যাংকও সাহায্য করেছিল। এখন আমি আশাবাদী।’’ সূত্র : ডিডাবলিউ
বিবার্তা/মৌসুমী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]