শিরোনাম
শারদীয় দুর্গোৎসব : প্রেক্ষাপট রোহিঙ্গা ইস্যু
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৬:৫৯
শারদীয় দুর্গোৎসব : প্রেক্ষাপট রোহিঙ্গা ইস্যু
মানিক লাল ঘোষ
প্রিন্ট অ-অ+

ঐতিহাসিকভাবেই বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।


দুর্গাপূজার প্রধান আবেদন দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন। অর্থাৎ সকল অশুভ শক্তিকে নির্মূল করার জন্যই মর্ত্যলোকে প্রতি বছর দু'বার আগমন ঘটে দেবী দূর্গার। চৈত্র মাসে বাসন্তী নামে পৃথিবীতে মা আসেন যা হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছেবাসন্তী পূজা নামে পরিচিত।


রামচন্দ্রকে যুদ্ধে পরাজিত করার জন্য রাক্ষসরাজ রাবণ কৌশল হিসেবে রামচন্দ্রের সহধর্মীনি সীতাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় লংকায়। তাকে উদ্ধারের জন্য শরৎকালে অকাল বোধনের মাধ্যমে মা দুর্গাকে আবাহন করেন রামচন্দ্র। তখন থেকেই শরতকালে এই শারদীয় পুজার প্রচলন । সনাতনধর্মীরা মাতৃরূপে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন সকল দুঃখ দুর্দশা, অভাব, অনটন ও অন্যায় অবিচার, শোষণ-নির্যাতন থেকে মুক্তি এবং পার্থিব সুখ ও সমৃদ্ধির আশায়।


ঐতিহাসিক তথ্যমতে, আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর আগে রাজশাহীর রাজা কংস নারায়ণ সর্বপ্রথম এই ভূখন্ডে শরৎকালে দুর্গোৎসব শুরু করেছিলেন। অনেক ব্যয়বহুল হওয়ায় অতীতে এই পূজা রাজা ও জমিদাররাই আয়োজন করতেন। কালের বিবর্তনে জমিদারি প্রথার বিলুপ্ত হওয়ায় সকলের অংশগ্রহণে দুর্গা পূজা আজ শারদীয় উৎসবে
পরিণত হয়েছে।


প্রতিবারের মতো এবারও শরতে শিশিরভেজা শিউলি-শেফালি ফুলের গন্ধ, কাশ ফুলের শুভ্রতা আকাশজুড়ে শরতের সাদা মেঘের ভেলা মা দুর্গার আগমনী জানান দিলেও উৎসবের আমেজে রয়েছে কিছুটা শঙ্কা ও মনবেদনা। দূর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গার পূজার প্রাক্কালে বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন-নিপীড়ন সনাতন ধর্মীদেরও করেছে মর্মাহত। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সব সংগঠন রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।


পূজা উদযাপন পরিষদ আনুষ্ঠানিক সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছে দুর্গাপূজার খরচ কমিয়ে তা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাঝে সহায়তা হিসেবে দেয়ার। তাদের এই সিদ্ধান্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চেতনাকে আরো সুদৃঢ় করবে।


এদিকে রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেন্দ্র করে কোনো অশুভ শক্তি যেন এদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় ফাটল ধরাতে না পারে সে লক্ষ্যে প্রতিটি পূজামন্ডপে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।


“ধর্ম যার যার উৎসব সবার'' - এই চেতনায় বিশ্বাসী সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, সবার সহযোগিতায় উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হবে শারদীয় দুর্গাপূজা। সব ধর্মের সহাবস্থানে সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।


এবারের শারদীয় দুর্গোৎসবে তাদের প্রার্থনা, মিয়ানমারের রোহিঙ্গাসহ নির্যাতিত সব মানুষের দুর্গতি নাশ করুক দুর্গতিনাশীনি দেবী দুর্গা। আর দমন করুক তাদের মানুষ হয়ে যারা পাশবিক নির্যাতন চালায় মানুষের উপর।


লেখক : সিনিয়র রিপোর্টার, মাইটিভি


বিবার্তা/হুমায়ুন/মৌসুমী


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com