বছরের শুরুতে একই দিনে দু’দফা ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল বাংলাদেশ। ভারতের ত্রিপুরায় মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রভাবে কেঁপে ওঠে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে চলছে তোলপাড়।
মঙ্গলবার বিকাল ৩টা ৯মিনিটে শুরু হওয়া এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ১৭০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব এবং আগরতলা থেকে ৭৬ কিলোমিটার পূর্বে। ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল ত্রিপুরার আম্বাসা এলাকায়, ভূপৃষ্ঠের ৩৬ কিলোমিটার গভীরে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫।
ভূমিকম্পে বাংলাদেশের মৌলভীবাজারে শতাধিক ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে, ভেঙে গেছে অসংখ্য মাটির দেয়াল ও সীমানা প্রাচীর। বিভিন্ন জায়গায় জমি ফেটে বেরিয়ে এসেছে পানি ও বালি-কাদা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে চলছে তোলপাড়। আতঙ্কের পাশাপাশি ফেসবুকে এ নিয়ে মজাও করা হয়েছে। যেমন, মাহমুদুল হক মনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘শিক্ষক জিজ্ঞেস করলেন, ভূমিকম্প হলে প্রাথমিক করণীয় কী? ছাত্র বললো ফেসবুকে পোস্ট দেয়া, সেলফিসহ।’
ফারজানা জাফরিন ঐশী জানিয়েছেন, তখন তিনি একটি সেমিনারে অংশ নিচ্ছিলেন। হঠাৎ মনে হলো, পেছনের সিট কেউ নাড়াচ্ছে। কেউ বললো, ভূমিকম্প হচ্ছে। পাঁচ তলায় থাকায় কম্পন ভালোমতো টের পেয়েছেন তিনি। অনেকেই বাইরে বেরিয়ে বাসায় ফোন দিয়েছেন। তবে ঐশী লক্ষ্য করেছেন, সেমিনারে তিনি ছাড়া আর কারও মধ্যে কোনো আতঙ্কের চিহ্ন ছিল না।
নাসিরউদ্দীন হাওলাদার লিখেছেন, ‘কপালে কী আছে আল্লাহ্ই জানেন। ৯ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই বার ভূমিকম্প হলো, দুপুর ৩.১০ মিঃ ৫.৫ মাত্রার এবং রাত ১২.৫১ মিঃ ৫.১ মাত্রার।’
ইব্রাহিম খলিল লিখেছেন, ‘একদিনে বাংলাদেশে তিনটি খারাপ খবর- ঢাকার ডিসিসি মার্কেটে আগুন, ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের হার এবং ভূমিকম্প।’
মৃত্যুঞ্জয় দেবনাথ লিখেছেন, ‘ভূমিকম্প কি ভূপৃষ্ঠে হয়, নাকি ফেসবুকে হয় - কিছু বুঝি না। বাস্তবে কিছুই টের পাইনি, কিন্তু ফেসবুকে ঢুকে দেখি একেবারে অন্য মাত্রায় ভূমিকম্প হয়েছে।’
মিজানুর রশিদ শুভ্র লিখেছেন, ‘যখন প্রকৃতি নিজেই স্পষ্ট খুনের হুমকি নিয়ে আসে তখন সেটা নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকারও সময় না, কার কী দোষ সেটা ঘাঁটবারও সময় থাকে না, এটা সমাধান খোঁজার সময়৷’
পারভেজ আলম লিখেছেন, ‘কোনো বিশেষ উৎসব উদযাপন (নিউইয়ার/ক্রিসমাস) অথবা পোশাকের কারণে ভূমিকম্প হতে পারে - এই ধরণের চিন্তা এক ধরণের এনিমিজম, প্রাচীন পৌত্তলিকতা। নিজের প্রতিক্রিয়া, প্রেজুডিস প্রাণহীন পৃথিবীর ওপরে চাপিয়ে দেয়া আর কি। অথচ মানুষের বিভিন্ন কাজের প্রতিক্রিয়ায় (কয়লা পোড়ানো/তেল পোড়ানো) প্রকৃতি ও পরিবেশে যেসব পরিবর্তন (বৈশ্বিক উষ্ণতা) সত্যি সত্যি ঘটে যাচ্ছে, সেসব ক্ষেত্রে এই ধরণের প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না, আফসোস!’ সূত্র : ডয়চে ভেলে
বিবার্তা/হুমায়ুন/পলাশ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]