শিরোনাম
গ্রহাণু আছড়ে পড়ায়
ডাইনোসর লোপ পেল, টিকে থাকল কুমিরেরা! কিন্তু কেন?
প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:৫৪
ডাইনোসর লোপ পেল, টিকে থাকল কুমিরেরা! কিন্তু কেন?
অনামিকা রায়
প্রিন্ট অ-অ+

অনেক প্রাণিবিদ বলে থাকেন যে আদিম যুগে যখন এই পৃথিবীর বুকে নানা গ্রহাণু আছড়ে পড়েছিল, তখন তা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ দুই দিক থেকেই বিপদ ডেকে এনেছিল ডাইনোসরের প্রজাতির জন্য। গ্রহাণু পৃথিবীতে যখন আছড়ে পড়েছিল, তখন তার অভিঘাতে সরাসরি বেশ কিছু অঞ্চলের ডাইনোসররা প্রাণ হারায়। অনেকে আবার এই গ্রহাণু-বৃষ্টির পরে যে খাদ্যসঙ্কট সৃষ্টি হয়, তার সঙ্গে যুঝতে না পেরে প্রাণ হারায় বলেও শোনা যায়। অথচ তাদেরই সমসাময়িক কুমিরেরা কিন্তু এখনো দিব্যি বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াতে পারছে পৃথিবীর বুকে। কীভাবে তা সম্ভব হলো, সম্প্রতি সেই রহস্য উদঘাটিত হয়েছে বিখ্যাত নেচার কমিউনিকেশনস বায়োলজি পত্রিকায়।


এ সম্পর্কে সম্প্রতি একটি সমীক্ষাপত্র প্রকাশিত হয়েছে উপরে উল্লিখিত ওই পত্রিকায়। সমীক্ষাপত্রটির প্রধান লেখক অধ্যাপক ম্যাক্স স্টকডেল এই টিকে থাকার কারণ হিসেবে বিবর্তনবাদের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। তাঁর এই বক্তব্যের মূল সূত্র মতে কুমিরদের শারীরিক বিবর্তন এমন ভাবেই সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল আগে থেকে, যাতে তারা যে কোনও অবস্থার সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে পারে। সেই দিক থেকে দেখলে স্টকডেলের এই সমীক্ষা চার্লস ডারউইনের (Charles Darwin) সার্ভাইভ্যাল অফ দ্য ফিটেস্ট-কেই সত্য প্রমাণিত করছে নতুন করে।


স্টকডেল জানিয়েছেন যে পৃথিবীতে আপাতত কুমিরের ২৫টি প্রজাতি টিকে আছে। কিছু বিশালায়তন আদিম প্রজাতি হালফিলে লোপ পেলেও সংখ্যাটা বেশ উল্লেখযোগ্য। কেননা তার মতে অন্য কোনও প্রাণীর এত প্রজাতি সেই আদিম যুগ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত পৃথিবীতে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারেনি। তিনি এই প্রসঙ্গে কুমিরের শারীরিক গড়নের উপরে জোর দিয়েছেন। জানিয়েছেন, যথেষ্ট মজবুত গড়ন এদের যে কোনও পরিস্থিতিতে টিকে থাকার সহায়ক হয়েছে। ফলে গ্রহাণু আছড়ে পড়ার পর পৃথিবীতে যে সমস্যা দেখা দিয়েছিল প্রাকৃতিক দিক থেকে, তা তাদের শরীরে তেমন প্রভাব ফেলেনি।


আবার স্টকডেলের মতে উভচর হওয়ার বৈশিষ্ট্যটিও কুমিরকে অন্য প্রাণীর তুলনায় জোরদার করে তুলেছে। এরা জলে যেমন থাকতে পারে, তেমনই থাকতে পারে স্থলেও। গভীর জলের তলাতেও এদের অন্তত ঘণ্টাখানেক নিশ্বাস বন্ধ করে থাকতে কোনও অসুবিধা হয় না। এত সব সুবিধা বিবর্তনের সূত্রে অন্য প্রাণী পায়নি।


সব শেষে, বেঁচে থাকার জন্য যে শক্তি প্রয়োজন, কুমিরের ক্ষেত্রে তার উৎসটি নিয়েও কথা বলেছেন স্টকডেল। এরা অন্য প্রাণীদের মতো খাদ্য থেকে বেঁচে থাকার শক্তি আহরণ করে না, সরাসরি তা করে সূর্যালোক থেকে। সব মিলিয়ে, পৃথিবীর চরম প্রতিকূল দশাতেও এদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে কোনও অসুবিধা হয়নি বলে অভিমত পোষণ করেছেন তিনি।


বিবার্তা/অনামিকা/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com