শিরোনাম
বজ্রপাতের সময় করণীয়
প্রকাশ : ১৭ মে ২০১৭, ১২:৩৩
বজ্রপাতের সময় করণীয়
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে বেড়েছে বজ্রপাত। প্রতিবছরই বজ্রপাতে দেশে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইটনিং সেফটি ইনস্টিটিউটের ২০১০ সালের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিশ্বের বজ্রপাতে মুত্যুর এক-চতুর্থাংশ ঘটে বাংলাদেশে।

 

তবে বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসেই বেড়ে যায় বজ্রপাতের সংখ্যা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, মার্চ থেকে মে এবং অক্টোবর থেকে নভেম্বরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয়ে থাকে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে।

 

কিভাবে বুঝবেন বজ্রপাতটি কোথায় পড়বে
বজ্রপাত হওয়ার আগ মুহূর্তে কয়েকটি লক্ষণে বোঝা যেতে পারে যে, বজ্রপাতটি কোথায় পড়বে। যেমন- বিদ্যুতের প্রভাবে আপনার চুল খাড়া হয়ে যাবে, ত্বক শিরশির করবে বা বিদ্যুৎ অনুভূত হবে। এসময় আশপাশের ধাতব পদার্থ কাঁপতে পারে। অনেকেই এ পরিস্থিতিতে ‘ক্রি ক্রি’ শব্দ পাওয়ার কথা জানান। আপনি যদি এমন পরিস্থিতি অনুভব করেন, তাহলে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।  

 
বজ্রপাতের সময় কী করা উচিত এবং কী নয়- এ বিষয়ে ধারণা থাকা খুবই জরুরি। এ থেকে রক্ষা পেতে করণীয় দিকগুলো আলোচনা করা হলো-

 

* ঘন ঘন বজ্রপাত হতে থাকলে কোনো অবস্থায়ই খোলা বা উঁচু স্থানে থাকা যাবে না। দালানের নিচে আশ্রয় নেয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

 
* কোথাও বজ্রপাত হলে উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বজ্রপাত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই এসব স্থানে আশ্রয় নেয়া যাবে না। যেমন- খোলা স্থানে বিচ্ছিন্ন একটি যাত্রী ছাউনি, তালগাছ বা বড় গাছ ইত্যাদি।

 
* বজ্রপাতের সময় নদী, জলাশয় বা জলাবদ্ধ স্থান থেকে সরে যেতে হবে। পানি বিদ্যুৎ পরিবাহী তাই সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। বজ্রপাতের সময় চামড়ার ভেজা জুতা বা খালি পায়ে থাকা খুবই বিপজ্জনক। এসময় বিদ্যুৎ অপরিবাহী রাবারের জুতাই সবচেয়ে নিরাপদ।

 

* বজ্রপাতের সময় গাড়িতে থাকলে গাড়ির ভেতরের ধাতব বস্তু স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। চেষ্টা করুন গাড়িটি কোনো কংক্রিটের ছাউনির নিচে নিয়ে যেতে।  

 

* বজ্রপাতের সময় ঘরে থাকলে জানালা বন্ধ রাখুন এবং জানালার কাছ থেকে দূরে সরে যান। এছাড়া বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করা যাবে না। এমনকি ল্যান্ড লাইন টেলিফোনও স্পর্শ করা যাবে না।

 
* বজ্রপাত থেকে বাড়িকে নিরাপদ রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্য আর্থিং সংযুক্ত রড বাড়িতে স্থাপন করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে দক্ষ ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শ নিতে হবে। ভুলভাবে স্থাপিত রড বজ্রপাতের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে।

 

* বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত সব যন্ত্রপাতি স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। বজ্রপাতের আভাস পেলে টিভি, ফ্রিজ, কম্পিউটার ইত্যাদির প্লাগ খুলে বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। তবে বন্ধ করা থাকলেও এগুলো ধরা যাবে না। অব্যবহৃত যন্ত্রপাতির প্লাগ আগেই খুলে রাখতে হবে।

 

* এসময় ধানক্ষেত বা বড় মাঠে থাকলে তাড়াতাড়ি নিচু হয়ে যেতে হবে। বাড়ির ছাদ কিংবা উঁচু কোনো স্থানে থাকলে দ্রুত সেখান থেকে নেমে যেতে হবে।

 

* বজ্রপাত হওয়ার উপক্রম হলে কানে আঙুল দিয়ে নিচু হয়ে বসে চোখ বন্ধ রাখতে হবে। কিন্তু এসময় মাটিয়ে শুয়ে পড়া যাবে না। মাটিতে শুয়ে পড়লে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে।

 

* বজ্রপাতের সময় কয়েকজন একসাথে থাকলে একজন আরেকজনের কাছ থেকে ৫০ থেকে ১০০ ফুট দূরে সরে যেতে হবে। কোনো বাড়িতে যদি পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না থাকে তাহলে সবাই এক কক্ষে না থেকে আলাদা আলাদা কক্ষে যাওয়া যেতে পারে।

 

বজ্রপাতে আহতদের চিকিৎসা
বজ্রপাতে আহতদেরকে বৈদ্যুতিক শকে আহতদের মতোই চিকিৎসা করতে হবে। দ্রুত চিকিৎসককে ডাকতে হবে কিংবা হাসপাতালে নিতে হবে। একই সঙ্গে আহত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃৎস্পন্দন ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

 

বিবার্তা/নিশি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com